দুর্গাপুজোর আর ৭০ দিন বাকি! ভাবছেন এখনও হাতে ঢের সময় আছে। ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া নিয়ে হাজারো ঝক্কি ঝামেলা সামলাতে না সামলাতেই দেখবেন একেবারে দোরগোড়ায় এসে হাজির বাঙালির প্রিয় পার্বণ। তখন হা-হুতাশ না-করে এখন থেকেই বরং পুজো প্রিপারেশন শুরু করে দিন। একদিকে ওয়ার্ক ফর্ম হোমের অত্যাচার, অন্যদিকে আবার একটানা ওটিটির ব্যবহার। সবমিলিয়ে ওজনটা নেহাত মন্দ বাড়েনি! শুধু যে ওজন বেড়েছে তা তো নয়, ভাটা পড়েছে ত্বক ও চুলের সৌন্দর্য্যে। নিজেকে আগের মতো ফিটও লাগছে না? তা হলে আর অপেক্ষা কীসের, মেরামতির কাজে লেগে পড়ুন আজই। ওজন কমিয়ে চেহারার হারানো শ্রী ফিরিয়ে আনুন এই সহজ উপায়ে।
১. সকালের খাবার বাদ দিলে চলবে না
কোনওমতেই ব্রেকফাস্ট বাদ দেওয়া চলবে না। বাদ দিলেই, শরীর সুস্থ্ রাখতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবেন না। ওজন কমা তো দূরের কথা, উল্টে দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার ফলে বেশি পরিমাণ খাবার খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হবে। আর ওজন আরও বাড়বে।
২. নিয়ম মেনে দিনে অন্তত তিনবার খাবার খান
দিনের বেলায় প্রত্যেকদিন নির্দিষ্ট সময় খাবার খেলে খাবারে থাকা ক্যালরি সঠিক ভাবে ব্যবহার হবে। পাশাপাশি এই অভ্যেস তৈরি হলে মুখরোচক ভাজাভুজি বা জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা কমবে।
৩. প্রচুর ফল ও সবজি খাওয়া প্রয়োজন
ফলমূল-শাকসবজিতে ফ্যাট ও ক্যালোরি কম থাকে এবং ফাইবার থাকে অনেক বেশি মাত্রায়। এই কারণে ফল ও তরিতরকারি আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কার্যকর। একই ভাবে এগুলিতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ থাকায় সুন্দর ত্বক ও ভাল স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এগুলি খুবই উপকারী।
৪. আরও বেশি সক্রিয় ও চনমনে থাকুন
যদি দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় বা একই ভাবে বসে কাজ করতে হয় আপনাকে, সে ক্ষেত্রে কাজের ফাঁকে মাঝেমধ্যেই একটু হাঁটাচলা করুন। সেটা সম্ভব না-হলে চেষ্টা করুন সকালে অন্তত ১৫ থেকে ৩০ মিনিট শারীরিক কসরত করে নিন। হাঁটুর সমস্যা না থাকলে লিফ্টের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করতে পারেবন। এইগুলির ফলে রক্ত সঞ্চালন আরও ভাল হবে।
৫. প্রচুর জল খান
অনেক সময় জল তেষ্টা ও ক্ষিদের মধ্যে আমরা গুলিয়ে ফেলি। তাই ক্ষিদে অনুভব করলে আগে অল্প একটু জল খেয়ে দেখুন। তৃপ্তি অনুভব করলে বুঝতে পারবেন শরীরের চাহিদা ঠিক কী?
৬. ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি করে খান
ফাইবার যুক্ত খাবার যেমন ফল- তরিতরকারি, আটা, জোয়ার-বাজরার রুটি, ওট, বিন্স, মটরশুটি ও ডাল আপনার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখুন।
৭. বাজার থেকে খাবার কেনার সময় ফুড লেবেল দেখে কিনুন
ফুড লেবেল ভাল করে পড়ে খাবার কিনুন। লেভেলে ক্যালোরির পরিমাণ যাচাই করে নিন। ব্যবহৃত উপকরণগুলি আপনার স্বাস্থ্যসম্মত কি না, দেখে নিন।
৮. খাবারের পাত্র ছোট রাখুন
নিউট্রিশনিস্টের পরামর্শ মেনে খাদ্যতালিকা তৈরি করে নিন। প্রত্যেকটি পদ যত পরিমাণ খাবার কথা, ততটাই প্লেটে নিন। প্রয়োজনে সেই আকারে পাত্র বেছে নিন।
৯. পছন্দের খাবার একেবারে বাদ দেবেন না
ওজন কমানোর জন্য খাদ্যতালিকা তৈরি করতে গিয়ে আপনার পছন্দের খাবার একেবারে বাদ দিয়ে দেবেন না। সেটা করলে ওই খাবারের প্রতি আপনার ঝোঁক বাড়বে। বেশি খেয়ে ডায়েট প্লান শিকে না-তুলে বরং অল্প খেয়ে খুশি থাকুন।
১০. বাড়িতে জাঙ্ক ফুড কিনে রাখবেন না
খাবারের জিনিস হাতের কাছে থাকলেই বেশি খেতে ইচ্ছে করবে। তাই চিপস, কোল্ড ড্রিংকস, চকোলেট বেশি বেশি কিনে বাড়িতে না রাখাই ভাল। থাকলেই খেতে ইচ্ছে করবে। ভেস্তে যাবে ডায়েট প্ল্যানও।
১১. মদ্যপান নিয়ন্ত্রণে রাখুন
বুঝে মদ্যপান করুন। মাত্রাতিরিক্ত হলে বিপদ আপনারই। অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি বাড়বে ওজনও।
১২. কখন কী খাবেন, আগে প্ল্যান করে নিন
খুব ভাল হয় যদি এক সপ্তাহের ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনার একেবারে প্ল্যান করে নিতে পারেন। খাবারে নিয়ন্ত্রণে ও প্রয়োজনীয় খাদ্যবস্তু, রান্নাবান্নার জোগাড়-যন্ত্র করতে সুবিধে হবে।