পঞ্জাব-হরিয়ানা তো বটেই বাকি দেশের কৃষকেরাও এককাট্টা থেকেছেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত পিছু হটেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। তিন কৃষি আইন সংসদের অধিবেশনে প্রত্যাহার করার কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের যে অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডল সেখানে কী বলা হল? প্রধানমন্ত্রীই বা কী বললেন জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণে? এর খানিকটা ডি-কোড করেছে কলকাতা টিভির ডিজিটাল টিম।
‘আজ আমি আপনাদের, গোটা দেশকে এটাই বলতে এসেছি যে, আমরা (সরকার) তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই মাসের শেষে সংসদের অধিবেশনে এই তিন কৃষি আইন রিপিল (বাতিল) করার সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে।’ আইন প্রত্যাহার করা নিয়ে এটাই প্রধানমন্ত্রীর কোট আন কোট বক্তব্য। অর্থাৎ রাষ্ট্রপতির সই হয়ে একবার আইন হয়ে যাওয়ার পর এ বার সেই আইনকে বাতিল করার সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আইন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজপথে কৃষকরা
এ দিনও প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বোঝানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন কেন্দ্রের সরকার, বিজেপি সরকার কৃষকদের স্বার্থেই এই আইন তৈরি করে। ‘কৃষকদের কল্যাণে বিশেষ করে ছোট চাষি এবং কৃষিজীবীদের এগিয়ে চলার জন্যই এই আইন তৈরি হয়’, ভাষণে আগাগোড়া এটাই বোঝাতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তো কৃষকদের স্বার্থেই যখন আইন তৈরি, তাকে কেন হঠাৎ করে শীতকালীন অধিবেশন শুরুর ঠিক মুখে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে হল? তাও আবার এমন দিনে যেদিনটা শিখ সম্প্রদায় মানুষের অসম্ভব পবিত্র এবং আনন্দের?
প্রধানমন্ত্রীর মন্ত্রিসভা বা দলের সহযোদ্ধাদের যে বক্তব্য তাকেও এক বার ফিরে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্র। যাঁর ছেলে আশিস মিশ্রের বিরুদ্ধে লখিমপুর-খেরিতে গাড়ি চাপা দিয়ে কৃষকদের হত্যা এবং গুলি চালানোর ঘটনায় মামলা চলছে। সেই মন্ত্রী কী বলেছিলেন? বিক্ষোভকারীদের বলেছিলেন, ‘আমার মুখোমুখি হোন, আপনাদের দু’মিনিটের মধ্যে সবক শিখিয়ে দেব।” বিজেপি আইটি সেলের মাথা, অমিত মালব্য, তিনি কী বলেছিলেন? কোনও রকম তথ্য প্রমাণ ছাড়াই দাবি করেন, বিক্ষোভকারী কৃষকদের সঙ্গে খালিস্তানপন্থী এবং মাওবাদীদের যোগাযোগ রয়েছে। দুষ্যন্ত কুমার গৌতম। আর এক বিজেপি নেতা দাবি করেন, ‘কৃষি আইন তো গোটা দেশের, তা হলে কেন শুধু পঞ্জাবেই বিক্ষোভ? বিক্ষোভকারীরা খালিস্তান জিন্দাবাদ, পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিচ্ছেন, এটা আবার বিক্ষোভ নাকি?’
आज मैं आपको, पूरे देश को, ये बताने आया हूं कि हमने तीनों कृषि कानूनों को वापस लेने का निर्णय लिया है।
इस महीने के अंत में शुरू होने जा रहे संसद सत्र में, हम इन तीनों कृषि कानूनों को Repeal करने की संवैधानिक प्रक्रिया को पूरा कर देंगे: PM @narendramodi
— PMO India (@PMOIndia) November 19, 2021
কৃষক আন্দোলন নিয়ে এটাই ছিল বিজেপি নেতৃত্বের মনোভাব। বিশ্বাসও। তাই এ দিনও প্রধানমন্ত্রীকে বারবারই কৃষি আইনের সমর্থনে বলতে শোনা গিয়েছে। ‘এটা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ যে, কৃষি আইনের সুবিধা গুলো কৃষকদের বুঝিয়ে বলতে পারিনি।’ প্রধানমন্ত্রীর এ দিনের ভাষণের এটাও একটা মনে রাখার মত কথা। অর্থাৎ আইন যা তৈরি হয়েছে, তা কৃষকদের উন্নয়নের জন্যই। শুধু কেন্দ্র তা বোঝাতে ব্যর্থ বলেই বাতিল করার সিদ্ধান্ত।