ফল খাওয়া ভাল, তবে পরিমাণে ঠিক কতটা খেলে, ফল আমাদের শরীরের উপকারের বদলে অপকার করবে না, তা জানেন কি? শরীর সুস্থ রাখতে সুষম আহার অত্যাবশ্যক। আর এই সুষম আহারে ফলের উপস্থিতি কতটা তাৎপর্যপূর্ণ তা নিয়ে নতুন করে বলার আর কিছু নেই। ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ফলে কী আছে আর কী নেই? এত সব পুষ্টিকর উপদান থাকায় আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে বিভিন্ন কাজে লাগে ফল। ক্যানসারের মত রোগের বিরুদ্ধ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা কিংবা, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার মতো আরও অনেক কিছু।
তবে ফল বা মধুতে থাকা বিশেষ ধরনের উপাদান, ফ্রুকটোজ কিন্তু শরীরের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে । যদি পরিমাণ মেপে খাওয়া না হয়।পাশাপাশি ফলে থাকা এই হাই সুগার অন্যান্য খাবারে থাকা কার্বোহাইড্রেটের সংস্পর্শে আসে, তখন ডায়বিটিস রোগীদের স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এমনকি, বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন মাত্রাতিরিক্ত ফ্রুকটোজ শরীরের ভাইটাল অর্গানের ক্ষতি পর্যন্ত করতে পারে। তাই বিভিন্ন রকমের ফল খাওয়ার সময় তা নিউট্রশনিশ্টদের উপদেশ মেনে খাওয়াই ভাল।
না হলে মাত্রাতিরিক্ত ফল খেলে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য, লিভার, হার্ট, ওবেসিটি ও ডায়বিটিসের সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে শীতকালে এমনই নানা রকমের জীবাণুর সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। সেখানে বেশি ফলে খেয়ে অসুস্থ হলে সহজেই সংক্রমনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।
লিভারের স্বাস্থ্যে কী ভাবে প্রভাবিত করে ফ্রুকটোজ
শরীরের অতিরিক্ত ফ্রুকটোজকে ফ্যাটে পরিবর্তন করে লিভার। এই প্রক্রিয়াকে লিপোজেনেসিস বলা হয়। এই প্রক্রিয়া চলাকালীন ফ্যাট মলিকিউলগুলো লিভারে জমে গিয়ে নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়। বিশ্বে অন্তত ২৫ শতাংশ মানুষ এই সমস্যায় ভোগেন এবং ভারতে এর পরিমাণ প্রায় ৯ থেকে ৩২ শতাংশ।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য
মস্তিষ্কের ওপর ফ্রুকটোজের প্রভাব নিয়ে গবেষণা এখনও চলছে। তবে জানা গেছে অল্প দিনের জন্য যদি বেশি মাত্রায় ফ্রুক্টোজ খাওয়া হয়, তা হলে নিউরো ইনফ্লেমেশনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ব্রেন মাইটোকনড্রিয়াল ডিসফাংশান ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মত সমস্যার সৃষ্টি হয়।
হার্টের স্বাস্থ্য, মেদ ও ডায়বিটিসের সমস্যা
মাত্রাতিরিক্ত ফ্রুকটোজ রক্তে ইনসুলিন প্রতিরোধ বাড়িয়ে তোলে। অন্যদিকে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রক লেপটিন হরমোনের কাজে বাধা সৃষ্টি করে বাড়তি ফ্রুকটোজ। এর ফলে শরীরে মেদ জমার সমস্যা, ইনসুলিন রেজিসটেন্স ও গ্লুকোজ ইনটলারেন্সের মত সমস্যা দেখা দেয়।
এই সব সমস্যা ছাড়াও ফ্রুকটোজ শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে তোল। এর ফলে গাউট, উচ্চ রক্তচাপ ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
তাই দিনে প্রায় ২৫০ থেকে ২৮০ গ্রাম পর্যন্ত ফল খাওয়া যেতে পারে।