কলকাতা: হিন্দু ধর্মে ভাই-বোনের ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে ধুমধাম করে পালন করা হয় রাখি বন্ধন উৎসব (Raksha Bandhan2023)। প্রতি বছর শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয় এই উৎসব। এই দিন দিদি বা বোন তাঁর ভাই বা দাদার হাতে রাখি পরিয়ে মঙ্গল কামনা করে। অন্যদিকে, ভাই বা দাদারা সারা জীবন বোন বা দিদিদের রক্ষা করার শপথ নেয়। কিন্তু জানেন কী, এমন কিছু কাজ রয়েছে, যেগুলি রাখি পূর্ণিমার দিন করলে আপনি মা লক্ষ্মীর (Maa Lakshmi) আশীর্বাদ পাবেন। জেনে নিন লক্ষ্মী দেবীকে প্রসন্ন করতে কী কী করবেন-
১) রাখি পূর্ণিমার দিনে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পেতে, দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি বা ছবিতে ১১ টাকা ও হলুদ নিবেদন করুন। এরপর রীতিমতো মায়ের আরাধনা করুন। পরের দিন সকালে ওই টাকা গুলো লাল কাপড়ে বেঁধে ঘরে সম্পদ রাখার স্থানে রাখুন। রাখি পূর্ণিমা থেকে এটি শুরু করুন এবং প্রতি পূর্ণিমায় এটি করুন। এই প্রতিকারে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবেন।
২) রাখি বন্ধন উৎসবটিও এই পূর্ণিমা তিথিতে উদযাপিত হয়, তাই এই দিনে ভাই ও বোনেদের দেবী লক্ষ্মীকে সুগন্ধি ইত্র, সুগন্ধি ধূপকাঠি এবং লাল ফুল অর্পণ করা উচিত। তারপর কনকধারা স্তোত্র পাঠ করতে হবে। পাঠ শেষে ঘি এর প্রদীপ দিয়ে আরতি করুন এবং ঘরে মা লক্ষ্মীর স্থায়ী বসবাসের জন্য তার কাছে প্রার্থনা করুন। এতে করে জীবনে সুখ-সমৃদ্ধি থাকে এবং সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা থাকে।
৩) রাখি পূর্ণিমার দিনে দেবী লক্ষ্মীর মন্দিরে বা বাড়িতে দেবী লক্ষ্মীর পুজো করুন। এই পুজোয় লক্ষ্মীকে লাল ফুল অর্পণ করা অত্যন্ত শুভ। এর সঙ্গে লক্ষ্মীকে পাঁচটি বাদামের তৈরি ক্ষীর নিবেদন করতে পারেন। এছাড়া এই ক্ষীর শিশুদের মধ্যে বিতরণ করতে পারেন। ব্যবসায় প্রচুর লাভ করতে পারেন এই প্রতিকারে।
৪) মা লক্ষ্মী পূর্ণিমা তিথিতে অশ্বত্থ বৃক্ষে আগমন করেন। সকালে জলে কাঁচা দুধ মিশিয়ে অশ্বত্থ বৃক্ষে নিবেদন করুন এবং ১১ বার প্রদক্ষিণ করে আপনার ইচ্ছার কথা জানান। এটি করলে দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়া যাবে এবং জীবনে কখনও অর্থ ও শস্যের অভাব হবে না।
৫) রাখি পূর্ণিমার দিন স্বামী-স্ত্রীকে কাঁচা দুধে চিনি ও চাল মিশিয়ে চন্দ্রকে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হবে। অর্ঘ্য নিবেদন করার সময়, চন্দ্র মন্ত্র জপ করা উচিত। এর পর হাত জোড় করে প্রার্থনা করতে হবে। এতে করে কুণ্ডলীতে চন্দ্রের অবস্থান মজবুত হয় এবং দাম্পত্য জীবনে মধুরতা বজায় থাকে। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিক সমস্যারও অবসান হয় এই প্রতিকারে।
৬) বৃহস্পতিবার রাখি পূর্ণিমার উপবাস পালিত হবে। এদিন কলা ও হলুদের মূল একটি হলুদ কাপড়ে বেঁধে ডান হাতের বাহুতে বেঁধে রাখুন। এই জিনিসগুলি পোখরাজের মতো কাজ করে এবং বৃহস্পতির শুভ প্রভাব অর্জিত হয়। রাখি পূর্ণিমার দিনে করা এই প্রতিকার সুখ, ধন ও জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং অনেক কষ্ট থেকে মুক্তি দেয়।
৭) দীর্ঘদিন ধরে যদি কোনও ব্যক্তির কোনও কাজ সম্পূর্ণ না হয়, তাহলে রাখি পূর্ণিমার দিন গণেশের ছবির সামনে লবঙ্গ এবং সুপারি রেখে পুজো করতে পারেন। যখনই কাজে যাবেন তখন এই সুপারি ও লবঙ্গে নিজের কাছে রেখে দিন। কাজে পাবেন সফলতা।
৮) রাখি পূর্ণিমার দিন একটি মাটির কলসিতে একটি নারকেল রেখে দিন। তার উপর একটি লাল কাপড় বেঁধে জলে প্রবাহিত করুন। এর ফলে আপনার বাড়িতে কখনওই অর্থের অভাব হবে না।
উল্লেখ্য, এ বছর রাখি উত্সব পালন করা হবে আগামী ৩০ অগস্ট ও ৩১ অগস্ট। তবে ভাদ্র মাস শুরু হওয়ায় সব বোনেরা ভাইয়ের হাতে রাখি বাঁধতে পারবেন শুধুমাত্র ৩০ অগাস্ট রাতে বা ৩১ অগাস্ট সকালে। শাস্ত্রমতে, ভাদ্র কালে রাখি বাঁধা হয় না। ভাদ্র কাল ৯টা ১ মিনিটে শেষ হবে, তাই এর পরেই আপনি রাখি বাঁধতে পারবেন। ৩১ অগাস্ট সকাল ৭টা ৫ মিনিট পর্যন্ত রয়েছে পূর্ণিমা তিথি।