Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
ঘোষাল নামা (Ghosal Nama) | নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের সাফল্যের রহস্য কী?
জয়ন্ত ঘোষাল Published By:  অর্পণ ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ৪ জুন, ২০২৩, ০২:৪৯:৫৮ পিএম
  • / ৩২৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • অর্পণ ঘোষ

কলকাতা: এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল (Higher secondary Result) প্রকাশের পর আলোচনা শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) শিক্ষার (Education) মানের সার্বিক উন্নতি হচ্ছে না অবনতি? পাশের হার গতবারের তুলনায় কম হয়েছে। মেধার বিচারেও সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু গড়পড়তা পাস করার হার এখনও যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। এখনও গ্রামের ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার ফলাফল ভালো। করোনার সময় পরীক্ষা নেওয়া এবং পরীক্ষা দেওয়া দুই ক্ষেত্রেই অনেক অসুবিধা এবং জটিলতা ছিল। সঠিক মূল্যায়ন অনেক ক্ষেত্রে হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছিল। কেননা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা হয়েছিল। যদি নিজস্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা দেওয়াটা দস্তুর হতো তাহলে তো অন্য স্কুলে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার প্রথাটারই প্রয়োজনীয়তা ছিল না। এই বছর আবার স্বাভাবিক ছন্দে পরীক্ষার পদ্ধতি ফিরে আসায় পরীক্ষার ফলাফল অনেক বেশি বাস্তবানুগ বলে অনেকে মনে করছেন।

আর এই রকম একটা আলোচনার প্রেক্ষিতে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের (Narendrapur Ramkrishna Mission) ফলাফল উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো। নরেন্দ্রপুরের শুধু প্রথম হওয়াটা নজরকাড়া নয়। একসঙ্গে এতগুলো ছেলের মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা এবং যতজন পরীক্ষা দিয়েছেন তাদের সকলের গড়পড়তা ভালো ফলাফল নিশ্চয়ই বিশ্লেষণের দাবি রাখে। নরেন্দ্রপুরে এটা কেন এবং কীভাবে সম্ভব হচ্ছে? এ কথা সত্যি যে নরেন্দ্রপুরের নতুন যে প্রধান শিক্ষক এসেছেন তিনি যুবক সন্ন্যাসী। সেই সন্দীপন মহারাজের আগ্রহ, ছাত্রদের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কথোপকথন এবং সমস্যার গভীরে গিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা একটা নতুন হাওয়া নিঃসন্দেহে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে এনেছেন। এটা যেমন সত্যি তেমনি নরেন্দ্রপুরের কিন্তু কখনই খারাপ ফল হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়নি। সব সময়ই যে প্রথম স্থান হতে হবে এমন কোনও মানে নেই। কিন্তু গড় ফলাফল শুধু নরেন্দ্রপুর নয় নরেন্দ্রপুরের পাশাপাশি পুরুলিয়া, রহড়া এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতেও সব সময় হয়ে থাকে। নরেন্দ্রপুর একটা মডেল। এই মডেলটা শিক্ষার ক্ষেত্রে সফল হচ্ছে এবং বারবার কেনো সফল হচ্ছে সে ব্যাপারে প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি কিছু কথা জানানোর প্রয়োজন অনুভব করছি। 

আমি নিজে নরেন্দ্রপুর থেকে ‘৭৭ সালে মাধ্যমিক দিয়েছিলাম। আমাদের সময় ১৯৭৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কিন্তু প্রথম হয়েছিল আমাদের ক্লাসমেট  দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এখন ডাকসাইটে রাজনৈতিক নেতা। তারও কিন্তু অর্থনীতি, স্ট্যাটিস্টিক এবং অংক এই ধরনের কম্বিনেশন ছিল। বাংলা আর ইংরেজির পাশাপাশি। সুতরাং এই যে এইবার প্রথম হওয়া ছাত্রটি তার বিষয়গুলোর যে কম্বিনেশন সেটা নরেন্দ্রপুরে যে আকস্মিকভাবে খুব নতুন তা কিন্তু নয়। অতীতেও এরকম পরীক্ষা নিরীক্ষা কখনও সখনও হয়েছে। কিন্তু সাধারণত ছাত্ররা এই পরীক্ষার খুব একটা সুযোগ পায় না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিভাবকেরা এই ধরনের এডভেঞ্চারে যাওয়ার পক্ষপাতী নন। নরেন্দ্রপুরে সেই সময়ও ছিল এখনও আছে।

আরও পড়ুন: হে বাঙালি তুমি কোথায়?

সময় বদলে যায়। সময়ের হাত ধরে আমাদের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গি, প্রজন্মের ভাষা এবং চাহিদাও বদলায়। আমরা যখন স্কুলে ভর্তি হয়েছিলাম সেই আবাসিক জীবন এবং আজকের আবাসিক জীবনের মাঝ খানে অনেক সময়ের দূরত্ব। আমরা যখন আবাসিক বিদ্যালয় থেকেছি তখন আমাদের ঘরে কোনও ফ্যান ছিল না। আমরা চারজন ছাত্র একসঙ্গে থাকতাম। গ্রীষ্মকালেও ফ্যান ছাড়া আমরা কাটিয়েছি। কৃচ্ছসাধন নয় কিন্তু অনেক কম  চাহিদা পূরণের মাধ্যমে জীবনযাত্রা নির্বাহ করতে শিখেছি। আমরা খুব দামি জামা কাপড় পরতাম না কিন্তু আমাদের নরেন্দ্রপুরে শেখানো হয়েছিল সব সময় পরিচ্ছন্ন জামা কাপড় পড়তে হবে, ইস্ত্রি করা থাকবে  জামা কাপড়। এমন কি স্কুলে যাওয়ার সময় জুতো পলিশ করা থাকবে। এমনকি প্রতিদিন দেখা হতো যে জুতোটা চকচক করছে কিনা। সেটা আমাদের নিজেদেরকেই করতে হতো। চুল যে একদম ভয়াবহ মিলিটারি ছাঁট দিতে হবে এমন নয়। কিন্তু চুলে ঢেউ খেলিয়ে স্টাইল করা এই সমস্ত সেই সময়ে একেবারেই পরিত্যাজ্য ছিল। এখন আর্থসামাজিক পরিবর্তন হয়েছে এবং মনে রাখতে হবে যে নরেন্দ্রপুরে যারা পড়ে তারা সবাই একই ইনকাম গ্রুপের নয়। মানে তাদের অভিভাবকেরা একই ইনকাম গ্রুপের নয়। তাদের মধ্যে ধনী পরিবারের ছেলেও আছে, আবার শহরের ছেলেও আছে, গ্রামের ছেলেও আছে, আবার নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলেও আছে। কিন্তু এখনও নরেন্দ্রপুর কিন্তু প্রবল চাপের মধ্যে থেকেও মোবাইল ফোনটা কোনওমতে দেয়নি। আমি জানি বহু অভিভাবকরা চাইছেন যে ছাত্রদের মোবাইল ফোন দেওয়া হোক। তাঁরা মোবাইল কিনে দিতে চান। তাঁরা তাঁদের পুত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন সহজে। যখন তখন ফোন করবেন বলবেন, কি রে! কি খেলি! কি পড়ছিস! কি করছিস! ইত্যাদি ইত্যাদি। আবার ছাত্ররাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে গোটা দুনিয়ায় কি হচ্ছে না হচ্ছে তার খোঁজ রাখবে,কেউ সিনেমা দেখবে, কেউ তাদের পছন্দের খেলা দেখবে, কেউ সিরিয়াল দেখবে, আর যে কি কি দেখবে তার নিয়ন্ত্রণ স্কুল কর্তৃপক্ষের হাতে থাকবে না। এটা নিয়ে অভিভাবকদের চাপের মধ্যে থেকেও সন্ন্যাসীরা রাজি হননি। রামকৃষ্ণ মিশনের বক্তব্য হচ্ছে যে, স্কুলে কম্পিউটার কক্ষ করে দেওয়া হয়েছে। প্রচুর কম্পিউটার আছে। ছাত্ররা কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং ইন্টারনেট ফেসিলিটি পাচ্ছে, গোটা দুনিয়ার সঙ্গে তারা নিজেদেরকে যুক্ত করছে। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। সেখানে তারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগও রাখতে পারছেন। তাই আবাসিক জীবনে কিন্তু ওই রাত্রিবেলায় ঘুমোনোর আগে মশারির মধ্যে মোবাইল চালিয়ে নানা রকমের whatsapp আর google খুলে নানা রকমের ইচ্ছাপূরণ সেটার প্রয়োজনীয়তা আছে বলে এখনও মনে করা হচ্ছে না। অনেক সময় নিয়ে ছেলেরা যে ওখানে পড়াশোনা করে তাও কিন্তু নয়। সকালে দু’ঘণ্টা রাত্রে দু’ঘণ্টা। আমাদের সময়ে তো স্টাডি হলে গিয়ে আমরা পড়তাম। সেখানে হোস্টেল ওয়ার্ডের পাশাপাশি একজন করে শিক্ষক তিনি স্টাডি হলে থাকতেন। যখন যা যা প্রয়োজন সেই শিক্ষককে বলতে পারতো। যদি সেই শিক্ষকের আয়ত্তে বিষয়টা না থাকে তাহলে সে পাশের ভবনে অন্য কোনও শিক্ষকের কাছে তাকে রেফার করে পাঠিয়ে দিত। আমরা অনেক সময় স্টাডির টাইমটা ফাঁকি মারার জন্য অন্য অনেক কিছু না বোঝার ভান করে অন্য ভবনে গিয়ে অন্য মাস্টারের কাছে একটু বুঝতে-টুঝতেও যেতাম। সে সমস্ত চিটিং করার প্রবণতা যে থাকতো না তা নয়। কিন্তু সব মিলিয়ে একটা অসাধারণ শিক্ষণ পদ্ধতি ছিল। রাত দশটায় লাইট অফ হয়ে যাবে। সব ঘরে অন্ধকার করে শুয়ে পড়তে হবে। পরীক্ষার আগেও কিন্তু রাত জেগে পড়ার কোনো ব্যাপার ছিল না। রাত জেগে পড়ার দরকারও হতো না। স্কুলে এতো ভালো পড়ানো হতো। আমাদের সময় তো স্কুলের সময়টা আরো বেশি পেতাম। কেননা আমরা ঘুম থেকে উঠে পি. টি. এবং প্রেয়ার করে জলখাবার খেয়ে স্কুলে চলে যেতাম। এত সকাল বেলা স্কুল শুরু হয়ে যেত যে আমরা দুপুরবেলা বারোটার মধ্যে আবার ঘরে এসে স্নান করে খাওয়া দাওয়া করে একটু জিরিয়ে আবার স্কুলে যেতাম। তারপর একদম সেই বিকেল পর্যন্ত স্কুল করতাম। আবার খেলার মাঠে চলে যেতাম।তারপরে আবার প্রেয়ার, তারপরে ডাইনিং হলে গিয়ে আমাদের একসাথে খাওয়া দাওয়া হইচই এবং তারপরে ঘরে ফিরে একটু আড্ডা, একটু লেখাপড়া যার যা ইচ্ছা করে আমরা দশটার সময় লাইট অফ করে দিতাম। সেই লাইটটা দশটার সময় অফ করছে কিনা তা জানার জন্য ছাত্রদের মধ্যেই কিছু দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হতো। একটা অসাধারণ শিক্ষণ পদ্ধতি আছে। এখন এই সারাক্ষণ ধরে বইয়ে মুখ দিয়ে পড়ে থাকতে হবে এমন নয়। অথচ ভালোভাবে সব কিছুরই পড়াশুনা হতো। একটা ডিসিপ্লিন কিন্তু ছিল ওখানে। পড়াশোনার মধ্যে ডিসিপ্লিনটা কিরকম! আমাদের মান্থলি টেস্ট হতো। আমাদের ব্যাচে ১৩০ জন ছিল। সেই ছাত্ররা কিন্তু একটা বিরাট বড় গরুর গোয়ালের মত ছিল না। পথের পাঁচালীর মত মাস্টারমশাইরা ওই স্টাইলে পড়ায়নি। ছোট ছোট হয়তো ২০/ ২৫ জনের একটা ক্লাসরুম সেখানে এ, বি, সি, ডি, ই পর্যন্ত ক্লাসের সেকশন সেখানে। হতো কি, অনেক বেশি শিক্ষক এবং ছাত্রদের যে অনুপাত সেটা অনেক বেশি ছিল। মানে শিক্ষকরা সব ছাত্রদেরই প্রায় নাম জানতেন। সেখানে কিন্তু প্রত্যেক মাসে আমাদের মান্থলি টেস্ট হতো। মান্থলিস্ট টেস্ট প্রচন্ড সিরিয়াসলি করা হতো। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপা হতো, গোপনীয়তা, সুরক্ষা বজায় রাখা হতো। তার রেজাল্ট বেরোনো এবং সেই রেজাল্ট এর একটা গড় আমাদের বার্ষিক পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত হতো। রীতিমতো টেনশনের ব্যাপার ছিল একটা। তো আমাদের কাছে কিন্তু তার ফলে যখন বার্ষিক পরীক্ষার সময় সব পড়াটা তৈরি করিয়েই দিতেন শিক্ষকেরা। যারা খুব ভালো ছাত্র তাদের জন্য স্পেশাল প্রশ্ন হতো, যাতে তারা আরো ভালো ফল করতে পারে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে। আবার যারা যেটাতে কমা ছিল তাদেরকে সেই বিষয়ের বিশেষ প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হতো। তো আমি অংকে কাঁচা ছিলাম বলে আমাকে অংকের মাস্টার মশাই আলাদা করে একটা বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছিল। আমাকে গিয়ে অংকটা শিখে আসতে হতো। আলাদা করে অর্থাৎ সেখানে কিন্তু স্পেশাল ট্রেনিং এর ব্যবস্থা ছিল।

আরও পড়ুন: দুর্নীতি খুব খারাপ কিন্তু ভোটে ইস্যু হয় না কেন?

তখনও মাধ্যমিকে সেকেন্ড ডিভিশনে পাস করেছে আমাদের মধ্যে কেউ সে প্রায় হয়নি। এখনও সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। আসলে একাগ্রতা পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। সেই একাগ্রতার জন্য আমাদের যেরকম জপ, ধ্যান, প্রার্থনা এটার একটা প্রভাব থাকে। আর একটা জিনিস হচ্ছে যে মেডিটেশন মানে কিন্তু শুধুমাত্র ঠাকুরের সামনে বসে জপ-ধ্যান করা নয়। মেডিটেশন হল আধুনিক মনস্তাত্ত্বিক অর্থে যে কোনো জিনিসকে মন দিয়ে করা। পড়াশোনা করেও একটা মানুষের সাংঘাতিক আগ্রহ গড়ে উঠতে পারে। একটা singleness of purpose গড়ে ওঠা। ফুটবল খেলতে যাওয়ার সময়ও কিন্তু একটা একাগ্রতার প্রয়োজন হয়। 

আমাদের নানান রকম ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে, নাটক করা, বক্তৃতা দেওয়া, ইনডোর গেম (টেবিল টেনিস, জিমন্যাস্টিক)  তাতে আমাদের বিভিন্ন খেলাধুলার মধ্যে দিয়ে জীবনী শক্তির যে প্রয়োগ এবং আমাদের অনেক স্ট্রেস বেরিয়ে যেত। তার ফলে আমরা খুব ফোকাসড ছিলাম। একটা জিনিস সংসারের যে গ্লানি এবং নানান রকম সংস্কার আমাদেরকে প্রভাবিত করে। বাড়ির সমস্ত  সংস্কার যে ভালো সে তো নয় ! শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা পড়ছিলাম যে, একটা ছেলে খারাপ গালাগাল কাউকে দিয়েছিল। তো সে বাবার কাছে এসে কমপ্লেন করেছে। বাবা জিজ্ঞেস করেছে যে হ্যাঁরে তুই এই খারাপ শব্দ টা শিখলি কোথা থেকে? বলে খুব বকাঝকা করেছে। ছেলেটি বলছে বাবা আমি তোমার কাছ থেকেই শিখেছি। কেননা তুমি নিজে সেদিন বাগানের মালিকে এই গালাগালটা দিচ্ছিলে, বলছিলে যে তুই এত সময় নিয়ে মাটি খুঁড়ছিস? বলে এই গালাগালটা দিয়েছিলে। সেরকম আমরা অনেক সময় নিজেদের অজান্তে আমাদের সন্তান কেও কুশিক্ষা দিয়ে ফেলি। সেইক্ষেত্রে নরেন্দ্রপুর কিন্তু একটা ফিল্টার ছিল। সেখানে কিন্তু আমাদেরকে সেই রকম ভাবে সচেতন করে তোলা হয়েছে যে এটা ভালো এবং এটা খারাপ। আমরা যে সবাই সেটার সদ্ব্যবহার করতে পেরেছি এবং সবাই যে গুনি হয়ে উঠতে পেরেছি তা হয়তো নয়। কিন্তু গড়পরতা ভালো রেজাল্ট করা এবং ভালো মানুষ হওয়ার যে একটা চেষ্টা সেটা কিন্তু নরেন্দ্রপুরের ছাত্ররা সেটা কিন্তু পায়। একটা সমস্যা হচ্ছে যে সবাই এখন আইআইটি কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে চায়। তার ফলে সাহিত্যকলা, দর্শন, রাজনীতি বিজ্ঞান এসব নিয়ে আগ্রহটা কমে গেছে। এমনকি আই এ এস পরীক্ষা দেওয়ার আগ্রহ কমে যাচ্ছে। সেই জন্য আজকাল মাস্টারমশাইরাও চেষ্টা করছেন যে সেখানেও যাতে আগ্রহ তৈরি হয়। আগে তো পলিটিকাল সাইন্স নরেন্দ্রপুরে উচ্চমাধ্যমিকে ছিলই না। সেটা চালু হয়েছে এখন পড়ানোও হচ্ছে। এমনকি মিডিয়া সাইন্স যাতে কলেজে পড়ানো হয় তার জন্য নানান রকমের সাজেশন আসছে। নরেন্দ্রপুরে আমি গিয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম একবার ছাত্রদের এসেম্বলি হলে একটা আলোচনা সভায়, তোমাদের মধ্যে কেউ সাংবাদিক হতে চাও? সেখানে পুরো ক্লাস মানে ৭ থেকে ১২ ক্লাস পর্যন্ত এত ছেলেদের মধ্যে বোধহয় দুটো ছেলে হাত তুলেছিল। বেশিরভাগ ছাত্রই কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় না হলে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ হতে চায়। এখন এই জায়গাটার একটা সমস্যা আছে। কেননা শুধুমাত্র সংস্কৃত পড়েও কিন্তু অনেক দূর পর্যন্ত এগুলো যেতে পারে, অনেক টাকা ও রোজগার করা যেতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এখন সংস্কৃত নিয়ে চর্চা হচ্ছে। আমিও অক্সফোর্ড এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগে গেছি। সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি একজন ইটালিয়ান অধ্যাপিকা তিনি সংস্কৃত পড়াচ্ছেন। সংস্কৃত সম্পর্কে তাঁর যে জ্ঞান এবং আগ্রহ সেটা অভূতপূর্ব। তাঁর মধ্যে অহংকার তো কোনো দেখতেই পেলাম না উল্টে তাঁর মধ্যে একটা প্রচন্ড down to earth মানসিকতা লক্ষ্য করেছিলাম। হিন্দি এবং সংস্কৃত দুটি বিষয়েই তাঁর গভীর জ্ঞান। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ঐরকম অনেকে রয়েছেন। তাঁরা কিন্তু যে সব সময় ভারতীয় হবেন তা নয়। নরেন্দ্রপুরের বিজ্ঞানের ছাত্রদেরও কিন্তু আমি লক্ষ্য করে দেখেছি বাংলা ব্যাকরণ এবং বাংলা ভাষা বাংলায় সেগুলো কিন্তু গড়পড়তা খুব ভালো। কেননা তারা সবাই বক্তৃতা দেওয়া, নাটক করা, বিতর্কে অংশ নেওয়া এই সবগুলোর প্রশিক্ষণ ছোটবেলা থেকেই প্রায় পেয়ে আসছে। নরেন্দ্রপুরে গান শেখানো হয়, তবলা বাজানো শেখানো হয় এইসব কারণে পূর্ণতার বিকাশ ঘটে। স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন যে, শিক্ষা অন্তরের যে পূর্ণতা তার বিকাশ। সেই পূর্ণতা বিকাশের চেষ্টা কিন্তু নরেন্দ্রপুরে হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল কেন ভালো হয় সেটা আরও গভীরে অনুসন্ধান করার একটা আগ্রহ কিন্তু এই সমাজ তৈরি করল। 

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬ ২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

শুক্রবারে ঘরে আনবেন না এইসব জিনিস
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
৩০০ বছরের বাসন্তী পুজো রাজপুরে
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
কিং খান কী বলে উদ্বুদ্ধ করলেন নাইট ক্রিকেটারদের?
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
শোভাযাত্রা করে সমর্থকদের নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারের
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
Stadium Bulletin | কেন প্রার্থনা হবে হার্দিক আর স্টার্কের জন্য?
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
আইপিএল থেকে ছিটকে গেলেন ধোনির দলের তারকা ক্রিকেটার!
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
জামিনঅযোগ্য ধারায় অগ্নিমিত্রা সহ ১৬ জনের নামে এফআইআর
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে বঞ্চিত শ্রমিকরা, ক্ষোভের মুখে তৃণমূল নেতা
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
শুভেন্দুর পর এবার মিঠুনকেও গদ্দার বললেন মমতা
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের রিপোর্ট পেল ইডি, সোমবার আদালতে পেশ?
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
মুসলিম মেয়েদের বিয়ে নিয়ে জনস্বার্থ মামলা খারিজ আদালতে
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
বেশি বেশি মিষ্টি খেয়ে জামিন পেতে চাইছেন কেজরিওয়াল, আদালতে দাবি ইডির
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
অসুস্থ মুকুল রায়, ভর্তি হাসপাতালে
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
আলিপুরদুয়ারের বক্সা পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় যেতে হাঁটা শুরু করলেন ভোট কর্মীরা
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয়বার লোকসভায় অংশ নেবেন, আশায় বুক বাঁধছেন ছিটমহলের বাসিন্দারা
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team