কথায় আছে টাকা থাকলে ভুতের বাপের শ্রাদ্ধ হয়! কিম কার্দাশিয়ান(Kim Kardashian) হতে প্রথমে খরচ করেছেন প্রায় সাড়ে চার কোটিরও($600K) বেশি টাকা। কিন্তু অবুঝ মন তাতে ভোলেনি। এরপর বেশ কিছুদিন ধরেই ‘আইডেনটিটি ক্রাইসিসে’ ভুগে ফের পুরোনো ‘আমিতে’ ফিরবেন বলে মনস্থির করেন বছর ২৯-র নামী ইতালীয় ক্লোদিং ব্রান্ড ভার্সেসের মডেল(Versace model) জেনিফার প্যাম্পলোনা (Jennifer Pamplona)। এর জন্য ইতিমধ্যেই প্রায় ৯০ লাখেরও বেশি খরচ করে ফেলেছেন তিনি। তবে এবার খোদার ওপর খোদকারির মাশুল গুনছেন তিনি।
বারো বছর আগে তখন কিম কার্দাশিয়াকে নিয়ে চারিদিক হৈ হৈ রব। স্তন ও নিতম্বের কসমেটিক সার্জারি(cosmetic surgery) করিয়ে রাতারাতি মার্কিন মুলুকের কিম কার্দাশিয়ান তখন হয়ে ওঠেন পুরুষ মনের স্বপ্ন সুন্দরী! জেনিফার প্যাম্পলোনার বয়স তখন সবে ১৭ বছর, মাথায় ভুত চাপল এই এ লিস্টার মডেলর(A listers model) মতো হলেই মিলবে সাফল্য। যেমনি ভাবা তেমনি কাজ শুরু হয় জেনিফারের ‘ট্র্যান্সফর্মেশন জার্নি’। গত ১২ বছর ধরে একের পর এক ৪০টিরও বেশি সার্জারি করে নব কলেবরে দ্বিতীয় কিম কার্দাশিয়ান হয়ে ওঠেন জেনিফার। শুধু কিমের মতো নিতম্ব পেতে ৩টি রাইনোপ্লাস্টি(rhinoplasty) আর ৮টি কসমেটিক সার্জারি(cosmetic surgery) করান জেনিফার।
বলা বাহুল্য নব কলেবরে বেশ নাম ডাক হয় তাঁর, খ্যাতি ও প্রতিপত্তি দু’ই পান। তবে এত কিছুর মধ্যে আচমকা কাজ করতে শুরু করে মন কেমনের অসুখ! যা চেয়েছিলেন তাই হয়েছেন, তাও মন থেকে খুশি হতে পারছেন না আর। মনে হলে যেন এ কয়েক বছর একটা ঘোরের মধ্যে কাটিয়েছেন তিনি। বুঝতে পারলেন একের পর এক কসমেটিক সার্জারি করাতে করাতে তিনি কেমন যেন এর আশক্ত হয়ে পড়েছেন। ঘোর কাটল যখন দেখলেন তার ডিসমর্ফিয়া হয়েছে।
পড়াশোনা, অর্থ, প্রতিপত্তি সবই আছে তাঁর কিন্তু কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছেন জেনিফার প্যাম্পলোনা নিজেই। জেনিফার প্যাম্পলোনাকে সবাই চেনে, তার এত নাম ডাক একটা কারণে সেটা দ্বিতীয় কিম কার্দাশিয়ান হিসেবে। ঠিক করলেন আর না, এবার তিনি ফিরবেন আগের রূপেই। এই সময় ইস্তানবুলের একজন চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ হয় জেনিফারের। এই কাজে জেনিফারকে তিনি সাহায্য করতে পারেন বলে জানান।
সেইমতো শুরু হয় জেনিফারের ‘ডিট্র্যানজিসন জার্নি’(detransition journey)। তবে ফিরতে চাইলেও ফেরার পথ মসৃণ নয়। মুখে, গলায়, চোখে, ঠোঁটে এবং নাকে একাধিক সার্জারি করান তিনি। সার্জারির তিন দিনের মাথায় তাঁর গাল থেকে রক্ত বেরোতে শুরু করে। একটি প্রথম স্তরের সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তিনি জানান এক সময় তাঁর মনে হয়েছিল তিনি হয়ত আর বাঁচবেন না। তবে এখন পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। আসতে আসতে সেরে উঠছেন। চোখে, মুখে দাগ ও ফোলাভাব এখনও রয়েছে। তবে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।
আর এখন বডি ডিসমর্ফিয়া(dysmorphia) ও কসমেটিক সার্জারির(cosmetic surgery) নেতিবাচক দিকগুলি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছেন জেনিফার। চান না কৃত্রিম সৌন্দর্যের হাতছানিতে ভুলে তাঁর মতো আর কেও কসমেটিক সার্জারির এই গোলকধাঁধায় নিজেকে হারিয়ে ফেলুক। তাঁর এই ডিট্রানজিশনের সেলফিগুলি তাই নিয়মিত ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে সবাইকে সচেতন করেন তিনি। এই নিয়ে ব্রাজিলের একজন চিকিত্সকের সঙ্গে মিলে এই বিষয় কাজ শুরু করেছেন ব্র্যাজিলিয়ান এই তারকা।