কলকাতা: এত সংঘর্ষ হলে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayat Election 2023) বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা। মনোনয়ন পর্বে হিংসা নিয়ে বিরোধীদের মামলার পরিপেপ্রেক্ষিতে বুধবার বিচারপতি বলেন, যদি একটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে এত রক্ষপাত, সংঘর্ষ, হিংসা হয়, তা হলে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এটা রাজ্যের পক্ষে অত্যন্ত লজ্জার।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে বিভিন্ন জেলায় অশান্তি, হিংসা, মনোনয়ন পেশে বাধা ইত্যাদি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা হয়েছে গত কয়েকদিনে। মঙ্গলবারই প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননম এত মামলা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছিলেন। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসেও একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র পেশ না করতে পেরে মামলা করেছেন। সেরকমই একটি মামলার সূত্রে বিচারপতি সিনহা এদিন বলেন, পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে এত যে রক্তপাত হিংসা হচ্ছে, গণতন্ত্রের পক্ষে তা অত্যন্ত লজ্জার। প্রার্থীরা যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে সময় মতো মনোনয়ন পেশ করতে না পারেন, তাহলে তো তাঁদের অতিরিক্ত সময় দিতেই হবে।
আবেদনকারীদের অভিযোগ, মনোনয়নপত্র জমা এবং প্রতীক পাওয়ার পাওয়ার পরও দেখা যাচ্ছে কমিশনের ওয়েবসাইটে অনেক প্রার্থীর নাম নেই। ভাঙড়ের প্রায় ১৬-১৭ জন প্রার্থীর নাম ওয়েবসাইট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ভাঙড়ের কিছু সিপিএম প্রার্থী এই অনিয়মের অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালত এই প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দিতে হবে বলে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিল। বিচারপতি সিনহা বলেন, আমার কাছে এমন অনেক মামলা আসছে, যেখানে অভিযোগ উঠছে, মানুষকে মারধর করা, হচ্ছে, ধর্ষণ করা হচ্ছে। এই সব হচ্ছে টা কী? সরকারি আইনজীবী বলেন, মাত্র আট’টি ব্লকে অশান্তি হয়েছে। বাকি সর্বত্র মনোনয়ন শান্তিতেই হয়েছে। তিনি ১৯৯৯, ২০০৩ সালে ভোটে কী হয়েছিল, তা বলতে চান। বিচারপতি তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, অতীতে কী হয়েছিল, সেই সব কথা এখন বলে কোনও লাভ নেই।
প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে কাকদ্বীপে শাসকদলের এক সভাতে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, মাত্র একটা-দু’টো বুথে গোলমাল হয়েছে। আর বিরোধীরা তাই নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাই বলে চেঁচামেচি জুড়ে দিয়েছে। তাঁর আরও দাবি ছিল, দেশের আর কোথাও এত শান্তিতে মনোনয়ন পর্ব মেটে না।