শেষ তিন বছরে ব্রিটেনে দুজন প্রধানমন্ত্রী, দুজন অর্থমন্ত্রী এবং দুজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে এসেছেন এবং ইস্তফা দিয়েছেন। দেশটির শাসনতন্ত্রে এত ডামাডোল এর আগে দেখা যায়নি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেত্রী এলিজাবেথ ট্রাস। তাঁর অর্থনৈতিক সংস্কার ‘মিনি বাজেট’ একেবারে মুখ থুবড়ে পড়েছিল। তার দায় নিয়েই পদত্যাগ। এখন প্রশ্ন, ট্রাসের উত্তরসূরি কে হবেন?
যাঁকে হারিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন লিজ ট্রাস, সেই ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনকই সবথেকে জোরাল দাবিদার বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে গেলে ন্যূনতম ১০০ জন সাংসদের সমর্থন প্রয়োজন। সূত্রের দাবি, সেই সমর্থন সুনকের রয়েছে, তিনিই সম্ভবত ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
কনজারভেটিভ পার্টির নিয়মনীতি নির্ণায়ক কমিটির চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্র্যাডি জানিয়ে দিয়েছেন, ৩১ অক্টোবরের আর্থিক বিবৃতির আগেই নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে দেওয়া হবে। বরিস জনসনের আমলে সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে ক্ষমতায় এসেছিল কনজারভেটিভরা। হেরে যাওয়া লেবার পার্টি অনেকদিন ধরেই দাবি করছে, ফের সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হোক। তবে তা একমাত্র হতে পারে যদি শাসকদল সরকার গড়তে না পারে। কিন্তু তেমন পরিস্থিতিতে নেই ব্রিটেনের শাসকদল।
আরও পড়ুন: Chinese Spy Arrested: চিনা গুপ্তচর ‘বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী’ গ্রেফতার দিল্লিতে
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়াটা ঠিক কী?
প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে আগামী সোমবার দুপুর দুটোর মধ্যে মনোনয়ন জমা দিতে হবে। যে কোনও প্রার্থীর প্রয়োজন ন্যূনতম ১০০ সাংসদের সমর্থন। সংসদে কনজারভেটিভ পার্টির সদস্য সংখ্যা ৩৫৭, ফলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে সব থেকে বেশি তিন জন।
২৪ অক্টোবর দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে প্রথম দফায় ভোট দেবেন সাংসদরা। সেদিনই সন্ধে ছ’টায় ফলাফল জানানো হবে। যদি তাতে ফলাফল পরিষ্কার না হয় তবে সাড়ে ছ’টায় আরও একবার ভোটাভুটি হবে। তাতে শেষ দু’জনের মধ্যে কে এগিয়ে তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এর আগের নির্বাচনে ট্রাস, সুনকের পর তৃতীয় হয়েছিলেন পেনি মরডান্ট। এবার তিনি দ্বিতীয় স্থানে চলে আসতে পারেন। প্রথম স্থানে অবশ্যই ঋষি সুনাক। তৃতীয় প্রার্থী হতে পারেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। পার্লামেন্টে এখনও একাংশের সমর্থন আছে তাঁর প্রতি। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ছুটি কাটাচ্ছিলেন তিনি। লিজ ট্রাসের পদত্যাগের খবরে দেশে ফেরার বিমান ধরেছেন। তবে এবার পাল্লা ভারী সুনকেরই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ব্রিটেনের মসনদে বসতে চলেছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত।