ধনতেরাস (Dhanteras)। ভারতের অনেক জায়গায় আবার ধনত্রয়োদশী (Dhanatrayodashi) নামেও পরিচিত। আলোর উৎসব দীপাবলি বা দিওয়ালির সূচনা এই ধনতেরাসের দিন থেকেই হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার মতে প্রতি বছর আশ্বিন মাসে কৃষ্ণপক্ষের ত্রয়োদশ চন্দ্র দিনে ধনতেরাস উৎসব (Festival) উদযাপিত হয় সারা ভারত জুড়ে। ধনসম্পদের দেবী মা লক্ষী (Goddess Laxmi) এবং ধনদেবতা কুবেরকে (Lord Kuber) আরাধনা করেন ভক্তরা। আলোর উৎসব দীপাবলির শুভক্ষণ ধনতেরাসের দিন থেকে শুরু হয়ে চলে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পর্যন্ত।
এবছর ধনতেরাস উদযাপিত হবে ২২ এবং ২৩ অক্টোবর। ২২ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা ২ মিনিটে ত্রয়োদশী শুরু হয়ে চলবে ২৩ তারিখ সন্ধ্যা ৬টা ৩ মিনিট পর্যন্ত। আর পুজোর শুভ মুহূর্ত পড়েছে ২২ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা ১ মিনিট থেকে ৮ টা ১৭ মিনিট পর্যন্ত। নিয়ম অনুসারে প্রদোষ কালের স্থির লগ্নে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করতে হয়। স্থির লগ্নে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করলে দেবী সারা বছর ঘরে বিরাজমান থাকেন। তাহলে সারা বছর কোনও অর্থের অভাব হয় না ঘরে। অশুভের ছায়া দূর করার জন্য ঘরে ঘরে জ্বালানো হয় দ্বীপ। অনেকের বাড়িতে আবার দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে পূজিত হন গণেশ দেবতাও।
ভারতীয়রা ধনতেরাস উত্সব জাঁকজমক এবং উত্সাহের সঙ্গেই উদযাপন করে থাকেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ধনতেরাস স্থানীয় রীতি অনুযায়ী নানাভাবে উদযাপন করা হয়। কোথাও বাড়ির উঠোন সেজে ওঠে রঙ-বেরঙয়ের ফুল ও রঙ্গোলিতে, আবার কোথাও দেবতাকে নিবেদন করা হয় মারুন্ধু, নৈবদ্যম। প্রজ্জ্বলিত হয় মাটির প্রদীপ, গাওয়া হয় ভজন, দেবী লক্ষ্মী ও কুবের দেবতাকে জানানো হয় প্রার্থনা। ধনতেরাস উপলক্ষ্যে কেনা হয় নতুন পোশাক এবং নতুন দ্রব্য। লোকজনের মধ্যে বিতরণ করা হয় নানান ধরনের মিষ্টান্ন।
ধনতেরাসের মাহাত্ম্য
এই দিনে মা লক্ষ্মী ও কুবের দেবতাকে খুশি করতে সোনা বা হিরের গহনা কিনে থাকেন অনেকে। অনেকে আবার রুপোও কেনেন অভ্যাস মতো। কেউ কেউ আবার নতুন বাসন-কোসন সহ কিনে থাকেন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। হিন্দু পুরাণ মতে এই দিনেই নাকি হয়েছিল সমুদ্র মন্থন। আর সেই সমুদ্র মন্থনের সময় ধনরত্নের সঙ্গে আবির্ভূত হয়েছিলেন দেবী লক্ষ্মী এবং কুবের দেবতা। মনে করা হয়, ধনতেরাসের শুভক্ষণে কোনও জিনিস কিনলে ধনসম্পদের দেবী ও দেবতা খুশি হয়ে আশীর্বাদ করেন।
ধন্বন্তরি
ভারতের অনেক অঞ্চলে ধনতেরাস আবার ধন্বন্তরি জয়ন্তী (Dhanwantari Jayanti) হিসেবে উদযাপন করা হয়ে থাকে। আয়ুর্বেদের দেবতা ধন্বন্তরি জন্ম উপলক্ষ্যে এই দিন উদযাপন করা হয়। হিন্দু পুরাণ মতে অমৃত লাভের উদ্দেশ্যে ধনতেরাসের দিনই দেবতা এবং অসুররা মিলে যে সমুদ্রমন্থন করেছিলেন, আয়ুর্বেদের দেবতা ধন্বন্তরি (ভগবান বিষ্ণুর অবতার) অমৃত হাতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।