টিভি কমার্শিয়াল হোক কিংবা ই-কমার্স সাইট কিংবা সোশাল মিডিয়া, চুলের সৌন্দর্য্য বাড়িয়ে তুলতে কেরাটিনের উপকারিতা ইদানীং বিউটি এক্সপার্টদের মুখে মুখে। চুলের স্বাস্থ্য ভাল করতে, সুন্দর চুল ও হারানো জেল্লা ফিরিয়ে আনতে এই কেরাটিনের জবাব নেই! চুলের অত্যাবশ্যক এই পুষ্টি চুলের শুষ্কতা ও চুলের ফ্রিজি ভাব কমিয়ে দেয়। চুলের উপকারী পুষ্টি যেমন অ্যামিনো অ্যাসিড, প্রোটিন ও অন্যান্য খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ এই কেরাটিন চুলের সব সমস্যার ওয়ান স্টপ সলিউশন বললেই চলে। আর তাই এখন সালোঁ বা বিউটি পার্লারে রমরমিয়ে চলছে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট। আর এই কেরাটিন ট্রিটমেন্ট বেশ খরচাসাপেক্ষও বটে। তবে যাতে পকেটে টান না পড়ে আবার চুলের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য্য দুই বৃদ্ধি পায় এমনটা চাইলে বাড়িতেই সহজ উপায়ে চুল কে কেরাটিন ট্রিটমেন্ট দিতে পারেন এ ভাবে-
এই কেরাটিন ট্রিটমেন্টের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের তালিকা-
বিউলির ডাল (১ বাটি)
এক বাটি বিউলির ডাল নিয়ে দু বাটি জলে ভিজিয়ে দিন। অন্ততপক্ষে তিন ঘন্টা কিংবা আবার সারারাত ভিজিয়ে রাখতে পারেন। এই বিউলির ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা চুলের জন্য ভীষণ উপকারী। বিউলি ডালে থাকা উপাদান চুলের ভিতরে প্রবেশ করে ভঙ্গুর প্রবণ চুল কে সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে।
টক দই (বেশি পরিমানে ২ বার)
বিউলি ডাল হাতে নিয়ে দেখে নিন ঠিক কতটা নরম হয়েছে। যদি নখ দিয়ে চাপ ভেঙে যায় তা হলে ব্লেন্ডারে দিয়ে দিন। এবার এতে ২ বড় চামচ ভরে টক দই মেশান। চুল কতটা লম্বা সে অনুযায়ী দইয়ের মাত্রা কিছুটা বাড়াতে পারেন। এবার এই দুই উপকরণ ভাল করে ফেটিয়ে নিন। স্ক্যাল্পের সমস্যায় ভীষম কার্যকরী টক দই। বিশেষ করে খুসকি ও ফ্লেক্সের সমস্যায় ভীষণ কার্যকরী। পাশাপাশি টক দই চুল নরম ও মসৃণ করে।
অ্যালোভেরা জেল (২ চামচ )
একটি বাটিতে বিউলির ডাল ও টক দইয়ের মিশ্রণটি ব্লেন্ডার থেকে ঢেলে নিন। এবার পাত্রে দু চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে দিন। অ্যালোভেরা চুল বড় করতে সাহায্য করবে এবং চুল মজবুত করবে। মুহূর্তে চুলে আর্দ্রতার জোগান দিয়ে চুল নরম ও মসৃণ করে তুলবে।
ক্যাস্টর অয়েল (২ টেবিল চামচ)
এবার এই মিশ্রণে ২ টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে দিন। ক্যাস্টর অয়েল চুল দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করবে। ক্যাস্টর অয়েল একটু বেশি চিটচিটে তাই চাইলে আপনি আমন্ড অয়েল, নারকেল তেল কিংবা অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। এই উপকরণটি বাধ্যতামূলক নয় ঠিকই তবে ব্যবহার করলে চুলের টেক্সচার অনেকটাই ভাল করতে পারে।
কোকোনাট মিল্ক (১ চামচ)
সব শেষে এবার এই মিশ্রণে নারকেলের দুধ মিশিয়ে দিন। অন্ততপক্ষে এক চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে দিন তবে মিশ্রণ যদি খুব বেশি ঘনে হয়ে যায় তা হলে আরও বেশি করে নারকেল তেল ব্যবহার করতে পারেন। ময়শ্চারাইজার হিসেবে দারুণ কাজ করে নারকেলের দুধ। আবার ন্যাচারাল কন্ডিশনার হিসেবে এই কোকোনাট মিল্ক ভীষণ ভাল। চুল ভাল করতে ম্যাজিকের মত কাজ করে।
সব কটি উপকরণ ভাল ভাবে মিশিয়ে নেবেন যাতে কোথাও কোনও দানা বেঁধে না থাকে। মিশ্রণে দানা ভাব থাকলে আশানুরূপ ফল পাবেন না। আর এছাড়া চুলের গোড়ায় এই মিশ্রণ লাগাতে ভুলবেন না। ব্রাশ ব্যবহার করে চুলের ডগা থেকে গোড়া পর্যন্ত ভাল করে এই মিশ্রণ লাগিয়ে নিন।
সব শেষে প্লেন জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। প্রয়োজনে পরের দিন শ্যাম্পু করে নিন।