কলকাতা: ঘেমে নেয়ে একসা শিল্পী। কলকাতার অসহ্যকর গুমোট আর্দ্রতা। তাপমাত্রা তিরিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে। একটা বদ্ধ অডিটরিয়ামে টানা কয়েক ঘণ্টার লাইভ অনুষ্ঠান। দু’হাজার দর্শক ধরে এমন একটা জায়গায় প্রায় সাত হাজার মানুষের ভিড়। নজরুল মঞ্চের দরজা এক সময় খুলে দিতে হল। মঞ্চে চড়া আলোর উত্তাপ। দর্শকদের ভিড়। শ্বাস-প্রশ্বাস। অক্সিজেন লেভেল কমতে কমতে প্রায় তলানিতে। বারবার ঘাম মুছতে লাগলেন কে কে। উপরের দিকে হাত দেখিয়ে বোঝালেন এসি’র ঠান্ডা তাঁর শরীরে এসে পৌঁছচ্ছে না। ফের একবার গলা ভেজালেন। তারপর?
নজরুল মঞ্চে যাঁরা পারফর্ম করেন জানেন এ’রকম পরিস্থিতিতে শরীরকে কী রকম কষ্টের সঙ্গে জুঝতে হয়। কতটা মানিয়ে নিতে হয়। কলকাতার শিল্পী রূপম ইসলাম তাঁর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। বলেছেন, ‘এত ভিড়ে দম নেওয়ার ফাঁকটুকুও থাকে না। অভ্যেস না থাকলে পারফর্ম করা খুবই মুশকিল।’ কে কে সোমবারও এই একই জায়গায় অন্য একটি কলেজের অনুষ্ঠানে গান গেয়েছেন। জানা গিয়েছে একই রকম ভিড়ের পরিস্থিতিতে এসি ঠিক মত কাজ করছে না বলে অভিযোগ করেন কে কে।
মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, ‘জনস্রোত আটকানো যায়নি। নজরুল মঞ্চের দরজা খোলা ছিল।’ দরজা খোলা থাকলে এসি যে ঠিক মত কাজ করবে না সেটাই স্বাভাবিক। তার মধ্যে শীতাতপনিয়ন্ত্রণের মেশিন দু’শো জন মানুষের শরীরে যেভাবে কাজ করবে সাত হাজার দর্শকের ভিড়ে তা কি একইরকম ভাবে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে? পরিষ্কার উত্তর, না পারবে না। শরীর খারাপ থাকলে এই ধরনের পরিস্থিতি মুহূর্তে অসুস্থতাকে ট্রিগার-আপ করে চরম বিপদ ডেকে আনে।
আরও পড়ুন- K K Death: এক মহিলাই কেকে’র জীবনের গতিপথ বদলে দেন, কে তিনি?
কুলকুল করে ঘামতে ঘামতে কে কে বলেছিলেন, ‘পিছওয়াড়া জ্বল রহা হ্যায়।’ অর্থাৎ তীব্র আলোর উত্তাপে শরীরের পিছনের দিক যেন জ্বলে যাচ্ছে। কয়েকটা আলো নিভিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এসি কাজ করছে না। ভ্যাপসা গরম। দমবন্ধকর পরিস্থিতি। সাত হাজার দর্শকের শ্বাস-প্রশ্বাস। সঙ্গে উজ্জ্বল আলোর তাপ। গাইতে গাইতে এক সময় আচমকাই পিছিয়ে এলেন কে কে। চোখে-মুখে অসুস্থতার চিহ্ন। শরীর যেন একেবারে ছেড়ে দিয়েছে। সঙ্গের লোকজন ম্যানেজার শিল্পীকে নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে গেলেন নজরুল মঞ্চ ছেড়ে। হোটেলের দিকে।