ওয়াশিংটন: মোদির মার্কিন সফর নিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব যখন উদ্বাহু নৃত্য করছে, তখন ভারতের গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সেদেশের আইনপ্রণেতারা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে তাঁরা আর্জি জানালেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন কথা হবে, তখন যেন মোদির কাছে ভারতের রাজনৈতিক আগ্রাসন, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা, নাগরিক সমাজ সংগঠন এবং সাংবাদিকদের নিশানা করার বিষয়গুলি উত্থাপন করা হয়। আমেরিকা-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির বিষয়ে প্রশংসাসূচক উদ্যোগের কথা বললেও ভারত সম্পর্কে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এহেন আবেদন মোদির সফরে চোনা ঢেলে দিল বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহল।
ভারতের চলতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আর্জি জানিয়েছেন সেদেশের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ৭৫ জন সেনেট ও কংগ্রেস সদস্য। তাঁরা এই আবেদনের সঙ্গে আমেরিকার বিদেশ মন্ত্রক এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলির রিপোর্ট তুলে ধরেছেন। তাঁদের দাবি, প্রেসিডেন্ট যেন মোদির কাছে সাম্প্রতিককালে ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ এবং কথায় কথায় ইন্টারনেট পরিষেবায় নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে জানতে চান।
আরও পড়ুন: Modi in US | ‘মোদি-ভক্ত’ মাস্ক ভারতে বিনিয়োগ করবেন, আসছেন আগামী বছর
স্বাক্ষরকারীদের দাবি, ভারতে রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সংখ্যালঘুদের উপর ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, ধর্মের নামে হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। যার কিছু সরকারি মদতপ্রাপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে আর্জি-চিঠিতে।
ভারতের সঙ্গে আমেরিকার কৌশলগত, অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, প্রতিরক্ষা ও জনসম্পর্ক মজবুত করার উপর জোর দিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। তবে এও বলেছেন, বন্ধু মাত্রেই খোলা মনে আলোচনার একটা জায়গা। ফলে কোনও কিছুতেই অন্ধকার কিছু ফেলে রাখতে নেই। এ কারণেই আমরা প্রেসিডেন্টকে বলতে চাই, অনেক বিষয়ে যখন আলোচনা হবেই, তখন এই সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছ থেকেই পরিষ্কার হয়ে নেওয়া উচিত।
মানবাধিকার নিয়ে যাবতীয় তথ্য পরিসংখ্যান নয়াদিল্লি বরাবর অগ্রাহ্য করে। আর সেটা আমেরিকান রিপোর্ট হলে মুখের উপর সাফ জানিয়ে দেয়. ভুয়ো তথ্যের উপর ভিত্তি করে এইসব সমীক্ষা হয়। উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বিদেশি কোনও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দ্বিতীয়বার ভাষণ দেওয়ার বিরল সম্মান পেতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই মুহূর্তের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে মঙ্গলবার বিকেলে এই চিঠি দেন মার্কিন সেনেটর ও কংগ্রেস সদস্যরা। প্রসঙ্গত, ভারতের চলতি রাজনৈতিক ঘটনাবলির কঠোর সমালোচক এবং এ মাসের গোড়ায় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে ব্যক্তিগত নৈশভোজে অংশ নেওয়া সেনেটর ক্রিস ফন হোলেন ও মার্কিন কংগ্রেস সদস্য প্রমীলা জয়পালের উদ্যোগেই চিঠি দেওয়া হয়েছে বাইডেনকে। মার্কিন কংগ্রেসের শক্তি অনুযায়ী প্রায় ১৪ শতাংশ সদস্য এই চিঠির বক্তব্যের সমর্থনে স্বাক্ষর করেছেন।