নুহ: বড়সড় অশান্তি ঠেকাতে হরিয়ানার নুহ-কে এখন প্রায় অভেদ্য দুর্গে পরিণত করেছে পুলিশ-প্রশাসন। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সহ বেশ কয়েকজন কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতাকে নিরাপত্তার কারণে আটক করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও গাড়ি গাড়ি ভর্তি হিন্দু সমর্থকরা নলহার মহাদেব মন্দিরের দিকে এগিয়ে চলেছেন। পুলিশের সদর দফতর পেরিয়ে চলে গিয়েছেন কয়েকশো সমর্থক। অযোধ্যার সাধু জগৎগুরু পরমহংস আচার্য মহারাজকে পুলিশ যেতে বাধা দেয়। তিনি বলেছেন, আমি অযোধ্যা থেকে এসেছি। প্রশাসন আমাদের এগতেও দিচ্ছে না, ফিরতেও দিচ্ছে না। আমি এখানে আমরণ অনশনে বসতে চলেছি।
সব মিলিয়ে নুহতে হিন্দুদের মহামিছিলকে কেন্দ্র করে পুরো যুদ্ধ প্রস্তুতির পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দাঙ্গারোধী গাড়ি মোতায়েন এবং ড্রোনের মাধ্যমে নুহ এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় নজরদারি চালানো হচ্ছে। সর্ব জাতীয় হিন্দু মহাপঞ্চায়েতের ডাকে আজ যে শোভাযাত্রার ডাক দেওয়া হয়েছে তাকে অনুমতি দেয়নি হরিয়ানার বিজেপি সরকার। কিন্তু, তা উপেক্ষা করেই হিন্দুত্ববাদী এগিয়ে চলেছে নলহার মন্দিরে পুজোপাঠ করার জন্য।
আরও পড়ুন: সপ্তাহের প্রথম দিন সোনার দাম কতটা কমল জেনে নিন
রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজ ভিএইচপিকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। অন্যদিকে, মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি হুমকির সুরে বলেছেন, আজ যদি কোনও অশান্তি ঘটে, তার জন্য সরকার দায়ী থাকবে। তিনি আরও বলেছেন, ভিএইচপির এই শোভাযাত্রার মূল টার্গেট যে মুসলিমরা, তা সরকার আগেভাগেই জানে। এর অর্থ এই যে ধর্মের নামে সংগঠিত অপরাধীদের কাছে বিজেপি সরকার অসহায়।
অগ্নিগর্ভ হরিয়ানার নুহতে আজ, সোমবার হিন্দুদের মহামিছিলকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন মহামিছিলের অনুমতি না দিলেও সর্ব জাতীয় হিন্দু মহাপঞ্চায়েত বিশাল শোভাযাত্রা বের করার ব্যাপারে অটল রয়েছে। ফলে নুহ সহ আশপাশের এলাকাগুলিতে উত্তেজনার পারদ চড়ছে। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, অপ্রীতিকর অবস্থা এড়াতে পুলিশ ছাড়াও আধা সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। আন্তঃরাজ্য এবং আন্তঃজেলা সীমানাগুলিতে ব্যাপক নজরদারি করছে নিরাপত্তারক্ষীরা।
উল্লেখ্য, আগামী ৩-৭ সেপ্টেম্বর নুহতে জি ২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শেরপা গ্রুপের বৈঠক বসার কথা নুহতে। সে কারণে হিন্দুদের ওই শোভাযাত্রায় অনুমতি দেয়নি পুলিশ। কিন্তু, সেসবকে তোয়াক্কা না করে শোভাযাত্রা বেরবে বলে জানিয়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। মহামিছিলকে কেন্দ্র করে যাতে গুজব না রটে সে কারণে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
এডিজিপি মমতা সিং বলেন, যে কোনও ধরনের উত্তেজনা ঠেকাতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৯০০ হরিয়ানা পুলিশের পাশাপাশি ২৪ কোম্পানি আধা জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা ছাড়া বাইরে থেকে আসা কোনও ব্যক্তিকে নুহতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। জেলার সবকটি সীমানা সিল করে দেওয়া হয়েছে। মল্লার মন্দিরে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, সর্ব জাতীয় হিন্দু মহাপঞ্চায়েত সোমবার ব্রিজমণ্ডল শোভাযাত্রার ডাক দিয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ জানিয়েছে, এই ধরনের ধর্মীয় শোভাযাত্রার জন্য কোনও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। পুলিশ অনুমতি দিল কি দিল না তাতে কিছু যায় আসে না। নিরাপত্তার কারণে আজ নুহতে স্কুল-কলেজ, ব্যাঙ্কে ছুটি ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও গুচ্ছ এসএমএস, মদ বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।