রোদ-বৃষ্টি লেগেই আছে তার ওপর আবার মুখে মাস্ক! এত বেছে বেছে নামী দামী ব্র্যান্ডের মেক আপ সামগ্রী কিনে, ঘন্টাখানেকের খাটনির পর একবারে ডানা কাটা পরি হয়ে বাড়ির বাইরে বেরোতে না বেরোতেই, ভ্যাপসা গরমে মাস্কের ঘসা লেগে ‘মেকআপ একেবারে ঘেটে ঘ’। এহেন অবস্থায় চোখে জল আসা স্বাভাবিক। তবে চিন্তা নেই, সমস্যা থাকলে সমাধনও থাকবে। জেনে নিন কীভাবে আপনার মেকআপকে (Makeup) সহজ উপায়ে করে তুলবেন স্মাজ প্রুফ(Smudge proof)।
ত্বক সতেজ ও মসৃণ থাকলে দীর্ঘস্থায়ী হবে মেকআপ। তাই মেকআপের আগে ভাল করে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এরপর মুখে টোনার লাগিয়ে নিন। এক্ষেত্রে এমন টোনার বাছুন যা একইসঙ্গে মুখ পরিষ্কার করবে আবার ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে রোমকূপগুলো পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে। এর ফলে অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হয়ে মেকআপ নষ্ট হবে না।
শুধু মেকআপের আগেই নয়। চেষ্টা করুন ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা যেন সবসময় বজায় থাকে। ত্বক শুষ্ক বা রুক্ষ থাকলে মেকআপ ফেটে যেতে পারে। তবে এই আর্দ্রতা যাতে মাত্রাতিরিক্ত না হয়, সেই দিকেও নজর দিতে হবে। না হলে মেকআপ ঠিক ভাবে মুখে বসবে না এবং দেখতে বাজে লাগবে। তাই ত্বকের প্রয়োজন অনুযায়ী ময়শ্চরাইজ করুন। ক্রিম বা লোশন বা জেলের ব্যবহার করতে পারেন। ময়শ্চরাইজার ব্যবহার করার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। ত্বক ময়শ্চরাইজার শুষে নিলে তারপর মেকআপ শুরু করুন।
মেকআপ ধরে রাখতে প্রাইমারের জুরি নেই। আপনার স্কিনটোন অনুযায়ী একটি ভাল প্রাইমার বেছে নিন। দেখবেন এই প্রাইমার ত্বকের ছিদ্রগুলোকে অনেকটাই আড়াল করে দেবে। আর্দ্রতার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সুন্দর ম্যাট ফিনিশ লুক নিয়ে আসবে। পাশাপাশি মেকআপের জন্য ব্যবহার করা ক্রিম বা জেল সবকিছু একসঙ্গে ধরে রাখবে। এর ফলে আপনার মেকআপ স্মাডজপ্রুফ থাকবে দীর্ঘক্ষণ।
যত কম সামগ্রী ব্যবহার করবেন তত ভাল থাকবে মেকআপ। এক্ষেত্রে সময় ও পরিস্থিতি বুঝে মেকআপ করুন। স্বাভাবিক ভাবেই দিনের বেলায় হাল্কা মেকআপ করলেই ভাল। এক্ষেত্রে আপনি ফাউন্ডেশনের বদল যে কোনও ভরসাযোগ্য ব্র্যান্ডের টিন্টেড (Tinted) বা মিডিয়াম-কভারেজ টিন্টটেড (Medium Coverage Tinted) সিসি ক্রিম (CC cream) ব্যবহার করতে পারেন। আর প্রয়োজন হলে মিনিমাল কনসিলার (Concealer)। এই দুটোই চমত্কার কাজ করে।
আই শ্যাডো(Eye Shadow) , ব্লাশ (Blush)ও ক্রিম-বেস্ড কনটোরের (Cream based Contour) মতো মেকআপ সামগ্রীগুলো সহজেই ঘেটে যেতে পারে। তাই এগুলো কেনার সময় ভাল করে বুঝেশুনে কিনতে হবে। আপনার ত্বক কোন ধরনের তা মাথায় রেখে এই সামগ্রীগুলো বাছুন। যেমন একটা স্ট্যানডার্ড ন্যাচারাল মেকআপ লুকের (Natural Makeup look) জন্য বাছুন ম্যাট ফিনিশ চিক টিন্ট, শিয়ার লিকুইড আইশ্যাডো (Sheer liquid eyeshadow) যা তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় এবং সহজে গলে যায় না। আপনার সাজ ফুটিয়ে তুলতে খুব কম পরিমাণে ব্যবহার করতে পারেন ব্রোঞ্জার।
লিপস্টিক মাস্কের তলায় যে কোনও সময় স্মাজ হয়ে আপনাকে চরম বিব্রত করতে পারে। তাই ক্রিমি ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করুন। পাশাপাশি লিপস্টিক ভাল করে লাগিয়ে নেওয়ার পর টিস্যু পেপার দিয়ে ব্লট করে নিন। দুই ঠোঁটের মাঝখানে টিস্যু পেপার রেখে হাল্কা চাপ দিন। এটা দুবার করুন। এরপর ঠোঁটে আলতো করে আঙুল বুলিয়ে বাড়তি লিপস্টিক মুছে নিন। দেখবেন আগের মতো সহজেই স্মাজ হয়ে আপনাকে আর বিব্রত করছে না আপনার লিপস্টিক।
মেকআপ পর্বের একেবারে শেষের ধাপে রয়েছে ফেস পাউডার (Face Powder)। এটা বুঝেশুনে লাগান। যাবতীয় চেষ্টা করেও কিন্তু মেকআপ ঘেঁটে যেতে পারে। তাই এই ফেস পাউডার অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেকআপ যাতে মুখের সঙ্গে একেবারে মিশে যায় তার জন্য এই দুটি কাজ না করলেই নয়। প্রথমে আপনার মুখের টি জোনে হাল্কা করে পাউডার লাগান। এই পাউডার হাল্কা করে সুন্দর ভাবে ত্বকের সঙ্গে মিশিয়ে দিন। না হলে কিন্তু খুব বাজে দেখাবে। প্যাউডার ড্যাব করা হয়ে গেলে এবার ম্যাট সেটিং স্প্রে করে নিন। ব্যাস আর চিন্তা নেই এবার আপনার মেকআপ একেবারে সিল হয়ে গেল। এই জেল বা স্প্রে কেনার সময়ে দেখে নিন যেগুলো ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার ও মেকআপ স্মাজ প্রুফ রাখার কথা উল্ল্যেখ রয়েছে সেগুলি বাছুন।