মুখের ও চুলের পরিচর্যা নিয়ে সবাই যতটা সচেতন, হাত ও পায়ের যত্ন কিন্তু সেভাবে করেন না অনেকেই। হাতের তাও যা একটু আদর যত্ন জোটে বেচারা পদযুগলের প্রাপ্তি কিন্তু একেবারই শূন্য! এদিকে গোটা দিনের চলাফেরার অন্যতম ভরসা এই পায়ের অবস্থা খারাপ হতে হতে যতক্ষণ না বাড়াবাড়ি কিছু হয় তখন আমাদের টনক নড়ে। এদিকে দীর্ঘদিন পায়ের স্বাস্থ্য অবেহেলিত হলে ব্যাক্টেরিয়া(bacteria) ও ফাঙ্গাসের সংক্রমণ(fungal infection), গোড়ালির চামড়া ফেটে (cracked heels) ব্যাথা হওয়া কিংবা পায়ের দুর্গন্ধ (smelly feet) ও পায়ে কড়ার(calluse) মত একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। আর শীতকালে এই সমস্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যায়। তাই শীতকালের কড়া ঠান্ডা থেকে কীভাবে পাকে বাঁচিয়ে রাখবেন জেনে নিন-
পায়ের পাতা ভাল করে ধুয়ে নিন
শীতকালে সারাক্ষণ জুতো মোজার ভেতরে পা থেকে তাতে ব্যাক্টেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। আর না হলে বাইরের ধুলো ময়লা তো আছেই। পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে যে জায়গাগুলো সেগুলো জীবাণু সংক্রমণের যেন একেবারে আদর্শ জায়গা। তাই নিয়মিত পা ভাল ভাবে ধোঁয়া কিংবা পরিষ্কার করা না হলে জীবাণুর সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই দিনে অন্তত একবার পা ভাল করে সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন। এর ফলে পায়ের নখের মধ্যে কিংবা আঙুলের ফাঁকে জমে থাকা ঘাম, ময়লা, জীবাণু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
পা শুকনো রাখুন (keep your feet dry)
স্নান করে ভাল করে পা মুছে নিন। পায়ের আঙুলের ফাঁকে জল থাকলে এবং পা ভেজা অবস্থায় জুতো মোজা পড়ে নিলে আঙুলের ফাঁকে জীবাণু সংক্রমনের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে কয়েক গুন।
ময়শ্চারাইজ করুন (moisturise properly)
শুধু মুখে ও হাতে নয় পায়ের পাতাতেও ভাল করে ময়শ্চারাইজার লাগান। না হলে ময়শ্চারাইজারের অভাবে পা শুকনো হয়ে ফেটে যাবে কিংবা পায়ের চামড়া জায়গায় উঠে যাবে, পা খসখসে হয়ে যাবে। আর এর বাড়াবাড়ি হলে তখন গোড়ালি ফেঁট পায়ে ব্যাথা, জীবাণু সংক্রমণ এমনকি হাঁটতে চলতেও সমস্যা হবে। দেখতেও বাজে লাগবে। তাই এই সব অপ্রীতিকর সমস্যা থকে বাঁচতে নিয়ম মেনে পায়ের যত্ন নিন। পা ধুয়ে, শুকনো করে মুছে ময়শ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
এক্সফোলিয়েশন (exfoliation)
তবে শুধু ময়শ্চারাইজার লাগালেই চলবে না। মাসে অন্তত একবার পায়ের ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার না করলে ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণ ও সংক্রমণের কারনে পায়ে দুর্গন্ধ যাবে না। এক্সফোলিয়েট করে ভাল করে ময়শ্চারাইজ করে নিন যাতে ত্বক শুষ্ক না হয়ে পড়ে।
ফুট সোক (foot soak)
হাতে কোনও দিন বাড়তি সময় থাকলে দৈনন্দিন পরিচর্যার বাইরে বেড়িয়ে ফুট সোক করুন। ইষদুষ্ণ গরম জলে অন্তত ১০ থেকে ১৫ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এতে শুধু যে পায়ের যত্ন হবে তা নয় সারাদিনের স্ট্রেস ও ক্লান্তি দূর হবে। শীতকালে এই ফুট শোকের পরে হালকা করে পা তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। জল শুকিয়ে গেলে ভিটামিন ই যুক্ত কোল্ড ক্রিম লাগিয়ে নিন। পায়ে জীবাণু সংক্রমনের প্রবনতা থাকলে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল ক্রিম ব্যবহার করুন। এক্সফোলিয়েটিং ফুট মাস্কও ব্যবহার করতে পারেন, ভাল কাজ করবে।
মোজা পড়ুন(wear socks)
শুধু ঠান্ডা থেকে বাঁচতেই নয় পরিবেশ দূষণ থেকেও পা কে বাঁচিয়ে রাখে মোজা। মোজা পড়লে বাইরের ধুলো, ময়লা পায়ের ক্রিমে আটকে যাবে না। এছাড়া সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মির থেকেও পায়ের ত্বক কে বাঁচিয়ে রাখে মোজা।
(ছবি সৌজন্য: Unsplash)