একদিকে পৌষ পার্বণে খেজুরর গুড় দিয়ে তৈরি রকমারি পিঠে-পুলি, অন্যদিকে রবিবারের জমাটি খাবারের শেষ পাতে খেজুর টমেটোর চাটনি। দুই ভিন্ন স্বাদের ব্যঞ্জনেই খেজুর চাই। কবে, কীভাবে বাঙালি হেঁশেলে খেজুরের প্রবেশ সে খবর হয়তো আপনারা অনেকেই রাখেন না। কম দাম ও সহজলভ্য বলে যথেষ্ট জনপ্রিয় খেজুর। তবে এতদিন নরম সুস্বাদু খেজুরের মিষ্টি স্বাদেই ভুলেছেন। এর উপকারিতা জানলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য।
খুবই পুষ্টিকর: খেজুরে কী আছে আর কী নেই!অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার তো বটেই, রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ও প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ। ড্রাই ফ্রুট হওয়ায় প্রচুর ক্যালোরিও রয়েছে খেজুরে।
প্রচুর ফাইবার: শরীরের সার্বিক বিকাশের জন্য ফাইবার খুবই প্রয়োজনীয়। খেজুরে প্রচুর ফাইবার রয়েছে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও রক্তে শর্করার মাত্রা কম রাখতে খেজুর খুবই কার্যকরী।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভর্তি: খেজুরে ফ্লেভানয়েড, ক্যারোটেনয়েড, ও ফেনোলিক অ্যাসিডের মতো জরুরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এটি বিভিন্ন রোগ নিরাময়ে বেশ কার্যকরী। হার্টের বেশ কিছু সমস্যা, ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও স্মৃতিভ্রমের মতো সমস্যায় খেজুর ভাল কাজ দেয়।
মস্তিষ্ক সুস্থ্ রাখতে- খেজুরে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ফ্লোভানয়েড নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিশেষ উল্লেখ্য। মস্তিষ্ক ইনফ্লেমেশন ও প্যাচের সমস্যায় এটা খুবই কার্যকরী হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সন্তানসম্ভবাদের জন্য উপকারী-প্রেগন্যান্সির শেষ ছয় সপ্তাহে খেজুর খেলে নাকি সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধে হয়। এই বিষয় নিয়ে বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অক্সিটোসিন ও ট্যানিন নামক উপদানগুলির সন্তান প্রসবের প্রক্রিয়ায় সংকোচনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রিত করে এবং অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে হয়। পাশাপাশি ক্যালোরির মাত্রা বেশি থাকায় এই প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায় খেজুরে থাকা এই উপাদানগুলি।
ন্যাচারাল সুইটনার –খেজুরে ফ্রুকটোস থাকায় খেজুর খেতে মিষ্টি হয়। তাই বিভিন্ন পদ রান্নার সময়ে চিনির বদলে খেজুরের ব্যবহার করা হয়।
হাড় সুস্থ রাখে খেজুর খেজুরের গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির অন্যতম ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম৷ এই সব উপাদানগুলি হাড়ের স্বাস্থ্ বাড়াতে খুবই কার্যকর।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে- খেজুরের গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স খুবই কম৷ পাশাপাশি এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ রাখতে খুবই কার্যকরী খেজুর।
এই সব গুণ তো আছেই, তবে খেজুরের জনপ্রিয়তার আরও একটা অন্যতম কারণ হল একে খুব সহজেই রান্নাবান্নার কাজে নানা রকম ভাবে ব্যবহার করা যায়। যেমন চিনির বদলে, আবার স্মুদি বা মিল্কশেক বানানোর জন্য। খেজুরের চিটেচিটে ভাব থাকায় বিভিন্ন কুকি বার বা হেলদি বার বানানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।