কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Vote) ঘোষণার পর বেলাগাম হিংসা রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়। সন্ত্রাসে রাজ্যে ২৪ দিনে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একাধিক জেলা থেকে বোমা উদ্ধার, বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের (State Election Commission) ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। অবশেষে স্পর্শকাতর বুথ (Sensitive Booth ) ও অঞ্চল চিহ্নিতকরণ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। কলকাতা হাইকোর্টে জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যে ৬১ হাজার ৬৩৬ বুথের মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ১০ হাজার জানাল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মুর্শিদাবাদে ১০ শতাংশ, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৮ শতাংশ বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশের পরই রাজ্য প্রশাসনের কাছেও অতি স্পর্শকাতর এবং স্পর্শকাতর বুথের তালিকা চেয়ে পাঠায় কমিশন। সেই রিপোর্ট হাতে আসতে সোমবার হাইকোর্টে স্পর্শকাতর বুথের রিপোর্ট জমা দিল কমিশন। পাশাপাশি, আদালতে ভিডিওগ্রাফি, সিসিটিভি নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিতে চলেছে কমিশন। ৯৫ শতাংশ বুথের সিসিটিভি ৫ শতাংশ বুথে ভিডিওগ্রাফি। ভোট ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন জেলার যে সব জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে, সেই এলাকাগুলিকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছে কমিশন। জেলা নির্বাচনী আধিকারিক ও রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
এবার গণনা কেন্দ্র নিয়ে বিভিন্ন জেলার শাসক ও পঞ্চায়েত ইলেকশন অফিসারদের থেকে ব্লক ভিত্তিক গণনা কেন্দ্রের তালিকা চাইল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ৫ জুলাইয়ের মধ্যে তথ্য চাওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত গণনার রাউন্ড করতে হয় তাহলেও অনুমতি নিতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। জেলাগুলিকে বিশেষ নির্দেশিকা দিয়েছে কমিশন।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023| HC | পঞ্চায়েত ভোট বন্ধের মামলা খারিজ হাইকোর্টে
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বাংলার জেলা দুর্বৃত্তদের মুক্তাঞ্চলে পরিণত হয়েছে। মনোনয়ন পর্বের মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে কংগ্রেস কর্মী খুন হয়। ক্যানিং, ভাঙড়, ডোমকল, রানীনগর, চোপড়া, দিনহাটা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ভাঙড়ে তৃণমূল আইএসএফ সংঘর্ষে মৃত্যু হয় তিনজনের। প্রার্থীদের ভয় দেখানো, মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ দেওয়া নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে মোতায়েত করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে দু দফায় ২২ ও ৮০০ কোম্পানি বাহিনী চাওয়া হলেও কেন্দ্রের তরফে ৩৩৭ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় স্পর্শকাতর এলাকায় রুটমার্চ শুরু করেছে বাহিনী।
ভোটের আর মাত্র পাঁচ দিন বাকি তার আগেই সোমবার দুবরাজপুরের যশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পছিয়াড়া গ্রামের তেঁতুল পাড়ার শেখ জানে আলমেরবাড়ির থেকে এক জার তাজা বোমা উদ্ধার করল দুবরাজপুর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে প্রায় ১৫- ১৬ টি তাজা বোমা রয়েছে। রবিবার রাতেই হাড়োয়ার (Haroa) শালিপুরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে একজনোর। রবিবার রাতেই বাসন্তিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় এক যুব তৃণমূল কর্মীর। সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গ থেকে শিয়ালদহে নেমেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখান থেকে সরাসরি বাসন্তী উদেশ্যে রওনা দেন তিনি। সেখানে গিয়ে মৃত তৃণমূল নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের অভিযোগের কথাও শোনেন।