কলকাতা: নোবেলজয়ী (Nobel Winner) অমর্ত্য সেনকে (Amartya Sen) পরিযায়ী এবং পরিব্রাজক বলে কটাক্ষ করল বিশ্বভারতী। বুধবার এক প্রেস বিবৃতিতে (Press Release) বিশ্বভারতী জানায়, অমর্ত্য সেন এতদিন বিশ্বভারতীতে চলমান অশান্ত পরিবেশের ফসল তুলেছেন। তিনি বিশ্বের দরবারে বিশ্বভারতীকে পণ্যদ্রব্য করে ফায়দা লুঠছেন। এই সমস্ত মেকি রাবীন্দ্রিকের যাতে এই পবিত্রস্থানে জায়গা না হয় তার জন্য বিশ্বভারতী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বুধবারই তাঁর ‘প্রতীচী’ বাড়িতে বসে অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বিশ্বভারতীর একদল পড়ুয়া ও শিক্ষকের সঙ্গে আলাপচারিতায় নোবেলজয়ীর মুখে উঠে আসে তাঁর জমি বিবাদের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, এই বাড়িতে আমি ৮০ বছর থেকেছি। কিন্তু উপাচার্য বললেন, এ বাড়ি তোমার নয়। সেটা নিয়ে আমার আফসোস করার কারণ থাকতেই পারে। উপাচার্য আরও বলেন, এই বাড়ির কিছু অংশ তোমার হতে পারে, বাকি নয়। এটা আমার কাছে একটা বড় শিক্ষা। রবীন্দ্রনাথ শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন, সমস্ত পৃথিবী আমাদের নিজেদের। এটা ভুল হতে পারে, কিন্তু এর ভিতরেও একটা সত্যতা আছে। অমর্ত্য আরও বলেন, বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমাকে অপমান করা অত সহজ নয়।
আরও পড়ুন:Panchayat Election 2023 | তমলুকে তৃণমূল থেকে ফের বহিষ্কার দলের নেতা কর্মী
এর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার রীতিমতো প্রেস বিবৃতি জারি করে বিশ্বভারতী বলে, তারা কাউকে অপমান করে না। অপমান করার ইচ্ছাও পোষণ করে না। তবে যদি কেউ মনে করেন যে, যেহেতু তিনি জগৎবিখ্যাত শিক্ষাবিদ, তাই অন্যায়ভাবে বা আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিশ্বভারতীর জমি দখল করবেন, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পিছপা হবে না। বিশ্বভারতীর আরও বক্তব্য, অমর্ত্য সেন যতই অন্যায় সমর্থনকারী চাটুকার দ্বারা সমর্থিত হন না কেন, বিশ্বভারতী নিজের উদ্দেশ্য থেকে এক পাও সরবে না। জমির বিষয়টি বিচারাধীন বলে বিশ্বভারতী এখন কোনও মন্তব্য করবে না।
ওই প্রেস রিলিজে বিশ্বভারতী আরও বলে, প্রতিষ্ঠানের আজকের পরিস্থিতি নিয়ে কোনও পরিযায়ী পরিব্রাজকের মন্তব্যের ঘোরতর বিরোধী বিশ্বভারতী। একইসঙ্গে বিশ্বভারতীর উপর ভর করে যাঁরা পেট চালাচ্ছেন, তাঁদেরও সাবধান হতে অনুরোধ করা হচ্ছে। দুর্নীতি বন্ধ করতে এবং নিয়মশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যতরকম আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার জন্য বিশ্বভারতী শেষ পর্যন্ত যাবে। অমর্ত্য সেন যতই জগৎবিখ্যাত হন, জমি হরপকারী হিসেবে তিনি দোষী এবং অপরাধী। তাঁকে এবং অন্যদের যত বড় রাজনৈতিক প্রতিপত্তি মানুষ সাহায্য করুন না কেন বিশ্বভারতী এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখবে।
প্রসঙ্গত, অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতীর জমি বিবাদে নোবেলজয়ীর পাশে দাঁড়িয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বোলপুরে অমর্ত্যের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দেন। মমতা আরও বলেন, অমর্ত্য সেনকে উচ্ছেদ করার চেষ্টা করা হলে আমি নিজে বোলপুরে এসে অবস্থান আন্দোলনে শামিল হব। বিশ্বভারতী প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রীকেই খোঁচা দিয়েছে বলে মত বিভিন্ন মহলের।