মুম্বই: ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদির বিজেপিকে দিল্লি থেকে উৎখাত করতে বিরোধী জোটের শীর্ষ নেতারা আসন সমঝোতা এবং যৌথ কর্মসূচি রূপায়ণের উপর জোর দিয়েছেন। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
আজ আইএনডিআইএ বৈঠকের মূল ১০টি বিষয়:
১। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিরোধী জোটের একটি প্রতীক প্রকাশ হতে পারে।
২। বেলা ১১টা থেকে শুরু হবে আনুষ্ঠানিক আলোচনা। আলোচ্যসূচি গতকাল, বৃহস্পতিবারই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। বৈঠকের শেষে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করা হবে।
৩। বিভিন্ন দলের নিজস্ব মুখপাত্র থাকলেও জোটের তরফে একটি মুখপাত্র দল গঠিত হতে পারে। যাঁরা জোটের সমস্ত তথ্য সংবাদ জগৎকে অবগত করবেন।
৪। একটি সমন্বয়কারী দলও গঠন করা হবে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়া আরও চারটি উপ কমিটি গঠিত হওয়ার সম্ভাবনা। যাদের একটি দল যৌথ কর্মসূচি তৈরি করবে। অন্যটি অ্যাকশন প্ল্যান এবং সামাজিক মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করবে। তৃতীয় দলের কাজ হবে এনডিএ সংক্রান্ত রিপোর্ট কার্ড তৈরির উদ্দেশ্যে ডেটা অ্যানালিসিস এবং রিসার্চ। চতুর্থ দলটি যৌথ প্রচার এবং সভার কাজ দেখভাল করবে।
৫। মূল বিষয় হচ্ছে, জোটের একটি মুখ তৈরি করা। সেই লক্ষ্যে একজন আহ্বায়ক নির্বাচনও আজ হতে পারে।
৬। সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ঘরোয়া আলোচনায় একটি ইস্তাহার প্রকাশের উপর জোর দিয়েছেন। এবং তা আগামী ২ অক্টোবর গান্ধী জয়ন্তীর আগে বা ওইদিন প্রকাশ করার বিষয়ে চাপ দিচ্ছেন। অন্যদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের লক্ষ্য আগামী মাসের মধ্যেই আসন সমঝোতার কাজ সেরে ফেলতে।
৭। অধিকাংশ নেতাই খুব তাড়াতাড়ি ভোট প্রস্তুতি কাজ করার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। কারণ অনেকেরই অনুমান, নির্বাচন আগেভাগেও হয়ে যেতে পারে। তাই দেরি করা উচিত হবে না।
৮। সমাজবাদী পার্টি নেতা রামগোপাল যাদবও আসন সমঝোতা আগেভাগে করে ফেলার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি কংগ্রেস সভাপতি একটি অভিন্ন জাতীয় কর্মসূচি তৈরির উপর জোর দিয়েছেন।
৯। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এনডিএ-র আচমকা ও চমকের রাজনীতির কৌশলকে টেক্কা দিতে সর্বাত্মক ছক তৈরির কথা জানিয়েছেন সকলকে। উল্লেখ্য, আগামী ১৮-২২ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করে সরকারপক্ষ সংসদের বিশেষ অধিবেশনের ডাক দিয়েছে। নীতীশ কুমারের আশঙ্কা ওই অধিবেশনে মোদি সরকার দেশবাসীকে খয়রাতির রাজনীতি উপহার দিতে পারেন।
১০। যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনের পর বিরোধী দলের নেতারাও পৃথকভাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।
রাহুল গান্ধী আদানি ইস্যুতে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তোপ দাগার পর আজ, শুক্রবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপি বিরোধিতার সুর চড়াবে ইন্ডিয়া জোট। গতকাল, বৃহস্পতিবার বিরোধী দলগুলির একটি ঘরোয়া আলোচনা হয়েছে। সেখানে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন ছাড়াও আঞ্চলিক রাজনীতির ক্ষেত্রে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রে জানা গিয়েছে।
এদিন বিরোধী জোট বড় শরিক দলগুলি থেকে বাছাই করে ১১ জনের সমন্বয়কারী কমিটি ঘোষণা করতে পারে। এই কমিটিই জোটের নীতি নির্ধারক কমিটি হবে। এছাড়াও ২৮টি বিজেপি-বিরোধী শরিককে একসূত্রে গাঁথতে একটি প্রতীকও প্রকাশ করা হতে পারে। শুক্রবার মুম্বইয়ের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে চলেছে ইন্ডিয়া।
বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়্গে, নীতীশ কুমার, শরদ পাওয়ার, লালুপ্রসাদ যাদব, তেজস্বী যাদব, এম কে স্ট্যালিন, মেহবুবা মুফতি, ফারুক ও ওমর আবদুল্লা, অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ডি রাজা, সীতারাম ইয়েচুরি, অখিলেশ যাদব ও আয়োজক দল শিবসেনার নেতা উদ্ধব ঠাকরে প্রমুখ।