আগরতলা: বিধানসভা ভোটের আগে ত্রিপুরা বিজেপিতে বড় ভাঙন। বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন গেরুয়া শিবিরের দুই শীর্ষ নেতা। একই সঙ্গে বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ ত্যাগ করেছেন তাঁরা। সোমবার সকালে ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার রতন চক্রবর্তীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন আগরতলার বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন ও বরদৌলির বিধায়ক আশিস কুমার সাহা। পরবর্তী কর্মকাণ্ড ঠিক করতে তাঁরা দুজনেই দিল্লি যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
সুদীপ রায় বর্মন বলেন, মানুষের জন্যই আমাদের রাজনীতিটা করা। মানুষের কষ্ট-দুর্দশা আর সহ্য হচ্ছিল না। আজ ইস্তফা দিয়ে অনেক হালকা লাগছে। গণতন্ত্র এই রাজ্যে বিপন্ন। যারা স্বীকৃত বিরোধী দল, তারা কিছু করতে পারছে না। এই রাজ্যে একনায়কতন্ত্র কায়েম রয়েছে। মন্ত্রীরা তাঁদের অসহায়তার কথা বলেন আমাদের। হাতে গোনা কয়েকজন অফিসার যা ইচ্ছা করছেন। মানুষের আর্তনাদ তাঁদের হৃদয়কে স্পর্শ করছে না।
পদত্যাগী বিধায়কের কথায়, মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা লড়াই করব। এই অপশাসনের অবসান ঘটাবোই। ধাপে ধাপে অনেকেই দল ছাড়বেন। সরকার সংখ্যালঘু হয়ে যাবে। যে লক্ষ্য নিয়ে পরিবর্তন এনেছিলাম, তা পূরণ হয়নি। ত্রিপুরায় মানুষের বাক-স্বাধীনতা নেই। সংবাদমাধ্যমের উপরও আঘাত নেমে আসছে। দিল্লি থেকেই ফিরেই পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করবেন বলে জানান সুদীপবাবু।
সূত্রের খবর, দুই পদত্যাগী বিধায়ক দিল্লি গিয়ে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। যদিও কংগ্রেসের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বিপ্লব দেবের সঙ্গে বারবার প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়েছেন সুদীপ। সম্প্রতি সুদীপ জানিয়েছিলেন, ২০২৩ সালের নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে আর লড়বেন না। ওই টিকিটে আর আগ্রহ নেই।
পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছেন দুই বিজেপি বিধায়ক
গত বিধানসভা ভোটের আগে ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সুদীপ৷ তার আগে তিনি ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি এবং বিরোধী নেতা ছিলেন৷ ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীও হন৷ কিন্তু ২০১৯ সালে তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেন বিপ্লব দেব৷ এ নিয়ে তাঁর চাপা অসন্তোষ ছিল। পাঁচ বারের বিধায়ক সুদীপ কোন দলে যোগ দেন, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: বিপ্লব-সরকারের মুখোশ খুলে দিয়েছেন সুদীপ, বিজেপি বিধায়কের পাশে দাঁড়িয়ে বলল তৃণমূল