আজকের দিন, ১৫ই ফেব্রুয়ারি, প্রত্যেক বছর বিশ্বজুড়ে উদাযাপিত হয় ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ডহুড ক্যানসার ডে। মারণ রোগ ক্যানসারের পরিধি আজ এতটাই বিস্তৃত যে এই রোগের কবল থেকে মুক্ত নয় শৈশবও। তাই প্রত্যেক বছর ক্যানসার আক্রান্ত শিশু, কিশোর ও তাদের পরিবারের প্রতি সহযোগীতা ও সহমর্মিতা ও ছোটদের মধ্যে ক্যানসারের ব্যাপকতা নিয়ে বিশ্ববাসীর মধ্যে সচেতনতার গড়ে তুলতেই এই দিনটি উদযাপন করা হয়ে বিশ্বজুড়ে।
তবে এটাও ঠিক যত দিন যাচ্ছে ততই আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত গবেষণার কাঁধে ভর দিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই সময়মতো চিকিত্সা ও সচেতনতার মাধ্যমে ছোটদের মধ্যে সারিয়ে তোলা যাচ্ছে ক্যানসার। তবে এই সব কিছুর মধ্যে ক্যানসার আক্রান্ত শিশু বা কিশোরের মানসিক স্বাস্থ্যে নিয়ে সচেতনতার অভাব শিকার করে নিচ্ছেন চিকিত্সকরা।
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ছোটদের ক্যানসারে মুক্ত করা গেলেও, চিকিত্সা পদ্ধতি এতটাই সময়সাপেক্ষ ও জটিল যে ঘন ঘন হাসপাতালে যাওয়া, কিমোথেরাপি নেওয়া, মাঝে মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, ইঞ্জেকশন এই সব কিছু মিলিয়ে একটা শিশুর জীবন তোলপাড় হয়ে যায়।
অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের বয়স এতটাই কম থাকে যে তাদের গোটা বিষয়টা বলে বোঝানো সম্ভব হয় না। তাই স্বাভাবিক ভাবেই এটা মা-বাবা ও ক্যানসার আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে ক্যানসার নিয়ে এখনও আমাদের দেশে আতঙ্কের শেষ নেই। তাই কোনও শিশু আক্রান্ত হলে শুধু শারীরিক সমস্যা নয় তাকে ঘিরে অভিভাবক ও আত্মীয় পরিজনদের দুশ্চিন্তার প্রভাবও পড়ে ওই শিশুটির ওপর। তাই এই সময় স্বাভাবিক ভাবেই শিশুরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে এবং নানা রকম মানসিক অস্থিরতা তাদের মধ্যে তৈরি হয়। তাই এই সময় ক্যানসারের চিকিত্সার পাশপাশি প্রয়োজন আক্রান্ত শিশু বা কিশোরের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার। কীভাবে যত্ন নেবেন দেখে নিন-
কোনও শিশু ক্যানসার আক্রান্ত হলে, পরবর্তী সময়ে তার মানসিক অস্থিরতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করা দরকার। ক্যানসার নিয়ে ভুল বা ভ্রান্ত ধারণার যাতে তৈরি না হয় তাতে রোগীর সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন।
সন্তান ক্যানসার আক্রান্ত এটা নিঃসন্দেহ একটা দুঃসংবাদ। তাই মা বাবাদের মধ্যে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগ হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্ত এই দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন। তাই শুধু সন্তানের না অভিভাবকদেরও এই সময় সাইকোলজিক্যাল কাউনসিলিংয়ের প্রয়োজন।
মা বাবা স্বাভাবিক ও শান্ত থাকলে সন্তানের মধ্যেও উদ্বেগ বা ভয় থাকবে না। এতে সেরে ওঠার পথ সুগম হবে।
অসুস্থ বলেই যে সন্তানকে বাড়তি সুযোগ সুবিধে দিতে হবে তা কিন্তু ঠিক নয়। বরং নর্মাল চাইল্ডের মতই তার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।
চিকিত্সা চলাকালীন চিকিত্সকের সঙ্গে পরামর্শ করে বাড়িতে থেকে পড়াশোনাও চালিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত।