কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: আর পাঁচটা জঙ্গির মতো দারিদ্র নিয়ে বস্তিঘরে জন্ম হয়নি আল কায়েদা প্রধান আয়মান জাওয়াহিরির। কায়রোর সম্ভ্রান্ত বংশে জন্ম ১৯৫১ সালে। তাঁর ঠাকুর্দা ছিলেন মুসলিমদের পুণ্যক্ষেত্র আল আজহারের প্রধান ইমাম। কায়রোর সম্ভ্রান্ত এলাকায় বড় হয়েছিলেন তিনি। জাওয়াহিরি নিজে ছিলেন চোখের সার্জন। তেমনই তাঁর বাবাও ছিলেন ফার্মাকোলজির অধ্যাপক। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইসলামি কট্টরপন্থী আদর্শে অনুপ্রাণিত হন তিনি।
১৯৬৬ সালে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড হওয়া মিশরীয় লেখক সইদ কুতবের লেখা পড়েই গোঁড়া ইসলামি মনোভাবাপন্ন হন জাওয়াহিরি। সাতের দশকে তাঁর সঙ্গে কায়রোর মেডিক্যাল কলেজে পড়া সহপাঠীরা জানান, সে সময় জাওয়াহিরি এক প্রাণবন্ত যুবক ছিল। সে সিনেমা দেখতে যেত, গানবাজনা শুনত। বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে হাসিমশকরা করত। তাঁর এক ডাক্তার বন্ধু বলেন, কিন্তু সেই ছেলেটাই যখন জেল থেকে বেরিয়ে এল, তখন সে যেন এক অন্য মানুষ। আদালতের লকআপ থেকেই জাওয়াহিরি সাংবাদিকদের বলেন, জেলের ভিতরে জেহাদিদের উপর নির্মম অত্যাচার চলছে। তাদের রোজ নিয়ম করে চাবকানো হয়। এমনকী পাগলা কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয় গারদের ভিতরে। ওরা আমাদের স্ত্রী, পুত্র, মা-বাবাকে গ্রেফতার করে মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছে, অভিযোগ জানান জাওয়াহিরি।
আরও পড়ুন: Ayman al-Zawahiri killed: জাওয়াহিরিকে খতমে কি ফের ‘নিনজা বম্ব’ প্রয়োগ আমেরিকার?
বেআইনি অস্ত্র রাখার অপরাধে তাঁর ৩ বছরের জেল হয় মিশরে। জেল থেকে ছাড়া পেয়েই জাওয়াহিরি চলে আসেন পাকিস্তান-আফগান সীমান্তের এক জায়গায়। চোখের শল্য চিকিৎসক ডাক্তার হিসেবে জাওয়াহিরি পাকিস্তানে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের জখম বিদ্রোহীদের চিকিৎসার কাজে নেমে পড়েন। সে সময় সোভিয়েতের কবজায় থাকা আফগানিস্তানে মার্কিন সাহায্যে ব্যাপক লড়াই চলছে। ইসলামি মুজাহিদিন গেরিলাদের চিকিৎসা করার সময়ই তিনি ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে পরিচিত হন। বিপুল ধনসম্পত্তির মালিক ওসামা আফগান বিদ্রোহীদের মদত করছিলেন। তারপর লাদেনের সঙ্গেই জোট বেঁধে গড়ে তোলেন আল কায়েদা জঙ্গি সংগঠন।