বাজার জুড়ে রয়েছে রূপচর্চার হাজারো রকমের নিত্যনতুন প্রসাধনী দ্রব্য। তবে নানা রকমের ক্রিম, সেরাম, বিউটি অয়েল ইত্যাদির মধ্যে কোনটা ছেড়ে কোনটা বাছবেন তাতেই ধন্দে পড়ে যান প্রত্যেকবার। এক্ষেত্রে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে কোনও প্রোডাক্ট বাছার আগে দেখে নিতে হবে তাতে উপকরণ হিসেবে কী কী রয়েছে। একাধিক প্রোডাক্টের বদলে যদি এমন কোনও প্রোডাক্ট পাওয়া যায় যার ব্যবহারে ত্বকের সব সমস্যার সহজ সমাধান হবে সেক্ষেত্রে আপনি এক প্রকার চোখ বন্ধ করে ভরসা করতে পারেন নিয়াসিনামাইড যুক্ত প্রোডাক্টের ওপর।
ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখা থেকে শুরু করে ব্রণর সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, কোলাজেনের উত্পাদন বাড়াতে ভীষণ কার্যকরী। এই নিয়াসিনামাইড হল এক ধরণের ভিটামিন বি থ্রি যা ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তবে এই নিয়াসিনামাইড ব্যবহার করতে হবে আপনার ত্বকের ধরণ বুঝে না হলে আশানুরূপ ফল পাবেন না। এমনকি হিতে বিপরীতও হতে ত্বকের ধরণ অনুযায়ী আলাদা আলাদা ভাবে ব্যবহার করতে হবে নিয়াসিনামাইড। জেনে নিন ব্যবহারের বিধি-
তৈলাক্ত ত্বক যাদের তাদের কাছে এই নিয়াসিনামাইড যেন অনেকটা হাতে চাঁদ পাওয়ার মতো ব্যাপার। নিয়াসিনামাইড যুক্ত টোনার ব্যবহার করতে পারেন। এটা ত্বকে বাড়তি তেল জমতে দেবে না। আপনি এমন টোনার বাছুন যাতে অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি নিয়াসিনামাইডের রয়েছে অন্তত ৪ থেকে ৫ শতাংশ কংসেন্ট্রশন রয়েছে। চাইলে এই ৪ থেকে ৫ শতাংশ নিয়াসিনামাইডের সঙ্গে কোনও নন কমেডোজেনিক ময়শ্চারাইজার এবং ক্লে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারিণীরা দিনে দু’বার নিয়াসিনামাইড যু্ক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন।
শুষ্ক ত্বক যাদের তারাও এই নিয়াসিনামাইড ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে এর মাত্রা যাতে অতিরিক্ত না হয়ে যায়। কারণ, তাহলে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা বেড়ে যাবে আরও কয়েকগুণ। রাতে ভুলেও নিয়াসিনামাইড প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না। শুষ্ক ত্বকের অধিকারিণীরা ময়শ্চারাইজারের সঙ্গে ২ থেকে ৪ শতাংশ নিয়াসিনামাইড ব্যবহার করতে পারেন। এবং এই নিয়াসিনামাইড মুখে লাগানোর আগে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নিন এবং আঙুল দিয়ে সারা মুখে লাগান তবে ভুলেও ডলবেন না।
এজিং স্কিনের জন্য নিয়াসিনামাইড বেশ উপকারী। কোলাজেন বুস্টআপ কিংবা উত্পাদন বাড়িয়ে তোলে নিয়াসিনামাইড। এর ফলে ত্বকে তারুণ্য ফুটে ওঠে। ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়লে উপকরণ হিসেবে নিয়াসিনামাইডের সঙ্গে হায়ালিউরোনিক অ্যাসিড কিংবা সেরামাইড রয়েছে এমন প্রোডাক্ট বাছুন। চেষ্টা করুন এমন প্রোডাক্ট বেছে নেওয়ার যাতে অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি ৫ শতাংশ নিয়াসিনামাইড কনসেন্ট্রেশন রয়েছে। এই ধরণের উপকরণের কম্বিনেশন যুক্ত প্রোডাক্ট নিয়মিত ব্যবহার করলে প্রায় দু’মাসের মধ্যেই ভাল ফল পাবেন।
ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তা হলে এই নিয়াসিনামাইড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সংবেদনশীল ত্বক যাদের তারা এমন প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন যাতে অন্যান্য উপকরণের পাশাপাশি মাত্র ২ শতাংশ নিয়াসিনামাইডের কংসেন্ট্রেশন রয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করতে ভুলবেন না। এর ফলে আপনি বুঝতে পারবেন নিয়াসিনামাইড আপনার ত্বকে কীভাবে কাজ করবে।
(ছবি সৌ: Unsplash)