করোনা (Corona) ভয়াবহতা এখনও দূর হয়নি, নিয়ন্ত্রণে অবশ্যই এসেছে। কিন্তু সেই সময়েই মাথা চাড়া দিয়েছে আরেক ছোঁয়াচে রোগ (Contagious Disease)। হাম অর্থাৎ মিজলস (Measles), আচমকাই তার প্রাদুর্ভাব (Outbreak) দেখা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (World Health Organisation – WHO) এই নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। হু সতর্কবার্তা দিয়েছে, এই রোগ এতটাই ছোঁয়াচে যে একজন হাম আক্রান্ত ব্যক্তির থেকে ১২ থেকে ১৮ জন সংক্রমণিত হয়ে যেতে পারে। এদিকে শীতের মরসুম। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাস্থ্য সংস্থা (UN Health Agency) হু বলছে পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপের দিকে। গত বছরও নাকি এই সময় একই রকম মারাত্মক আকার নিয়েছিল এই ভাইরাসের প্রকোপ।
সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত তথ্যে হু জানিয়েছে, ২০২১ সালে সারা বিশ্বে আনুমানিক ৯০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং ১,২৮,০০০ জন মারা গিয়েছে এই মারণ ভাইরাসে (Deadly Virus)। বাইশটি দেশ সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে হামের প্রাদুর্ভাবে। আর তার সবচেয়ে বড় কারণ হলো টিকাকরণের (Vaccination) অভাব এবং প্রকোপের মূল কারণে নজরদারির ঢিলেমি। কারণ গোটা দুনিয়া করোনার সঙ্গে লড়াই করতে ব্যস্ত ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৪ কোটি বাচ্চা মিজলস ভ্যাকসিন ডোজ পায়নি। এর মধ্যে আড়াই কোটি শিশু প্রথম ডোজ পায়নি (First Dose) এবং ১ কোটি ৪৭ লক্ষ বাচ্চা দ্বিতীয় ডোজ (Second Dose) পায়নি।
In 2021, 2️⃣2️⃣ countries around the globe experienced large and disruptive outbreaks.
This led to over 9 million estimated #measles cases, and 128 000 deaths.
? https://t.co/zw2PuZQB8u pic.twitter.com/yr6pH1fDTY
— World Health Organization (WHO) (@WHO) November 25, 2022
আরও পড়ুন: Weather: ফের পতন পারদের, আগামী সপ্তাহ থেকেই কী জাঁকিয়ে শীত, জেনে নিন
হু-এর ডিরেক্টর জেনারেল ডক্টর টেড্রোস আধানোম ঘেব্রেয়েসাস (WHO Director-General Dr Tedros Adhanom Ghebreyesus) বলেছেন, করোনা প্যানডেমিকের (Corona Pandemic) বিরুদ্ধে লড়াইতে রেকর্ড সময়ে ভ্যাকসিন তৈরি করেছে ভ্যাকসিন নির্মাতা কোম্পানিগুলি, তাতে মিজলসের মতো অন্যান্য ক্ষতিকারক রোগের ভ্যাকসিন তৈরিতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার জন্য কোটি কোটি শিশু ভ্যাকসিন (Vaccine) পায়নি। তিনি আরও বলেছেন, টিকাকরণ কর্মসূচিকে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এই রোগ প্রতিরোধযোগ্য (Preventable), পরিসংখ্যানে (Statistics) উল্লেখিত প্রতিটি শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে, তাই টিকাকরণ জরুরি।
Nearly 4⃣0⃣ million children missed a measles vaccine dose in 2021.
? According to the latest data from WHO & @CDCgov, global progress toward #measles elimination is threatened by major setbacks that started in 2020 during the #COVID19 pandemic.
? https://t.co/zw2Pv08c02 pic.twitter.com/ZSoulTYHuo
— World Health Organization (WHO) (@WHO) November 25, 2022
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য আরও বলছে, ২০০৮-এর পর থেকে এটাই সর্বনিম্ন টিকাকরণের কাজ। মিজলস বা হাম অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ, কিন্তু ভ্যাকসিনের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে প্রতিরোধযোগ্য। হামকে চিরতরে দূর করতে হলে ৯৫ শতাংশ টিকাকরণ কিংবা ২টি ডোজ সম্পূর্ণ করা জরুরি। কিন্তু করোনাকালে বিশ্বের ৮১ শতাংশ শিশু মিজলসের প্রথম ডোজ পেয়েছে এবং ৭১ শতাংশ শিশু তাদের দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, করোনা টিকাকরণের জেরে ১৮টি দেশে ৬ কোটি ১০ লক্ষ শিশু ও বাচ্চার মিজলস ভ্যাকসিনে দেরি হয়েছে কিংবা পায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, হামের প্রাদুর্ভাব গোটা বিশ্বে বৃদ্ধি পেয়েছে। সময় এসে গিয়েছে টিকাকরণ কর্মসূচি এবং নজরদারিতে ফের জোর দেওয়ায়। তবেই আবার নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে ছোঁয়াচে এই মারণরোগকে।