কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নপর্বেই রাজ্যজুড়ে সন্ত্রাস ও রক্তক্ষয় দেখে স্পষ্টত অসন্তুষ্ট রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যপাল বলেন, সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনও কথা নয়, কাজ হবে এবার। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে হিংসা প্রসঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দরে প্রতিক্রিয়া রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের। প্রসঙ্গত, এদিন মনোনয়ন জমার শেষবেলায় চোপড়া ও ভাঙরে রাজনৈতিক অশান্তি চরমে ওঠে। গুলি, বোমা, কাঁদানে গ্যাসে উত্তাল হয়ে ওঠে ভাঙর।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কোনও ক্ষেত্রেই তৃণমূল কংগ্রেস দায়ী নয়। তিনি বলেন, প্রায় ৭৩-৭৪ হাজার বুথ, সেখানে মাত্র তিনটে গন্ডগোল হয়েছে। তাও সেটা নিজেদের স্থানীয় ব্যাপারে। তৃণমূল কোনওভাবেই এতে জড়িত নয়। ২০০৩-এ সিপিএমের আমলে পঞ্চায়েত ভোটের দিন সম্ভবত ৩৬ জন মারা গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | টিকিট না পেয়ে অনেকেই তৃণমূল ছাড়লেন, নির্দলই চ্যালেঞ্জ
২০১৩ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে এসেছিলেন। ৩৯ জন মারা গিয়েছিলেন। ইসলামপুর ও চোপড়ায় যা ঘটেছে, তার সঙ্গে পার্টি কোনওভাবেই জড়িত নয়। অনেককেই এবার পার্টি টিকিট দেয়নি। তাদের কার্যকলাপে সন্তুষ্ট নয় পার্টি। যারা মানুষের কাজ ভালো করে করেনি। ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে আমরা প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা দেখে এবার টিকিট দিয়েছি। ইসলামপুর-চোপড়ার যে ঘটনাটা নিজেদের মধ্যে, এর ভিতরে পার্টি জড়িত নয়। যারা এসব করছে, ঠিক করছে না। পুলিশকে বলে দিয়েছি, স্ট্রং অ্যাকশন নেওয়ার জন্য।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court )। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় বাহিনী বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু আদালত রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে জানিয়ে দিল, ভোট হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) দিয়ে। এই নির্দেশের ফলে জোর ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননমের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন জানাতে হবে। যে সমস্ত পুলিশকর্মী ভোটের ডিউটিতে থাকবেন তাদের প্রত্যেকের গলায় আই কার্ড ঝুলিয়ে রাখতে হবে। আদালতের মন্তব্য, আরও অপেক্ষা করলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।