কলকাতা: দূষণ, ধুলো, রোদের কারণে চুলের (Hair) মারাত্মক ক্ষতিই হয়। চুল রুক্ষ হয়ে ওঠে এবং হেয়ার ফলও অনেকটাই বেড়ে যায়। বিশেষ করে যারা বড় চুল রাখতে পছন্দ করেন, তাঁরা সবচেয়ে বেশি এই সমস্যার সম্মুখীন হন। এই অবস্থায় অনেকেই চিকিৎসকের কাছে ছোটেন, নামী-দামি প্রসাধনী ব্যবহার করেন। কিন্তু, কিছুতেই সুরাহা মেলে না। তবে, চিন্তা নেই! নিয়মিত কয়েকটি যোগাসন করলেই চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। যোগা আমাদের শরীর ও মনের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে শেখায়। নিয়মিত যোগাভ্যাস শুধু আমাদের ভেতর থেকে সুস্থ ও সতেজ করে তোলে না, চেহরাতেও তার ছাপ পড়ে। জেনে নিন কোন কোন যোগাসন শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের সব রকম সমস্যার সমাধান করে।
শীর্ষাসন- শীর্ষাসন মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। নিয়মিত শীর্ষাসন করলে চুল পড়া কমে, চুল পুষ্টি পায়, নতুন চুল গজায়। এই আসন করতে হলে প্রথমে মাটিতে শুয়ে পড়ুন। তারপর দু-হাতের আঙুল জড়ো করে মাথার নীচে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে গোটা শরীর উপর দিকে সোজা করে তুলে দিল। গভীর ভাবে শ্বাস নিতে নিতে এই অবস্থায় ৩০-৬০ সেকেন্ড থাকুন। তারপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। এই আসন শরীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত এই আসনটি করলে চুল পড়ার সমস্যা দূর হবে।
বজ্রাসন- এই আসনটি করতে প্রথমে কোনও সমতল জায়গায় পিছন দিকে হাঁটু মুড়ে বসুন। এবার হাঁটু দুটি একে অপরের সঙ্গে জুড়ে পায়ের গোড়ালির উপর বসুন। দুহাতের তালু হাঁটুর উপরে সোজা করে রাখুন। পুরো শরীর টানটান রেখে ৩-৪ মিনিট এই অবস্থায় বসুন। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখুন। কিছু ক্ষণ পর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসুন। প্রতিদিন সকালে অথবা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এই আসনটি করতে পারেন। পেটের যে কোনও রকম সমস্যা সমাধানের অব্যর্থ দাওয়াই এই আসন। পেট পরিষ্কার থাকলে চুল পড়াও বন্ধ হবে।
শশঙ্গাসন- বজ্রাসনের ভঙ্গিতে বসে হাতের বুড়ো আঙুল বাইরের দিকে রেখে দু-হাত দিয়ে দু-পায়ের গোড়ালি ধরুন। সামনের দিকে ঝুঁকে মাথার তালু হাঁটুর সামনে মাটিতে রাখুন যাতে কপাল হাঁটুতে ঠেকে থাকে। ডিগবাজি খাওয়ার ভঙ্গিতে নিতম্ব ওপর দিকে তুলুন। স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে নিতে ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত এই অবস্থায় থাকুন। এর ফলে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও চুলের গোড়া শক্তপোক্ত হয়।
অধো মুখাসন- এই আসন করলেও স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ও চুল সঠিক পুষ্টি পায়। এই আসন করার জন্য দু-হাত সামনে ছড়িয়ে দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ুন। এরপর নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে কোমর থেকে শরীর উঁচু করে দিন, যাতে শুধু আপনার পায়ের পাতা ও হাতের তালু মাটিতে স্পর্শ করে থাকে। গভীর শ্বাস নিতে নিতে ৩০ সেকেন্ড এই ভাবে থাকুন।
উত্তনাসন- কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পেটের নানা সমস্যা দূর করে উত্তনাসন। মানসিক অবসাদ কমায় এই আসন। স্ট্রেস কমার ফলে চুল ঝরাও কমে যায় অনেকটাই। কারণ চুল পড়ার একটা বড় কারণ হল স্ট্রেস। এই আসন করার জন্য সোজা হয়ে দাঁড়ান। দুটি পায়ের মধ্যে এক ইঞ্চির মতো ফাঁক রাখুন। হাঁটু না ভেঙে কোমর থেকে গোটা শরীরকে নীচে ঝুঁকিয়ে দিন। দুটো হাঁটুকে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে পারবেন, এরকম ভাবে শরীরটাকে নিচে ঝুঁকিয়ে দিন। হ্যামস্ট্রিং-য়ে টান না লাগা পর্যন্ত এ ভাবেই থাকুন।