মেকআপ ও রূপচর্চা নিয়ে আজকাল আমরা সবাই যথেষ্ট সচেতন। তাই ত্বকের পরিচর্যায় টোনার(toner) ঠিক কতটা গুরুত্ব তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ক্লেনজার (cleanser), এক্সফোলিয়েটার (exfoliator) ও ময়শ্চারাইাজরের(moisturiser) ভিড়ে টোনারের (toner) গুরুত্ব ঢাকা পড়ে যায় ঠিকই, কিন্তু ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ হোক কিংবা রোমকূপের মুখ ছোট রাখা, এবং মুখের ধুলো, ময়লা ও মেকআপের অবশেষ ভাল করে পরিষ্কার করতে টোনারের সত্যি জবাব নেই।
তাই বিউটি ওয়ার্ল্ডেও (beauty world) নামী-দামি ব্র্যান্ডের টোনারের (toner) অভাব নেই। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এগুলি তৈরি করতে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তা আপনার ত্বকের সঙ্গে মানানসই হয় না। যেমন ব্যবহারের পরে ত্বকে জ্বালা ভাব থাকা। কিংবা অ্যালার্জি হওয়া। তাই যে জিনিসটা আপনি সহজেই বাড়িতে তৈরি করে নিতে পারেন তার জন্য অকারণে পকেট পুড়িয়ে লাভ কী? বরং প্রাকৃতিক উপকরণের ব্যবহারে ত্বকও ভাল থাকবে আবার পকেটেও টান পড়বে না। তাই বাজারের নামী-দামি ব্র্যান্ডের পিছনে না ছুটে ঘরেই ব্যবহার করুন এগুলি-
গোলাপ জল (Rose Water)
মুখে সুন্দর একটা আভা এনে দয় গোলাপ জল
টোনার হিসেবে গোলাপ জলের জবাব নেই। খুব সহজেই পাওয়া যায় এটি। এবং টোনার হিসেবে ভীষণ ভাল কাজ করে। গোলাপ জলে বাড়তি কোনও উপকরণ মেশানোর প্রয়োজন নেই। মুখের ধুলো ময়লা, মেকআপ পরিষ্কার করে সহজেই। পাশপাশি গোলাপ জল একটানা ব্যবহার করলে দেখবেন আপনার ত্বকে সুন্দর একটা আভাও তৈরি হয়।
ক্যামোমাইল ওয়াটার (Chamomile Water)
মেকআপ রিমুভার হিসেবে ক্যামোমাইল ভীষণ ভাল কাজ করে
এটা বাড়িতে খুব সহজে পাঁচ মিনিটেই বানিয়ে ফেলতে পারেন। জলে ক্যামোমাইল টি ব্যাগ চুবিয়ে রেখে দিন। পাঁচ মিনিট যথেষ্ট, আপনার টোনার রেডি! মেকআপ রিমুভার হিসেবে ক্যামোমাইল ভীষণ ভাল কাজ করে। ত্বক পরিষ্কারের, পাশাপাশি মেকআপের রাসায়নিকে ত্বকের কোনও জ্বালা বা সমস্যা হলে এই ক্যামোমাইল খুব ভাল কাজ করে। ত্বককে আরাম দেয়। এবং ক্যামোমাইলের মিষ্টি গন্ধ মন ভাল করে দেয়। সব মিলিয়ে দিনের শেষ এই ক্যামোমাইল ব্যবহার করলে মনপ্রাণ জুড়িয়ে যায়।
অ্যাপেল সিডার ভিনেগার (Apple Cider Vinegar)
অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে
এক কাপ গরম জলে এক টেবিল চামচ ভিনেগার গুলে নিন। এ বার এই মিশ্রণ ঠান্ডা হলে মুখে লাগিয়ে নিন। ধুলো, ময়লা ও ব্যাক্টেরিয়া সরিয়ে মুখ খুব ভাল ভাবে পরিষ্কার করে। এবং ত্বক জ্বালা বা চুলাকানির কোনও সমস্যা থাকলে এই মিশ্রণ খুব ভাল কাজ করে।
লেবু জল ( Lemon Water)
পাতিলেবুর রস মুখের দাগছোপ সারাতে বেশ কার্যকরী
এক কাপ জলে এক টেবিল চামচ পাতিলেবুর রস মিশিয়ে দিন। পাতিলেবুকে ভিটামিন সি-র খনি বললেই চলে। এই ভিটামিন সি থাকার ফলে পাতিলেবুর রস মুখের দাগছোপ সারাতে বেশ কার্যকরী। এ ছাড়াও মুখের অতিরিক্ত তেল পরিষ্কার করে। পাতিলেবুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল কার্যকারিতা রয়েছে তাই ব্রণ ও ফুসকুড়ির সারাতেও পাতিলেবুর এই রস ভীষণ কার্যকরী।
অ্যালোভেরার জল ( Aloevera Gel)
রূপচর্চার পরশপাথর এই অ্যালোভেরা জেল
এক কাপ জলে এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা মিশিয়ে নিন। ময়শ্চারাইজার করার আগে গোটা মুখে এই মিশ্রণ ভাল করে লাগিয়ে নিন। ব্রণপ্রবণ মুখে এই মিশ্রণ দারুণ ভাল কাজ করে। ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা জোগায়। আবার ত্বকের বাড়তি তেলের নিঃসরণ আটকায়। এই মিশ্রণ একটি স্প্রে বোতলে রেখে ত্বককে চাঙ্গা করে তুলতে আপনার প্রয়োজন মত ব্যবহার করুন।
এই প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি টোনারের যে কোনও একটি আপনি আপনার সুবিধে মতো বেছে নিতে পারেন। বাজার চলতি টোনারের বদলে এই টোনার ব্যবহার করলে
ছবি সৌজন্য: Pixabay