হেঁচকি যেমন আচমকা ওঠে তেমন দ্রুত ঠিকও হয়ে যায়। কিন্তু যে কয়েক মিনিট থাকে তাতেই বেশ প্রভাব ফেলে শরীরে। তাই হেঁচকির হয়রানি থেকে বাঁচতে এই টোটকাগুলো কাজে লাগাতে পারেন।
নিশ্বাস ধরে রাখুন
হেঁচকি বন্ধ করার সব থেকে সহজ উপায় এটা। এই টোটকার কথা জানেন অনেকেই। কয়েক সেকেন্ডে এই ভাবে নিশ্বাস ধরে রাখলে শরীরের ভিতরে কিছু কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে যায়। এর ফলে ডায়াফ্রামে যে স্প্যাজম বা সঙ্কুচন হয় সেটা আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। হেঁচকি ওঠা বন্ধ হয়ে যায়।
এর জন্য হেঁচকি ওঠার সময় জোরে নিশ্বাস নিয়ে অনেকটা হাওয়া মুখের ভেতর টানতে হবে। এবার মুখের ভেতর দশ থেকে কুড়ি সেকেন্ড হাওয়া ভরে রেখে দিতে হবে। এরপর আসতে আসতে মুখ দিয়ে হাওয়া ছাড়তে হবে। প্রয়োজন মতো এই ভাবে কয়েকবার হাওয়া মুখে ভরে ছাড়তে পারেন।
হাঁটু জড়িয়ে ধরুন
এটা করতে গেলে আপনাকে একটা জায়গায় আরাম করে বসতে হবে। এক্ষেত্রে এই টোটকা আপনি বাড়িতে থাকলে বেশী কার্যকর। বিছানায় বা সোফায় পা তুলে বসুন। এবার হাঁটু দুটোকে একেবারে বুকের কাছে নিয়ে এসে চেপে ধরুন। মিনিট দুয়েক এইভাবেই ধরে বসে থাকুন।
এইভাবে হাঁটু বুকের কাছে হাঁটু টেনে আনলে কম্প্রেসের ডায়াফ্রামের মাংসপেশীর যে সঙ্কুচন হয়েছে তা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। হেঁচকিও বন্ধ হয়ে যাবে।
কাগজের থলেতে নিশ্বাস ফেলেুন
অনেক সময় হেঁচকি ওঠার তীব্রতা এমন থাকে যে সহজে নিয়ন্ত্রণে আসে না। এ সব ক্ষেত্রে একটি কাগজের ঠোঙায় বা থলেতে আসতে আসতে গভীর নিশ্বাস ছাড়ুন।
এবার এই কাগজের ব্যাগ মুখের সামনে ধরে আসতে আসতে নিশ্বাস ভেতরে নিন এবং এই ব্যাগেই ছাড়ুন। এর ফলে রক্তে কার্বন ডাইঅক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাবে। কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে যাওয়ার ফলে এটা ডায়াফ্রামকে আরও বেশি সঙ্কুচিত করে দেয়। এর ফলে শরীরে বেশি করে অক্সিজেনের চাহিদা তৈরি হয়।
তবে এক্ষেত্রে ভুলেও প্লাস্টিকের ব্যগ ব্যবহার করবেন না।
জিভ বার করে রাখুন
শুনে হাসি পেলেও এতে কাজ হবে চমৎতকার। আমাদের জিভটাও একটা প্রেসার পয়েন্ট আর এই জিভ বাইরের দিকে টানলে যে চাপ সৃষ্টি হবে এতে গলার মাংশপেশী উদ্দীপ্ত হয়ে ডায়াফ্রামের যে সঙ্কুচন রয়েছে সেটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বরফ জল খেতে পারেন
গরমকাল ছাড়া এই কাজটা করা কঠিন তবে করতে পারলে আরাম পাবেন নিঃসন্দেহে। এর জন্য এক গ্লাস বরফ ঠান্ডা জলে থেকে ৯ থেকে ১০ বার চুমুক দিয়ে জল খান। এই জল গলা দিয়ে নামার ফলে খাদ্যনালীতে যে সঙ্কুচন হবে তা ডায়াফ্রামের সঙ্কুচনকে ছাপিয়ে যাবে। এর ফলে হেঁচকি ওঠাও বন্ধ হয়ে যাবে।
মুখে চিনি রাখতে পারেন
এই পদ্ধতি বাড়িতে থাকলেই সম্ভব। এতে আধ চামচ চিনি নিয়ে জিভের তলায় একেবারে ভিতরের দিকে রাখতে হবে। এভাবে দশ থেকে ২০ সেকেন্ড জিভের তলায় রেখে চিনি গিলে ফেলুন। এটা করলে আপানর ব্রিদিন প্যাটার্নে একটা পরিবর্তন হবে আর এর ফলে ডায়াফ্রামের স্প্যাজম কমে যাবে।
পাতিলেবুতে কামড় দিন বা চুষে নিন
হাতের কাছে পাতিলেবু থাকলে এর থেকে ভাল টোটকা আর হয় না। প্রথমত পাতিলেবুর গন্ধে স্বাভাবিকভাবেই নেজোফেরিংক্সের মাংশপেশী উদ্দীপিত হবে। এর ফলে ডায়াফ্রামে যে সঙ্কুচন তৈরি হয়েছে তা স্বাভাবিক হয়ে হেঁচকি উঠে তত্ক্ষণাত কমিয়ে দেবে।
তবে হেঁচকি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মনে করে মুখ ধুয়ে নেবেন। না হলে সিট্রিক অ্যাসিডে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে।