ওজন কমানোর খাদ্যতালিকায় আজকাল যে জিনিসটা সব থেকে উপরে থাকে তা হল গ্রিন টি (green tea)। স্বাদের জন্য কম বরং স্বাস্থ্যের জন্যেই বাড়ছে গ্রিন টির জনপ্রিয়তা। অনেকেই যেখানে দিনে এক থেকে দুকাপ গ্রিন টি পান করেন সেখানে কেউ কেউ আবার চার থেকে পাঁচ কাপও খেয়ে ফেলেন। কিন্তু যে কোনও খাবার স্বাস্থ্যের জন্য যত ভালই হোক না কেন, মাত্রাতিরিক্ত হলেই কিন্তু বিপত্তি। গ্রিন টি-র গবেষক ও বিজ্ঞানী মিচিয়ো সুজিমুরার (Michiyo Tsujimora) ১৩৩ তম জন্মবর্ষে (133 birth anniversary) চলুন জেনে নেওয়া যাক ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ঠিক কত কাপ গ্রিন টি খাওয়া উচিত।
বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গবেষণায় গ্রিন টির উপকারিতা নিয়ে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে। বিভিন্ন রকমের ক্যানসার যেমন ফুসফুসে (lungs), কোলনে(colon), খাদ্যনালীতে(esophagus), মুখে(mouth), পেটে(stomach), স্মল ইনটেসটাইন (small intestine), কিডনিতে(kidney), প্যানক্রিয়াস(pancreas) ও ম্যামারি গ্লান্ডের(mammary gland) সংক্রমণের ক্ষেত্রে গ্রিন টি (green tea) খুবই কার্যকরী। এমনটাই জানাচ্ছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনলজি ইনফরমেশনের (NCBI) ২০১০-র রিভিউ রিপোর্ট।
এ ছাড়া গ্রিন টি-র অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল (anti-bacterial) উপকারিতা রয়েছে এবং এটি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট (anti oxidants), মিনারেলস(minerals) ও ভিটামিনে (vitamins) পরিপূর্ণ। এর ফলে ওজম কমোনো (weight loss) থেকে শুরু করে শরীরের পাচনক্রিয়ার উন্নত করা, মুখের স্বাস্থ্য ভাল রাখা, তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করা এবং হার্টের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম৷ ত্বকের সমস্যার ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকরী।
ঠিক তিনবার
তবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, গ্রিন টি-তে যেমন প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিশেষ করে পলিফেনলসের (polyphenols)মতো কার্যকরী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, সেরকমই কিছুটা হলেও রয়েছে ক্যাফেন৷ এর মানে গ্রিন টি খাওয়া ভাল নিঃসন্দেহে, কিন্তু দিনে তিন বারের বেশি হলে সমস্যা হতে পারে। যেমন রাতে ঘুম আসতে বেগ পেতে হতে পারে। আবার আমাদের শরীরে থাকা প্রয়োজনীয় পদার্থগুলোর এর ফলে শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
কোন সময় গ্রিন টি
গ্রিন টি-র উপকারিতা পেতে হলে নিয়ম মেনে ঠিক সময়ে খেতে হবে। যেমন ধরুন, প্রধান দুটি আহারের মাঝে যে সময়টা সেই সময় গ্রিন টি খান। আর ভুলেও খালি পেটে গ্রিন টি খাবেন না।
এর মানে প্রথম খাবারের অন্তত দুঘন্টা পরে ও পরের খাবারের অন্তত দুঘন্টা আগে গ্রিন টি খান। এই ব্যবধান মেনে চললে গ্রিন টি-র মধ্যে ক্যাটেচিন নামক যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে সেটা আমাদের খাদ্য যেমন মাংস বা দুধে থাকা কেসিনস-এর মতো পদার্থের সঙ্গে কোনও ক্রিয়া হবে না। অন্যদিকে খাবারের সঙ্গে গ্রিন টি খেলে, আমাদের খাদ্য যে পুষ্টি রয়েছে তা সঠিক ভাবে আমাদের শরীর নিতে পারে না। যেমন আয়রন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থগুলি খাবারে থেকে শুষে নিতে শরীরের সমস্যা হয়।
এমনিতে স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, কিন্তু যাঁদের ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কিংবা পাচনক্রিয়ায় সমস্যা রয়েছে তাঁদের গ্রিন টি বুঝেশুনেই খাওয়া ভাল।