ত্বক ভাল রাখতে ফেসিয়াল কতটা কার্যকরী কিংবা আদৌও কি কার্যকরী? নাকি, দীর্ঘদিনের ফেসিয়ালের অভ্যাসে চামড়া ঝুলে যায়! বিউটি ওয়ার্ল্ডে যেমন রয়েছে নানা রকমের ফেসিয়াল পদ্ধতি তেমনই পাল্লা দিয়ে রয়েছে ফেসিয়াল করার উপকারিতা নিয়ে নানান বিতর্ক। তবে বিউটি এক্সপার্টরা জানাচ্ছেন মুখের ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে ফেসিয়াল যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।
ত্বকের জন্য ফেসিয়াল কীভাবে উপকারী
ফেসিয়ালে ত্বকের গভীরে পৌঁছে পরিষ্কার করা এবং ত্বকের মৃত কোষ সরিয়ে নতুন কোষ ত্বকের উপরের স্তরে নিয়ে আসা হয়। এর ফলে ত্বকের নমনীয়তা ও পেলবতা বেড়ে যায়। পাশাপাশি ত্বকের মৃত কোষ সরে যাওয়া সেখানে জীবাণু সমক্রমণের সম্ভাবনাও কমে যায়। ফলে ব্রণ কিংবা অকালে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে ত্বক বাচানো যায়। চামড়ার কুচকানো ভাব কম করে, দাগছোপ দূর করতে সাহায্য করে। নিত্যদিনের জীবনযাপনের স্ট্রেসের ছাপ মুখে পড়তে দেয় না।
বাড়িতে ফেসিয়াল করুন এইভাবে
কোভিড সংক্রমণের কারণে অনেকেই আজকাল রূপচর্চার অনেক কাজই বাড়িতে সেরে নেন। সেক্ষেত্রে আপনি চাইলে বাড়িতেই ফেসিয়াল করে নিতে পারেন তবে এক্ষেত্রে সালোঁ বা পার্লারের মতো ফেসিয়াল আরামদায়ক করে তুলতে এই বিষয়গুলো কাজে লাগাতে পারেন।
প্রথমেই বাড়িতে একটা মনোরম পরিবেশ তৈরি করুন। নিত্যদিনের ক্লান্তি, উদ্বেগ কম করতে থেরাপি হিসেবেও এই ফেসিয়াল দারুণ কার্যকরী। তাই যে ঘরটি আপনি ফেসিয়ালের জন্য ব্যবহার করছেন সেখাবে অ্যারোমা ক্যান্ডেল বা সুগন্ধি যুক্ত মোমবাতি ব্যবহার করুন। ইন্ডিয়ান সিনেমন, ফ্রেঞ্চ ল্যাভেন্ডার, টার্কিশ ভ্যানিলার মতো ফ্র্যাগরেন্স বাছতে পারেন। দারুণ অনুভুতি হবে। এছাড়াও আপনার পছন্দের আলাদা কোনও ফ্রেগরেন্স ব্যবহার করতে পারেন।
ফেসিয়ালের আগে মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নিন। ত্বক পরিষ্কার করার পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখা জরুরী। তাই অয়েল বেস্ড ক্লেনজার ব্যবহার করতে পারেন। এতে মেকআপ ও সিবাম দুটোই পরিষ্কার হবে। আরও ভাল হয় যদি রাইস ওয়াটার ফর্মুলা যুক্ত কোনও ক্লেনজার ব্যবহার করেন। এতে ত্বক নরম ও মসৃণ থাকবে।
এবার ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে পরিষ্কার করতে ব্যবহার করুন ওয়াটার বেস্ড ক্লেনজার। এতে বার ধোওয়ার পরেও ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হবে। এই ওয়াটার বেস্ড ফর্মুলার ফেস ওয়াশ কেনার সময় দেখে নিন এতে ভিটামিন সি রয়েছে কিনা। ভিটামিন সি ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে খুবই কার্যকরী।
এবার মুখে ভাপ দিয়ে নিন। সত্যি বলতে কি মুখে ভাপ না দিয়ে ফেসিয়াল করলে কাজ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। মুখে স্টিম দিলে ত্বকের রোমকূপগুলো খুলে যাবে এবং ত্বকের ওপরের স্তর অনেকটা নরম হয়ে যাবে। তবে সাধারণ স্টিমারের বদলে ন্যানো আইকনিক স্টিমার ব্যবহার করতে পারেন। এই আধুনিক স্টিমারে হিট প্রোটেকশন ও সেফ টাইমারের বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাশাপাশি এগুলো ত্বক অনুযায়ী তাপমাত্রা নির্ধারণ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা নষ্ট হতে দেয়। এই আধুনিক ফেসিয়াল স্টিমারের ব্যবহারে পকেটে টানও পড়বে না।
এরপর মুখে এক্সফোলিয়েট করে নিন। স্টিমের পর ত্বকের রোমকূপের মুখ বড় হয়ে যাওয়ায় ত্বকের ভীতরে ঢুকে জমে থাকা মৃত কোষ, রোমকূপের মুখে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করে। এ ক্ষেত্রে এমন ফর্মুলার স্ক্রাবার বা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করুন যা ত্বক পরিষ্কার করে ও ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে।
এবার পালা ফেস মাস্কের। এমন মাস্ক বাছুন যাতে প্রাকৃতিক উপকরণ যেমন ভিটামিন ই, শিয়া বাটার ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ যুক্ত ফেস মাস্ক ব্যবহার করুন। এতে ত্বক নরম থাকবে, ত্বকের স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
সব শেষে ময়শ্চারাইজার লাগাতে ভুলবেন না। এই গরমে লোশন বা ক্রিমের বদলে ওয়াটার জেল ফেস ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। এমন ময়শ্চারাইজার বাছুন যাতে হায়ালিউরোনিক অ্যাসিড, ভিটামিন ই-র মতো উপাদান থাকবে। এর ফলে ত্বকের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা দীর্ঘক্ষণ বজায় থাকবে।
(ছবি সৌ :Unsplash)