ত্বকে বয়সের ছাপ পড়েছে। না, তবে এটা ত্বকের অকাল বুড়িয়ে যাওয়া নয়। নিয়ম মেনেই বয়স বাড়ার সঙ্গেই তাল মিলিয়ে বেড়েছে ত্বকের বয়স। চামড়া কুঁচকে যাওয়া, বলিরেখা নিয়ে এমনিতে আপনার কোনও সমস্যা নেই তবে মেকআপ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। ত্বকের বদল অনুযায়ী দরকার মেকআপ সামগ্রী ও মেকআপের বেশ কিছু অভ্যেসের বদল আনা। সেগুলি কীভাবে করবেন জেনে নিন-
মেকআপের নতুন সামগ্রী ব্যবহারের আগে পরীক্ষা করে নিন
ত্বকের বয়স বাড়লে মেকআপ সামগ্রী বাছার ক্ষেত্রে আরও বেশি যত্ন নিতে হবে। তাই হাতের চেটোতে মেকআপ ব্যবহার না করে বরং বুড়ো আঙুল বা তর্জনীতে মেকআপ লাগিয়ে দেখুন কেমন লাগছে। এবং আপনার ত্বকের শেডের সঙ্গে মানানসই হচ্ছে কিনা।
মুখের মাঝখানের অংশে বেশি মেকআপ ব্যবহার করুন
মুখের এই অংশ মেকআপের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপপূর্ণ। এই অংশে বেশি মেকআপের প্রয়োজন যাতে বলিরেখা ও কুঁচকানো চামড়া সহজে আড়াল করা যায়। তাই প্রথম নাক থেকে মেকআপ শুরু করুন। রোমকূপের ছিদ্র, বলিরেখা ঢেকে ফেলুন। এরপর ডার্ক সার্কেলের পালা। ফাউনডেশন বা কালার কারেক্টিং ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। মুখের মাঝ খানে ক্রিম লাগিয়ে আলতো হাতে বাইরের দিকে ব্লেন্ড করুন। ধৈর্য্য ধরে আলতো হাতে যতটা সম্ভব ভাল করে মেকআপে ত্বকের সঙ্গে একেবারে মিশিয়ে দিন। এবং মুখের যে অংশে সমস্যা রয়েছে সেগুলি ঢেকে নিন।
বেশি বয়সে চোখের মেকআপ করা সবথেকে কঠিন
(ছবি সৌজন্য: Pixabay)
লিপস্টিকে বদল আনতে পারেন
যদি আপনার মনে হয় আপনার বয়সের সঙ্গে গ্লসি লিপস্টিক আর চলবে না তাহলে বাতিল না করে এই বদল আনুন। যে কোনও গ্লসি লিপস্টিকের শেডের সঙ্গে ম্যাট পাউডার কিংবা অ্যাইশ্যাডো বা ব্রাউনজার লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। আপনার পছন্দের শেডও থাকবে আবার উগ্রও লাগবে না। এছাড়া লিপস্টিক লাগিয়ে দুই ঠোঁটের ফাকে টিসু পেপার চেপে ধরে বাড়তি রঙ তুলে নিলে রঙের উগ্রতা অনেকটাই কমে যাবে।
মেকআপ ওপরের দিকে ও বাইরের দিক করে লাগান
চামড়ার ঝুলে যাওয়া কিংবা বলিরেখা কম করতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মেকআপ করার সময় ওপরের দিকে কিংবা বাইরের দিকের স্ট্রোক ব্যবহার করুন। ক্রিম, তেল, সিরাম যাই ব্যবহার করুন না কেন এই আপওয়ার্ড ও আউটওয়ার্ড স্ট্রোকের কথা মাথায় রাখবেন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে এবং মেকআপ ত্বকের সঙ্গে ভাল ভাবে মিশে যাবে। তাই মেকআপ শুরু করনে গলা থেকে জলাইন পর্যন্ত। এতে ত্বক টানটান থাকবে। এর উল্টোটা হলে হাতের ভারে ত্বক আরও ঝুলে যাবে।
গ্লসি লিপস্টিকে অনীহা হলে ম্যাট পাউডার ব্যবহার করুন (ছবি সৌজন্য: Unsplash )
চোখের মেকআপের আগে কপালের মেকআপ সারুন
মেকআপের সময় প্রথম কপালের মেকআপ সেরে নিন। এর ফলে চোখের মেকআপ কি রকম করতে হবে তার একটা সাম্যক ধারণা হয়ে যাবে।
মুখের খুঁতগুলো মেনে নিন
চামড়া কুঁচকে গেলে খুব স্বাভাবিক সেটা এক রকম হবে না। তাই দুগালের দুদিকে চামড়া কোথাও বেশি কুচকানো কোথা বা কম হবেই। মেকআপের পর মুখ একেবারে নিখুত হবে এটা ভাবা ভুল এবং নিখুত করে তোলার চেষ্টাও বৃথা। এটা করতে গিয়ে খুব স্বাভাবিক আপানে অতিরিক্ত মেকআপ সামগ্রী ব্যবহার করতে হবে এবং তা দেখতে খুবই দৃষ্টিকটু লাগবে।
চোখে ভাল করে এঁকে নিন
বেশি বয়সের মেকআপে একটাই সমস্যা সেটা হল চোখের মেকআপের ক্ষেত্রে। বয়সের ভারে চোখের চামড়া কুঁচকে যায় এবং ঝুলে পড়ে তাই চোখের অধিকাংশই ঢাকা পড়ে যায়। এবং চোখ তুলনামূলক ছোট দেখায়। তাই মেকআপের সময় চোখে বড় দেখাতে চোখের ওপরের অংশে ভাল করে মেকআপ করে নিন। তাই ওপরের অংশে মেকআপ লাগিয়ে নিন। ডার্ক শেড ব্যবহার করুন এবং চোখের পাতা থেকে চোখের কোল অবধি ব্লেন্ড করুন। এর ফলে চোখের ওপরের অংশ আরও বিস্তৃত দেখাবে। এভাবে মেকআপ করলে চোখ আরও বড় ও সুন্দর দেখাবে। এবং আপনার পছন্দমত আইশ্যাডো ও আইলাইনার লাগাতে পারবেন।
ছবি সৌজন্য: instagram@neena_gupta