কলকাতা: আচ্ছা, ধরুন আপনি বিরিয়ানি (Biriyani) খেতে ভালবাসেন। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এরকম সময় চোখে পড়ল বিরিয়ানির লাল হাঁড়ি (Biriyani Red Handi)! আপনি কি এড়িয়ে যেতে পারবেন? অনেকে বলবেন, কোনওভাবেই সম্ভব নয়! আবার অনেকে স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বলবেন, নিরুপায় হয়ে এড়িয়ে যেতে হল। কি তাই তো?
আসলে যত সময় এগিয়ে চলেছে বাঙালির বিরিয়ানির প্রতি ভালবাসা (Biriyani love for Bengalis) বা প্রেম আপনি যেটা খুশি বলতেই পারেন, সেটা বেড়েই চলেছে। ইদানিং বিরিয়ানি বাঙালির খাবারের পছন্দের তালিকায় এতটাই বলিষ্ঠভাবে জাঁকিয়ে বসেছে যে দু’পা এগোলেই রাস্তার অলিতে-গলিতে লাল কাপড়ে মোড়া হাঁড়ি আপনি অবশ্যই দেখেত পাবেন।
বিরিয়ানি নিয়ে লিখতে শুরু করলে লেখা শেষ হয় না! কত কথা আর গল্পই না লেখা হয়ে যায়। আপনারও নিশ্চয়ই মনে হচ্ছে, কত খাওয়া-দাওয়া, কত আড্ডাই না হয়েছে এই বিরিয়ানির প্লেট হাতে! তবে আজকের আলোচনা একবারে অন্য একটা বিষয় নিয়ে। যে প্রশ্ন আপনার মনেও নিশ্চয়ই কখনও না কখনও এসেছে। সেটা হল, বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল কাপড় কেন জড়ানো থাকে? আজ সে নিয়েই আলোচনা করা যাক।
আরও পড়ুন: Talk on Facts | দুর্নীতি থেকে ক্রিকেট, সেই সঙ্গে বিরিয়ানির রহস্য উন্মোচন (13.03.2023)
সাল ১৮৫৬, ৬ মে! কলকাতায় পৌঁছলেন নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ (Wajid Ali Shah)। এরপর জীবনের শেষ ৩০ বছর কাটিয়েছেন কলকাতাতেই। কথিত আছে, এই ওয়াজিদ আলির জন্যই কলকাতা (Kolkata) নাকি বিরিয়ানির সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। কলকাতায় প্রথম বিরিয়ানি খেয়েছিলেন লখনউয়ের (Lucknow) নবাব ওয়াজিদ আলি শাহই। অনেকে বলেন, ওয়াজিদ আলি শাহই নাকি বিরিয়ানিতে আলুর প্রচলনও করেছিলেন।
ইতিহাসের ব্যাখ্যা থেকে জানা যায়, সম্রাট হুমায়ুনের খাদ্য পরিবেশনে ‘দরবারি রীতি’ অনুযায়ী, রুপোলি পাত্রের খাবারগুলির জন্য লাল কাপড় আর অন্য ধাতব বা চিনামাটির পাত্রগুলিকে সাদা কাপড়ে ঢেকে নিয়ে আসা হত। পরবর্তীকালে মুঘল দরবারেও এই রীতি অনুসরণ করা হয়। খাদ্য পরিবেশনের এই রীতি ও রঙের ব্যবহার লখনউয়ের নবাবরাও অনুসরণ করতেন। সেই থেকেই বিরিয়ানির পাত্র বা হাঁড়ি লাল কাপড়ে ঢেকে রাখার রীতি চলে আসছে।
তবে নানা মুনির নানা মত! অনেকেই মনে করেন, ইতিহাস বা ঐতিহ্যের রীতি মেনে নয়, ব্যবসার খাতিরে ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই বিরিয়ানির পাত্র লাল কাপড়ে মুড়ে রাখা হয়। লাল রং দূর থেকেই ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে।
সে যাই হোক, ইতিহাস যাই বলুক, এই লেখা পড়ার পর কি আপনার মনে হচ্ছে না একটু বিরিয়ানি খেতে? কারণ, যাই হয়ে যাক না কেন, বিরিয়ানি ইজ লাভ (Biriyani is Love)!