প্রত্যেকের ত্বকের গঠন আলাদা আলাদা। ত্বকের এই গঠন কখনই আক্ষরিক অর্থে একেবারে কাঁচের মতো স্বচ্ছ বা প্লাস্টিকের মতো মসৃণ হতে পারে না। তবে এটা ঠিক পরিবেশ দূষণ কিংবা অন্যান্য কারনে মুখে দাগছোপ বা ত্বক শুষ্ক বা জৌলুসহীন হয়ে পড়লে মন খারাপ হতে বাধ্য। অনেকে এই সময় ত্বকের হারানো জৌলুস ফিরে পেতে অধৈর্য্য হয়ে ত্বকের সারিয়ে তোলার হাজার একটা টোটকা কাজে লাগান। এতে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। মনে রাখতে হবে প্রত্যেকের ত্বকের গঠন একেবারে বদলে ফেলা সম্ভব নয় এবং পারফেক্ট স্কিন বলে কিছু হয় না। তবে বিশেষ কিছু উপকরণের ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সারিয়ে তোলা যায় অনেকটাই। সেক্ষেত্রে এই উপকরণগুলি বেশ কাজের-
এগুলি ভিটামিন এ-র বিশেষ উপাদান। এগুলি ত্বকের পুরনো ও মৃত কোষ সরিয়ে নতুন কোষ বাইরে নিয়ে আসে। তাই ত্বকের দাগছোপ, ব্রণ ফুঁসকুড়ি যাই থাকুক না কেন, ত্বক সারিয়ে একেবারে নতুনের মতো করে দেয়। তবে এই পরিবর্তন রাতারাতি সম্ভব নয় এটা সময় সাপেক্ষ। অন্তত পক্ষে ছমাস মতো সময় লাগে।
এটা এক ধরনের কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট। এই স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ত্বকের ভিতরে ঢুকে ত্বকের পুরোনো কোষ সরিয়ে দেয়। এর ফলে ত্বক তরতাজা হয়ে ওঠে। যাদের ব্রণ প্রবণ ত্বক তাদের জন্য ভীষণ কার্যকরী এই অ্যাসিড। সিস্টিক অ্যাকণে, ব্ল্যাকহেডস কিংবা হোয়াইটহেডস যে কোনও ধরনের ব্রণ ও ফুঁসকুড়িতে ভীষণ কার্যকরী এই রাসায়নিক। তবে স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের ব্যবহারে রাতারাতি কোনও পরিবর্তন আসবে না। এর ব্যবহারে ত্বকের সমস্যার নিরাময় সময় সাপেক্ষ তবে দীর্ঘদিনের ব্যবহারে ব্রণ সেরে গিয়ে ত্বকের দাগছোপ মুছে ত্বক একেবারে তরতাজা হয়ে ওঠে।
এই তেলে লিনোলিয়েক অ্যাসিড রয়েছে যা শুষ্ক ত্বকের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি। এই দুই উপাদান ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন দাগছোপ দ্রুত সারিয়ে তোলে। এর ফলে ত্বকের জৌলুস বেড়ে ত্বক তরতাজা হয়ে ওঠে।
অনেকটা স্যালিসাইলিক অ্যাসিডের মতোই এক্সফোলিয়েন্ট হিসেবে ভাল কাজ করে এই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড। তবে এটা ত্বকের গভীরে যায় না বরং ত্বকের ওপর পরিষ্কার করে। চামড়া ওঠা কিংবা ত্বক প্রচন্ড শুষ্ক হয়ে গেলে এই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যুক্ত মাস্ক, টোনার বা ফেস ওয়াশ ব্যবহার করলে মুহূর্তে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এতে ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ দেখায়।
তবে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বেশ কড়া এবং এটা লাগিয়ে রোদে বেরোলে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। তাই গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যুক্ত প্রসাধনী ব্যবহারের পর সানস্ক্রিন লাগানো আবশ্যক।
ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সারিয়ে তুলে মসৃণ ও দাগ ছোপ মুক্ত করতে এই সেরামাইডের জবাব নেই। বিভিন্ন কারনে ত্বকের ওপর যে সুরক্ষার আস্তরণ থাকে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ত্বকের নানান সমস্যা দেখা যায়। এই সেরামাইড(ceramides) ত্বকের এই আস্তরণকে আরও মজবুত করে তোলে এবং ত্বকে টানটান রাখে। ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চামড়া ওঠা কিংবা ত্বকে জ্বাল যন্ত্রণা বা অ্যালার্জির মত ত্বকের হাজারো সমস্যার সমাধান করে ত্বককে একেবারে নতুনের মত করে তোলে এই সেরামাইড(ceramides)।
ইদানীং বিউটি ওয়ার্ল্ডে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে সিকা (Cica)। বৈজ্ঞানিক নাম, সেন্টেল্লা এশিয়াটিকা (centella asiatica)। ইন্ডিয়ান পেনিওর্ট(Indian pennywort) বা টাইগার গ্রাস (tiger grass) নামে এই ভেষজ উদ্ভিদটি(herb) অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে(anti oxidant) ভরপুর। দুষণ ও অন্যান্য অনেক কারনে ত্বকের ওপর যে সুরক্ষার আস্তরণ থাকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা সেই ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের মেরামতি করে সংক্রমণ বা ক্ষত ত্বকের ভীতরে যাওয়া আটকায়। এর ফলে ত্বক সুরক্ষিত থাকে।