কলকাতা: প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় রাখি বন্ধন উত্সব (Rakhi Bandhan Utsav)। সেই কারণে শ্রাবণী পূর্ণিমা তিথিটি রাখি পূর্ণিমা (Rakhi Purnima) নামেও পরিচিত। এই দিন ভাই ও বোনেদের উত্সব। ভাইয়ের হাতে রাখি পরিয়ে তার দীর্ঘ নীরোগ জীবন কামনা করে বোন। অন্যদিকে, ভাইরা তাদের বোনদের রক্ষা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু কখনও কী ভেবে দেখেছেন, কীভাবে শুরু হল রাখি বন্ধন উত্সব? বা এর পেছনের ইতিহাস। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
রাখি পূর্ণিমাকে ঘিরে রয়েছে নানান পৌরাণিক কাহিনি। পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, একশোটি অপরাধ করার পর যখন শ্রী কৃষ্ণ শিশুপালকে হত্যা করার জন্য যুদ্ধ করছিলেন, তখন শ্রী কৃষ্ণের তর্জনী কেটে রক্তপাত শুরু হয়েছিল। তারপর দ্রৌপদী তার শাড়ির আঁচলের একটা টুকরো ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। তখন শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এরপর, শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীর ভরা সভায় বস্ত্র অপসারণের সময় তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুসারে রাজা ধৃতরাষ্ট্রের দরবারে দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করেছিলেন। তখন থেকেই এই উৎসব পালিত হয়ে আসছে বলে মনে করা হয়।
অন্য একটি কাহিনি রয়েছে, দৈত্যরাজা বলি ছিলেন বিষ্ণুর ভক্ত। বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ছেড়ে বালির রাজ্য রক্ষা করতে চলে এসেছিলেন। বিষ্ণুর স্ত্রী লক্ষ্মী স্বামীকে ফিরে পাওয়ার জন্য এক সাধারণ মেয়ের ছদ্মবেশে বলিরাজের কাছে আসেন। লক্ষ্মী বলিকে বলেন, তাঁর স্বামী নিরুদ্দেশ। যতদিন না স্বামী ফিরে আসেন, ততদিন যেন বলি তাঁকে আশ্রয় দেন। বলিরাজা ছদ্মবেশী লক্ষ্মীকে আশ্রয় দিতে রাজি হন। শ্রাবণ পূর্ণিমা উৎসবে লক্ষ্মী বলিরাজার হাতে একটি রাখী বেঁধে দেন। বলিরাজা এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে লক্ষ্মী আত্মপরিচয় দিয়ে সব কথা খুলে বলেন। এতে বলিরাজা মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুকে বৈকুণ্ঠে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। বলিরাজা বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর জন্য সর্বস্ব ত্যাগ করেন। সেই থেকে শ্রাবণ পূর্ণিমা তিথিটি বোনেরা রাখীবন্ধন হিসেবে পালন করে।
এ বছর রাখিপূর্ণিমা পালিত হবে ভাদ্র মাসে। বুধবার, ৩০ অগাস্ট সকাল ১০.৫৮ মিনিটে পূর্ণিমা শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট সকাল ৭.০৫ মিনিট পর্যন্ত পূর্ণিমা থাকবে। কিন্ত, পূর্ণিমার সঙ্গেই শুরু হচ্ছে ভদ্রাকাল। এই সময় রাখি পরানো শুভ হবে না বলে জানাচ্ছেন শাস্ত্র বিশেষজ্ঞরা। ৩০ অগাস্ট রাত ৯.০১ মিনিটের পর থেকে পরের দিন ৩১ অগাস্ট সকাল ৭.০৫ মিনিট পর্যন্ত রাখি বন্ধনের শুভ সময়৷