কলকাতা: খাওয়া নিয়ে শিশুদের (Child) বায়নার শেষ নেই। মোবাইল (Mobile) কিংবা টিভি (TV) ছাড়া এক গ্রাস ভাতও মুখে তুলতে চায় না। আজকাল তো ২-৩ বছরের বাচ্চারাও জানে কীভাবে ফোন ব্যবহার করতে হয়। তবে কিছু কিছু বাচ্চাকে গ্রাস করে রাখে ‘কার্টুন অ্যাডিকশন’ (Cartoon Addiction)। ‘টম এন্ড জেরি’ থেকে শুরু করে হালের ‘ওগি এন্ড দ্য ককরোচেস’, ‘ছোটা ভীমে’ মজে রয়েছে জেনারেশনের পর জেনারেশন। কার্টুন না দেখলে তারা খেতে চায় না, পড়তে চায় না, শুতে চায় না। এমনকী কার্টুন দেখতে বারণ করা হলেই তারা শুরু করে দেয় কান্না। আর এটাই চিন্তার বিষয় বলে উল্লেখ করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের কথায়, ঠিক সময়ে এই সমস্যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে কার্টুনের নেশা থেকে সন্তানের পড়াশোনা লাটে উঠতে পারে। জেনে নিন কীভাবে সন্তানের এই নেশা ছাড়াবেন-
১) স্ক্রিন টাইম বেঁধে দিন- সবার প্রথমে সন্তানের স্ক্রিন টাইম বেঁধে দিতে হবে। সারাদিনে মাত্র ১ ঘণ্টা কার্টুন দেখার জন্য বরাদ্দ করতে হবে। এতেই তার কার্টুন প্রীতি কিছুদিনের মধ্যেই কমে যাবে। তবে অধিকাংশ বাচ্চাই প্রথমে এই নিয়ম মানতে চাইবে না। সারাদিন ঘ্যান ঘ্যান করবে। কিন্তু আপনি তার কথায় একদম কান দেবেন না। তাহলেই দেখবেন পরিস্থিতি বদলে যাবে।
২) গল্প বলতে বলতে খাওয়ান- সন্তানের কার্টুন প্রীতি কমাতে চাইলে তাকে খাওয়ানোর সময় অবশ্যই গল্প বলুন। এতেই হাতেনাতে ফল পাবেন। কারণ, ৯০ এর দশকে বাংলার ঘরে ঘরে টিভি ছিল না। সেই সময় মা-ঠাকুমারা তাঁদের সন্তানকে খাওয়ানোর সময় রূপকথার নানা গল্প শোনাতেন। আর এইসব গল্পের অলিগলিতেই ভেসে বেড়াত শিশু মন। তাই আপনিও আপনার সন্তানের কার্টুনের নেশা ছাড়াতে গল্প বলে খাওয়ানোর অভ্যাস করুন।
৩) হাত ধরে মাঠে খেলতে নিয়ে যান- সন্তানকে মাঠে-ঘাটে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে দিন। না যেতে চাইলে হাত ধরে নিয়ে যান। এতেই দেখবেন তার কার্টুনের প্রতি ভালোবাসা কমবে। এমনকী তার সামাজিক দক্ষতাও কয়েকগুণ বাড়বে। সে খেলার হার-জিতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে। আর এই গুণই তো তাকে আগামীদিনে অন্যদের থেকে কয়েকগুণ এগিয়ে দেবে।
আরও পড়ুন:Nora Fatehi-Jacqueline Fernandez | এবার নোরার জন্য বড় ক্ষতির মুখে জ্যাকলিন!
৪) সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত করুন- সন্তানকে একদম ছোটবয়স থেকেই একাধিক সৃষ্টিশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারলে তার মনের বিকাশ হতে সময় লাগবে না। তাই সন্তানকে ছবি আঁকা, গান বা নাচের মতো যে কোনও একটির সঙ্গে যুক্ত করে দিন। এতেই দেখবেন তার মতিগতি বদলে যাবে। সে কার্টুনের জগৎ ছেড়ে বাস্তবের দুনিয়ায় ম্যাজিক দেখানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠবে।
৫) বুঝিয়ে বলতে ভুলবেন না- অধিকাংশ বাবা-মায়েরাই সন্তানের বুদ্ধিমত্তার উপর বিশ্বাস রাখেন পারেন না। তাই তাঁরা সন্তানকে বুঝিয়ে বলার পরিবর্তে কথায় কথায় অর্ডার দেওয়ায় বেশি বিশ্বাসী। আর এই কারণেই ছোটরাও বাবা-মায়ের কথা শুনতে চায় না। তাই সন্তানের ভালো চাইলে তাকে এবার থেকে অত্যধিক কার্টুন দেখার ক্ষতিকর দিকগুলি সম্পর্কে বুঝিয়ে বলুন। একবারে কাজ না হলে বারবার বলতে হবে। তাহলেই দেখবেন কাজ হবে।