ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডে, বিশেষ করে সোশাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটানোর প্রবণতা বিগত কয়েকবছর ধরেই ক্রমাগত বাড়ছিল, তবে যেটা আগে অভ্যেস ছিল সেটা করোনাকালে অধিকাংশের ক্ষেত্রেই আশক্তিতে পরিণত হয়েছে। একদিকে সোশাল মিডিয়ার সঙ্গে দোসর হয়ে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের কারনে বেড়েছে স্ক্রিন টাইম। তবে শুধু মনোরঞ্জন নয় অনেকের ওয়ার্ক ফ্রম হোমও আছে, পড়ুয়াদের আছে অন লাইন ক্লাস, আর এই সব মিলিয়ে দিনের অধিকাংশ সময় কেটে যাচ্ছে ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ স্ক্রিনের সামনে কিংবা মুঠোফোনে মুখ গুঁজে।
স্ক্রিন টাইম(screen time) ও মানসিক স্বাস্থ্য(mental health)
স্ক্রিনের সামনে বাড়তি সময় কীভাবে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিপন্ন করছে তা নিয়ে নানা সময়ের গবেষণায় উঠে এসেছে একাধিক তথ্য। সোশাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটানোর ফলে বেড়েছে একাকিত্ব(loneliness), অবসাদ(depression), দুশ্চিন্তা(stress) ও উদ্বেগ(anxiety)। তাই প্রয়োজন ডিজিট্যাল ডিটক্সের(digital detox), সব কিছুর যেমন খারাপ ও ভাল দিক আছে তা এই সোশাল মিডিয়ার(social media) ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই এগুলি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ রাখলে অনেক সমস্যা এড়ানো যাবে। তাই প্রথমেই যেটা দরকার কী বড়, কী ছোট প্রত্যেকের মধ্যে স্ক্রিন থেকে দূরে সময় কাটানোর অভ্যেস গড়ে তোলা। প্রথম ধাপে এই কাজগুলো করে দেখতে পারেন। যেমন-
যে অ্যাপগুলো আপনাকে বেশি ব্যাস্ত রাখে সেগুলি আগে ডিলিট করুন
ব্যবহারের সময় হয়ত খেয়াল করেন না কিন্তু আপনার ফোনে এমন কিছু অ্যাপ(apps) আছে যেগুলো দিনের অধিকাংশ সময় আপনাকে ফোনে ব্যাস্ত রাখে। যদি আপনার ফোনে স্ক্রিন টাইম লিমিট(screen time limit) অপশনটি চালু করা না থাকলে এই ফিচারটি অবিলম্বে চালু করুন। সবসময় ব্যবহারের চেষ্টা করুন। দিনের কতক্ষণ ফোনে সময় কাটাচ্ছেন তা দেখে আপনি নিজেও অবাক হয়ে যাবেন। তাই হাতে কিছু সময় পেলে প্রথমে ওই অ্যাপগুলো ডিলিট(delete apps) বা আনইনস্টল(uninstall) করুন।
বেডরুম, স্ক্রিন ফ্রি রাখুন
শোওয়ার ঘরে টিভি বা কমপিউটার রাখবেন না। কয়েকটি সমীক্ষায় জানা গেছে যারা বেডরুমে টিভি রাখেন তারা বাকিদের তুলনায় বেশি টিভি-র সামনে সময় কাটান। এটা মানতেই হবে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসে টিভি দেখার থেকে বেডরুমে বিছানায় আধশোওয়া হয়ে টিভি দেখার মজাই আলাদা। আগে পরের কোনও কিছু না ভেবেই মনের আনন্দে টিভি তে একের পর এক চ্যানেলে মনোনিবেশ করা অনেক সহজ ও ক্ষণিকের হলেও পরম সুখের! তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে ক্ষণিকের এই সুখের মায়া ত্যাগ করুন।
বন্ধুদের টেক্সট পাঠানোর বদলে ফোন করতে বলুন
কখনও ভেবে দেখেছেন সারাদিনে অফিসের হোয়াটস গ্রুপ, ছেলেমেয়ের স্কুল, টিউশন, নাচের, গানের, আকার কিংবা পরিবার, স্কুল কলেজের বন্ধু বান্ধব আরও কত শত শত গ্রুপে রয়েছেন আপনি? চলছে টেক্সট চালাচালি। সময় থাকলে ভেবে দেখবেন এর চেয়ে ঢের বেশি সহজ কথা বলে নেওয়া। চেষ্টা করুন সেটা করার। বন্ধু-বান্ধব পরিবার পরিজনদের অনুপ্রাণিত করুন টেক্সট করার বদলে তারা যেন কল করেন।
স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘক্ষণ না বসে সৃজনশীল কাজে মনোনিবেশ করুন
সময় কাটাতে অনেকেই আজকাল ফেসবুক(Facebook) ও ইনস্টাগ্রামে(Instagram) রিল(reels) বানান। এরকম উদ্দেশ্যহীন ভাবে সময় কাটানোর বদলে বরং অন্য কোনও সৃজনশীল কাজে(involve in creative things) মন দিলে মন ভাল থাকবে। স্ক্রিনের থেকে দূরে থাকা যাবে আবার মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। সেটা হলে শরীরও ভাল থাকবে।
(ছবি সৌ: Unsplash)