Placeholder canvas
কলকাতা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar | পাটনায় বিরোধী দলের বৈঠক কি অশ্বডিম্ব প্রসব করল?      
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  কৃশানু ঘোষ
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৬ জুন, ২০২৩, ১০:৩৫:৪০ পিএম
  • / ১৬৮ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • কৃশানু ঘোষ

প্রচুর আশা, প্রচুর আলোচনা, প্রচুর প্রচার ইত্যাদির পরে শেষ হল ২৩ জুনের বিরোধী দলের মিটিং। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর সিপিআই-এর ডি রাজা বলেছেন ১৭টা দলের বৈঠক, বাকি নেতারা বলেছেন ১৫ দলের বৈঠক। সে যাই হোক, বিরোধী বড় দলগুলোর বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই দাবি এবং টিটকিরির বন্যা বইছে। প্রতিটা স্তরের বিরোধী দলের নেতারা এ নিয়ে কথা বলছেন, কথা বলছেন বিজেপি এবং এনডিএ-র মধ্যে যে দল এখনও থেকে গেছে তাদের নেতারা, প্রত্যেকে তাঁদের মতামত দিচ্ছেন। এর থেকে বোঝা যায় যে এই বৈঠকের একটা প্রাসঙ্গিকতা আছে। বৈঠক সফল না বিফল, বৈঠক কতটা কার্যকর হবে এসব আলোচনার আগেই অন্তত এটা তো বলাই যায় যে বৈঠকের দিকে চোখ ছিল প্রত্যেকের। অমিত শাহ বলেছেন ফটো সেশন চলছে, হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন চোর এবং দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বৈঠক হচ্ছে, আমাদের রাজ্যের একদা সিপিএম, এখন বিজেপি নেতা বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, এখনও হাতে চে গ্যেভারার ট্যাটু আছে, তিনি প্রশ্ন করেছেন, কী কমরেড, লুকাচ্ছেন কেন? বৈঠকে তো মমতাও ছিলেন, গণশক্তির প্রথম পাতায় সেটা বাদ কেন? এদিকে তেজস্বী যাদব বলেছেন ঘণ্টা বজ গ্যয়া, অব খেল খতম। অন্তত এটা পরিষ্কার যে শাসক এবং বিরোধী দলের প্রত্যেকের কড়া নজর ছিল এই বৈঠকের উপরে। আসুন আমরাও সেই নজরদারির পরে যা বুঝেছি, তা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে নিই। 

প্রথমত, ২০১৪ বা তার পর থেকে এটা প্রথম জোটের বৈঠক, যেখানে এতগুলো দল হাজির থাকল। ৮ জন মুখ্যমন্ত্রী হাজির থাকলেন, একই মঞ্চে দেখা গেল রাহুল, কেজরিওয়াল, মমতা, ইয়েচুরিকে। ২০১৪-র নির্বাচনের সময় কী হয়েছিল? বাম দল তখন সমদূরত্বের নীতিতে বিশ্বাসী, মানে কংগ্রেস এবং বিজেপি থেকে সমদূরত্ব, আর হবে নাই বা কেন? রায়গঞ্জে সেলিম দীপা দাসমুন্সি মুখোমুখি। মমতা–কংগ্রেস আঁতাঁত শেষ হয়ে গেছে, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং কংগ্রেস একলা, শিবসেনা তখন বিজেপির সঙ্গে। এবারে চলুন ২০১৯, বাম তার সমদূরত্বের নীতি থেকে সরেছে, কিন্তু আঁতাঁত হয়নি। আঞ্চলিক দলগুলো মমতার নেতৃত্বেই কলকাতায় এসে হাত উঁচু করে ধরলেন বটে কিন্তু হাজির থাকলেন না রাহুল গান্ধী, আঞ্চলিক দল এবং কংগ্রেসের ঐক্য না হওয়ার ফলে ছিন্নভিন্ন বিরোধী। তখন নীতীশ বিজেপির সঙ্গী, শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে। কিন্তু তাতেও বিজেপি জিততে পারত না, একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না, সেই সময়ে পুলওয়ামা ঘটে গেল। মোদি কেবল হিন্দুত্ব নয়, হয়ে উঠলেন এক দেশপ্রেমিক মুখ, ৩৭ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩০৩টে আসন নিয়ে আবার বিজেপি ক্ষমতায়। এরপর আরও পাঁচ বছর কেটেছে, প্রতিটি মানুষের কাছে মূল্যবৃদ্ধি আরও বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বেকারত্বের এক রেকর্ড তৈরি হয়েছে, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও লক্ষণই নেই। রাজ্যে রাজ্যে অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, মণিপুর জ্বলছে, কাশ্মীরে চূড়ান্ত অস্থিরতা। 

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | অব কি বার ট্রাম্প সরকার      

২০১৯-এর থেকে বিজেপির ভোট বাড়বে? সম্ভব নয়, আর কেবল যাঁরা হাজির ছিলেন পাটনায়, তঁদের সম্মিলিত ভোট এখনই ৪৫ শতাংশের বেশি। তাহলে? হ্যাঁ, হিসেব বদলে যেতে পারে, কিন্তু এই ঐক্য যদি টগর বোষ্টমির নৌটঙ্কি হয়, তাহলে মানুষ ভরসা হারাবে, আস্থা হারাবে। মনে করবেই যে অমিত শাহ যা বলছেন, এটা ছিল একটা ফটো সেশন, তা সত্যি। এক পাল্টা রাজনৈতিক ন্যারেটিভ দিতে হবে, গণতন্ত্রের কথা, ফেডারেলিজমের কথা, গান্ধীর গ্রাম সুরাজের কথা, সংবিধান রক্ষার কথা, সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার কথা, সামাজিক ন্যায়ের কথা এসব তো বলতেই হবে, এসবের ভিত্তিতে জন আন্দোলন গড়ে তুলতেই হবে, কিন্তু কম সে কম ৪৫০ আসনে একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী ঘোষণার কথাটাও সমান জরুরি। বৈঠকে যাঁরা একসঙ্গে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে দেবেন বলে ঘোষণা দিলেন, তাঁদের মধ্যে ঐক্য দৃশ্যমান হতেই হবে। পৃথিবীর সবাই জানে যে এই মিটিংয়ে সিপিএম ছিল, তৃণমূলও ছিল। এদিকে গণশক্তির প্রথম পাতায় মমতার ছবি বাদ আর জাগো বাংলার প্রথম পাতায় ইয়েচুরির ছবি বাদ। এই টগর বোষ্টমিপনা বন্ধ করুন, এগুলো বিজেপিকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে। শঙ্কর ঘোষ ঠিক জায়গাটাতেই ঘা দিয়েছেন, যদি ঐক্যই করতে হয়, তাহলে সেই ঐক্যের ভিত্তি তো সবথকে প্রথমে একে অন্যের সঙ্গে সুসম্পর্ক। এবার ধরা গেল সুসম্পর্কই আছে, অন্তত এই বৈঠকে মমতা, সীতারাম ইয়েচুরিকে সীতারাম বলে সম্বোধন তো প্রকাশ্যেই করলেন, ইয়েচুরি তো বললেন উই আর ইউনাইটেড। তাহলে গ্রাসরুট লেভেলে বিজেপি আর তৃণমূল এক, তাদের মধ্যে গোপন আঁতাঁত আছে, বা সিপিএম আসলে বিজেপির বি টিম এসব কথা বলার মানে কী? এসব কথা কার সুবিধে করে দেবে? এদিন প্রেস কনফারেন্স-এ সব থেকে ছোট্ট করে এদিনের বৈঠকের প্রাপ্তি কিন্তু জানিয়েছেন ওই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সীতারাম ইয়েচুরি। মমতা বললেন, এক, আমরা ঐক্যবদ্ধ। দুই, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ব আর তিন, বিজেপি যে আক্রমণ নামিয়ে আনবে, আমরা তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়ব, চার, এরপরের বৈঠক সিমলাতে হবে।  ইয়েচুরি বললেন, আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক, ফেডারেল কাঠামোকেই বদলে দিয়ে হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় বিজেপি, এটা রোখার জন্যই আমরা এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। দুজনের বক্তব্য পরিষ্কার। তাহলে রাজ্যে এসে তৃণমূলকে বিজেপির দোসর বলা বা এ রাজ্যে তৃণমূল এবং বিজেপিকে একসঙ্গে হটাতে হবে এই কথা বলার মানে কী? যদি এটাই সীতারাম ইয়েচুরির বিশ্বাস তাহলে ওই বৈঠকে বসেই এই কথা বললেন না কেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পঞ্চায়েতের প্রচারে বেরিয়েছেন, নিশ্চয়ই বলবেন জগাই, মাধাই আর গদাইয়ের হাত মেলানোর কথা, যদি এটা উনি বিশ্বাসই করেন, তাহলে তা ওই মঞ্চেই বললেন না কেন? ফলে একটা ধোঁয়াশা তো মানুষের কাছে থেকেই যাচ্ছে। 

ওদিকে কেরালাতেও কংগ্রেস অল আউট লড়ছে সিপিএম-এর বিরুদ্ধে। মারপিট হচ্ছে, মাথা ফাটছে, একে অন্যকে চোর, খুনি বলেই চলেছেন, অথচ নাকি ঐক্যও হবে। ঠিক এইখানেই সবথেকে বড় সমস্যা। তাহলে কি এই বৈঠক এক অশ্বডিম্ব প্রসব করল? ঘোড়ায় ডিম পাড়ল? না তা নয়। এই একে অন্যকে জগাই মাধাই গদাই বলা বা স্বৈরাচারী, চোর, লুটেরা, খুনি বলা দলগুলো এক জায়গায় বসল। তাদের একে অন্যের চেয়ে যে বিজেপি আরও বড় শত্রু তা নিয়ে আলোচনা হল এবং তাঁরা একমত হলেন। এর আগে এমন ঐক্যের মিটিংয়ে হাজিরও কি হয়েছেন মমতা কেজরিওয়াল সীতারাম রাহুল? এবার হলেন। মুখ দেখতেন না একে অন্যের, সেই ওমর আবদুল্লা আর মেহেবুবা মুফতি এক জায়গায় বসলেন। এটা প্রাপ্তি। দ্বিতীয় প্রাপ্তি হল ঠিক আছে বসেছি, আর বসব না, এরকমও নয়। পরবর্তী বৈঠকও স্থির হয়ে গেল, ওনারা জুলাই এর ১০-১২ তারিখে আবার বসবেন। এবার আয়োজক কংগ্রেস, মিটিং ডাকলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তার মানে এই দিন কুড়ি ধরে দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক আলোচনা চলবে। তার মানে যা আমরা ১৪তে দেখিনি, ২০১৯-এও নয়, সেই বিরোধী ঐক্য কিন্তু একটা চেহারা নিচ্ছে। যতজন এসেছেন সব্বাই থাকবেন? যাঁরা আসেননি, তাঁরা আসবেন না? কোনওটাই জোর দিয়ে বলা যায় না। কিন্তু বিজেপি সঠিকভাবেই বিপদটা বুঝতে পেরেছে, আজ নয়, বহু আগে থেকেই বিজেপির মাথায় এ সত্য ঢুকে গেছে। এই ঐক্য প্রবল হয়ে উঠবে যদি মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় আর রাজস্থানে কংগ্রেস জেতে আর তেলঙ্গানায় বিআরএস, মানে কে চন্দ্রশেখর রাও ভালোভাবে জিতে যান, তাহলে তিনিও জোটমুখী হবেন। অন্ধ্রপ্রদেশের জগন রেড্ডিও জোটের দিকেই আসবেন, এক স্নোবল এফেক্ট তৈরি হবে, বিরোধী জোট আরও বড় হতে থাকবে। এবং এক এবং অদ্বিতীয় লালুপ্রসাদ যাদব, খুব হাসতে হাসতে এক্কেবারে সঠিক আর প্রয়োজনীয় কথাটা বলে ফেলেন, তিনিও মিটিংয়ের শেষে সাংবাদিকদের সামনে বলেই দিলেন, রাহুল এবার বিয়ে করে ফেলুন, আমরা সবাই বারাতি, মানে বরযাত্রী যাব। এই আলোচনার মধ্যমণি যে রাহুল গান্ধীই, সেটা সটান বলেই দিলেন, বর রাহুল গান্ধী, বরযাত্রী বাকি সবাই। এবার যার বিয়ে তার হুঁশ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই এমনটা তো হতে পারে না, তাই ওই রাহুল গান্ধীকেই এই দায়িত্ব কাঁধে নিতে হবে, অধীর ইত্যাদি অর্বাচীনদের সামলে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে দেশের বিরোধীদের। এক বড় সুযোগ এসেছে বিরোধীদের সামনে, অন্তত লড়ে যাওয়ার সুযোগ, এই ঐক্য যদি না হয়, তাহলে কোনও লড়াই ছাড়াই ফাঁকা মাঠ থাকবে বিজেপির জন্য। ইতিহাসে বারবার এমন সুযোগ আসে না, এই সুযোগের সদ্ব্যবহার বিরোধীদের কী দেবে জানি না কিন্তু দেশের মানুষকে সামান্য হলেও স্বস্তি দেবে। আমাদের দেশের মূল কাঠামো, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র আর ফেডারেল চরিত্র বজায় রাখার লড়াইটা বজায় থাকবে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬
১৭ ১৮ ১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩
২৪ ২৫২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

স্কুলে দুষ্টমির ‘শাসন’! বেধড়ক মারধর সপ্তম শ্রেণির ছাত্রকে
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
দিল্লিতে বার্ধক্য ভাতা নিয়ে বড় ঘোষণা কেজরিওয়ালের
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
পার্থে জিতে টেস্ট বিশ্বকাপ তালিকার শীর্ষে পৌঁছে গেল ভারত
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
দূষণ কমাতে ৩০০ বিলিয়ন ডলার! চুক্তিতে সই করল ভারত’ও
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
সোমবার সকালে পুলিশের একটি দল পৌঁছয় পরিচালক রাম গোপাল বর্মার বাড়িতে
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
২৬ নভেম্বর সংবিধান দিবস, সুপ্রিম কোর্টে বক্তব্য রাখবেন মোদি
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
আমেরিকার অভিযোগে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে তদন্তের আবেদন
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
আজ কালীঘাটের তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠক
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
পার্থে নজির, ২৯৫ রানে চূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার দর্প
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ইন্ডিয়া জোটের নেত্রী হন মমতা, কল্যাণের মন্তব্যে বিতর্ক
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
বলবন্ত সিং-এর ক্ষমা প্রার্থনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কী জানাল কেন্দ্র?
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
মহারাষ্ট্রে দলের বিপর্যয়, কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা নানা পাটোলের
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
পারমাণবিক শক্তি বৃদ্ধি করছে ইরান, আমেরিকার বিপদ বাড়বে?
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
ড্র দিয়ে শুরু ম্যান ইউয়ের অ্যামোরিম যুগ, শীর্ষে লিভারপুলই
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী বামপন্থী প্রার্থী ইয়ামান্দু ওরসি
সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team