লখনউ: আসন্ন নবরাত্রিতে (Navratri) রাজ্যজুড়ে অখণ্ড রামায়ণ (Akhand Ramayana) এবং চণ্ডীপাঠের (Chandi Path) আয়োজন করার নির্দেশ দিল উত্তরপ্রদেশ সরকার (UP Govt)। মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি সরকারি নির্দেশ জারি করেছে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) সরকার। এদিন রাজ্যের সব জেলা প্রশাসনকে (District Administration) এক নির্দেশে জানানো হয়েছে, নবরাত্রি উপলক্ষে অখণ্ড রামায়ণ এবং সপ্তশতী (Saptashati) বা চণ্ডীপাঠের আয়োজন করতে হবে। উত্তরপ্রদেশ সরকার নবরাত্রি উপলক্ষে বিভিন্ন শক্তিপীঠ (Shakti Peeths) ও মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। জেলা, তহসিল এবং ব্লকস্তরে এ ধরনের বিশেষ অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি সরকার।
সরকারের তরফে একটি প্রেস বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হবে। সব জেলাশাসক এবং কমিশনারকে নিয়মবিধি মেনে এবং সুষ্ঠুভাবে এ ধরনের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি বিবৃতি অনুযায়ী, এজন্য প্রতি জেলাকে এক লক্ষ করে টাকা দেওয়া হবে। অর্থাৎ নবরাত্রির বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য মোট ৭৫ লক্ষ টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। রাজ্যের মানুষকে বিশেষ করে মহিলাদের নবরাত্রির এই বিশেষ পুজোপাঠে অংশ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Kolaghat Cooperative Vote Win Left: সমবায়ের ভোটে উড়ল লাল আবির,দ্বিতীয় স্থানে নামল তৃণমূল
প্রসঙ্গত, চলতি মার্চের ২২ তারিখ থেকে নবরাত্রি শুরু হচ্ছে। চলবে ৩০ মার্চ পর্যন্ত। একে চৈত্র নবরাত্রি বলে। ভারতে নবরাত্রি পালন হিন্দুধর্মের এক পবিত্র পুজোবিধি বলে মান্য করা হয়। এই নবরাত্রিতে মা দুর্গার নৌকায় আগমন ঘটছে। ৯ দিন ব্যাপী এই পুজোপাঠ হয়। এবারের নবরাত্রির প্রথম দিন পড়ছে ২২ মার্চ, যাকে শৈলপুত্রী দিন বলা হয়। পরদিন হবে ব্রহ্মচারিণী দিন। তারপর চন্দ্রঘণ্টা। এভাবে কুষ্মাণ্ড, স্কন্দমাতা, কাত্যায়ণী, কালরাত্রি এবং মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী রূপে পুজো করা হয় দুর্গাকে।
দুর্গা সপ্তশতী হচ্ছে দেবী মাহাত্ম্য অথবা চণ্ডীপাঠ। মার্কণ্ডেয় পুরাণের একটি অংশ চণ্ডী। দেবী দুর্গা যখন মহিষাসুরকে বধ করেন সেই বর্ণনাই চণ্ডীতে রয়েছে। মোট ৭০০ বা সপ্তশত শ্লোক রয়েছে বলে একে সপ্তশতী বলা হয়।
বিজেপি সরকারের এই নির্দেশিকার পরপরই রাজনৈতিক বিতর্ক জেগে উঠেছে। কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি অভিযোগ তুলেছে, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কী করে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় কোনও বিশেষ একটি ধর্মের অনুষ্ঠান পালনের নির্দেশ দেওয়া যায়? বিজেপি ইচ্ছে করে রাজ্যে বিভেদের রাজনীতি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। এর দ্বারা সংখ্যালঘুদের উপর চাপ সৃষ্টি করার খেলায় মেতেছে যোগী সরকার। আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগে অখণ্ড রামায়ণ ও চণ্ডীপাঠের আয়োজন করে রাজ্যে সম্প্রীতি নষ্ট করতে চাইছে বিজেপি।