Placeholder canvas
কলকাতা মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৫ |
K:T:V Clock
Fourth Pillar: পেন ইজ মাইটিয়ার দ্যান দ্য শোর্ড
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By: 
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১০:৩০:০০ পিএম
  • / ১৪১ বার খবরটি পড়া হয়েছে

আপাতত উৎসব শেষ। এক দীর্ঘ ছুটির পর শুরু হচ্ছে চতুর্থ স্তম্ভ। এদিকে এই ছুটির মধ্যেই ঘটে গেছে অনেক কিছু, একদিকে কন্যাকুমারিকা থেকে রাহুল গান্ধী, কংগ্রেসের ভারত জোড়ো অভিযান শুরু হয়েছিল, কেরল ও কর্ণাটক পেরিয়ে তা অন্ধ্রপ্রদেশ হয়ে আপাতত তেলেঙ্গনায়, ৫৪ দিনের মাথায়। সে যাত্রার কিছু ছবি সত্যিই আশাব্যঞ্জক। দেখেই মনে হচ্ছে এই তো আমার ভারতবর্ষ, সামনে এক তরুণ যিনি ক্রমশ পরিণত হচ্ছেন, অনেকেই বলতে শুরু করেছেন পারবেন, পারবেন তিনি পারবেন। এদিকে দেশের বেশ কিছু রাজ্যে নির্বাচন, অতএব সেখানেও দাবার ঘুঁটি বসানো শুরু হয়ে গিয়েছে, তেলেঙ্গনায় বিধায়ক কেনার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ৫০ কোটি, হ্যাঁ ৫০ কোটি টাকা, নির্বাচনের আগে অপারেশন বাংলা আমরা দেখেছিলাম, কোটি কোটি টাকার হাতবদলে পাল্টি খাচ্ছিল পাল্টিবাজেরা, তেলেঙ্গনাতেও নির্বাচন, অতএব সেখানেও একই খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে এবং এসবের মধ্যেই দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের ডেকে তাঁদের সামনেই মোদিজী একটি কর্তব্য আর একটি দর্শনের কথা জানালেন। কর্তব্য কী? সারা দেশের পুলিশের রঙ একই করার কথা বললেন। বললেন না যে দেশের পুলিশ আর তাঁকে পাহারা দেওয়ার জন্য যে এলিট বাহিনী, তাঁদেরও পোশাক একই হবে কিনা, ভাবলেন না যে ল অ্যান্ড অর্ডার রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে, এ নিয়ে আলটপকা মন্তব্যের আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মতি প্রয়োজন, বলে দিলেন। বলে দিলেন মানে জগাই-মাধাইয়ের মাথায় কিছু পরিকল্পনা তো আছে, ওই যে এক দেশ, তার এক ভাষা, এক দল, এক পুলিশ, সমস্ত বৈচিত্রের মাথা ভেঙে এক নাগপুর মডেলের দেশ তৈরি করাই তো তাঁদের লক্ষ্য। তো করুন? আটকাচ্ছে কে? আটকাচ্ছে দেশের মানুষ, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ যেখানে পারছে, সেখানেই আটকাচ্ছে। কারা এরা? উনিই বলে দিয়েছেন মাওবাদী। ওই যে উমর খালিদ থেকে ভারাভারা রাও, হুইল চেয়ারে বসা অধ্যাপক জি এন সাইবাবা থেকে অধ্যাপিকা সোমা সেন, সাংবাদিক গৌতম নভলাখা এরা, এরাই তো সেই আর্বান নক্সাল এবং এদের পরিচয় দিতে গিয়ে আসল কথাটাও বলে ফেলেছেন, ওই যে যারা কলমবাজি করেন, কলম দিয়ে লেখেন, ওই তারাই হল আসল শত্রু। হাতে তাদের কলম, আর মগজে বিদ্রোহ, এরা বশ্যতা স্বীকার করে না, মানুষ ক্ষেপায়, এরাই দেশের শত্রু, কলমবাজ। ওনার পকেটে মঁ ব্লাঁ আছে, লক্ষ টাকা দামের ফরাসি কলম, তা তো কেবল নিজের নাম স্বাক্ষর করার কাজে আসে, কিন্তু উমর খালিদের পেন আর মগজ? আসল শত্রু চিহ্নিত করেছেন নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদি।তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, পেন ইস মাইটিয়ার দ্যান শোর্ড। কলম তরোয়ালের থেকেও শক্তিশালী। সেই কবে এডওয়ার্ড বুল্যার লিটন ১৮৩৯ এ রেচেলিউ, অর দ্য কনস্পিরেসি নাটকে লিখছেন,

 

True,–This!
Beneath the rule of men entirely great
The pen is mightier than the sword. Behold
The arch-enchanters wand!-_- itself a nothing!
But taking sorcery from the master-hand
To paralyse the Caesars
-and to strike
The loud earth breathless!-_Take away the sword-
States can be saved without it|

 

দ্বিতীয় অঙ্ক, দ্বিতীয় দৃশ্যে কার্ডিনাল রেচেলিউ বলছেন –

“ঠিক, ঠিকই তো
মহান এইসব শাসকের তলায় 
কলম তরোয়ালের থেকেও শক্তিশালী
বিশাল বিশাল ওই খিলান আর রাজদন্ড, কিছুই নয়
কিন্তু ক্ষমতার ওই যাদুবিদ্যা কেড়ে নিতে
সিজারকে ক্ষমতাহীন করে দিতে
আঘাতের পর আঘাত করে এই উচ্চকিত পৃথিবীর দমবন্ধ করতে হলে
তরোয়াল সরিয়ে নাও
রাষ্ট্রকে ওই তরোয়াল ছাড়াই বাঁচানো যাবে।“

তারপর থেকে স্বৈরাচারীরা বারবার প্রমাণ করেছে, কলম আর কলমের পেছনের মগজটাই হল আসল শত্রু, তাদেরকে আগে জেলে পুরতে হবে, বৃদ্ধ সক্রেটিসের হাতে তুলে দেওয়া হল হেমলক, বিষ। পান করো, রাজার আদেশ। শিষ্যদের সামনে তিনি পান করেছিলেন গরল। কিন্তু যে সত্য সেদিন তিনি বলেছিলেন, বা যে সত্য বলার কারণে তাঁকে জেলে পোরা হয়েছিল, মারা হয়েছিল, সে সত্যকে আটকানো যায়নি। গ্যালিলিওকে জেলে পুরে পৃথিবীর আহ্নিক গতি আর বার্ষিক গতিকে লুকিয়ে রাখা যায়নি। সমস্ত বই জড় করে রাস্তায় পুড়িয়ে ছাই করেছিল নাৎসীবাহিনী, সেসব বই এখনও আছে, হিটলার নেই, থাকলেও এক ঘৃণ্য ব্যক্তি হিসেবেই ইতিহাসে থেকে গেছে, মুসোলিনি ঝুলেছে উলঙ্গ হয়ে সেইখানে যেখানে মানুষ তাকে সেলাম ঠুকতো। আর প্রতিবার প্রমাণিত হয়েছে দ্য পেন ইজ মাইটিয়ার দ্যান দ্য শোর্ড। মজার কথা হল স্বৈরাচারীরা এই ঐতিহাসিক তথ্য জেনেছেন, দেখেছেন, বুঝেছেন, কিন্তু মেনে নিতে পারেননি। পারেননি বলেই তাঁরা কলমবাজদের বিরুদ্ধে, মুক্ত কণ্ঠের বিরুদ্ধে, বহুস্বর তাদের না পসন্দ। ইন্দিরা গান্ধী তাঁর জরুরি অবস্থার প্রথম রাতেই পুলিশ পাঠিয়েছিলেন ছাপাখানায়, খবরের কাগজের দপ্তরে। তখন স্বাক্ষরের সংখ্যা কত? তখন কজন মানুষ খবরের কাগজ পড়েন? অনেক কম, কিন্তু তাতে কী? তাঁর মনে হয়েছিল সব সত্য ওই কলম থেকে বেরিয়ে আসবে, তাকে থামাও। মোদিজিও সেই সার সত্যটি বুঝেছেন, চিহ্নিত করেছেন তাঁর প্রধান শত্রুকে, কলমবাজ। মাত্র কদিন আগে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, একেবারের চলতে পারেন না, এখন হাত নাড়তেও বেশ অসুবিধে ৮০% পঙ্গু এক মানুষে, জি এন সাইবাবার জামিনের আবেদন নিয়ে সওয়াল জবাব চলছিল, তো বিচারক বললেন, হাত পা চলছে না তো কি? মগজ তো চলছে, আর মগজওয়ালা মানুষ বন্দুকওলা মানুষের থেকে কম কিছু নয়, অতএব তিনি হতেই পারেন এক ভয়ঙ্কর উগ্রপন্থী, অতএব জামিন নাকচ। জি এন সাইবাবা জেলেই আছেন গত তিন বছর, থাকবেন আরও কিছু বছর, মারাও যেতেই পারেন স্ট্যান স্বামীর মতো, কিন্তু বিচারপতির এই অবজার্ভেশনের সঙ্গে আমি ১০০% একমত, বন্দুক নয়, তরোয়াল নয়, মগজ আর হাতে থাকা কলম অনেক অনেক বেশী শক্তিশালী, তাই শাসকদের মগজধোলাই যন্ত্র আবিস্কার করতে হয়। মোদিজি কেবল সত্যি কথাটা বলে ফেলেছেন মাত্র। সত্যিই তো, খাঁকি পোশাক পরা সেই লোকটার হাতে ছিল ইতালিয়ান বেরেত্তা রিভালবার, তার তিনটে গুলিতে লুটিয়ে পড়েছিলেন, মারা গিয়েছিলেন গান্ধিজি। কদিন পরে ফাঁসিতে ঝুলেছিল খুনি নাথুরাম গডসে। দুজনেই মৃত, কিন্তু আজও সেই লড়াই চলছে, সাভারকরের কলম থেকে বের হওয়া প্রত্যেক ঘৃণা বাক্য নাথুরামকে খুনি বানিয়েছিল, এক উগ্র সাম্প্রদায়িক অমানুষ বানিয়েছিল, সে তো ছিল কেবল এক দম দেওয়া পুতুল, আসল মগজ আর কলম তো ছিল হিন্দু মহাসভা, আরএসএস, সাভারকরের। অন্যদিকে পাতার পর পাতা লিখে চলেছিলেন সেই একলা মানুষ, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের পক্ষে, বহুস্বর, বহুমতের পক্ষে ছিলেন গান্ধিজি, তাঁর মগজ, তাঁর কলম। আজও তো সেই লড়াইটাই লড়ছে ভারতবর্ষ। দেশজোড়া সেই লড়াইয়ে আমরাও সামিল, আমরাও জোর গলায় বলছি বহুস্বরের কথা, বলছি বহুমতের কথা, বলছি গণতন্ত্রের কথা, বলছি এক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার কথা, যেখানে আড়ালে আবডাল থেকে আপনার বা আপনার শিশুর মাথায় চাপিয়ে দেবে না হিন্দির বোঝা, যেখানে প্রত্যেক মানুষ তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী ধর্ম আর তাদের উৎসব পালন করতে পারবে, আমরা লাগাতারই তো এইসব কথাই বলে যাচ্ছি, কলতলার ঝগড়ায় নয়, তিকড়মবাজি করে নয়, আমরা যুক্তি দিয়েই আমাদের কথা বলার চেষ্টা করছি, মোদিজির বিরুদ্ধেও নয়, অমিত শাহের বিরুদ্ধেও নয়, তাঁদের দর্শনের বিরুদ্ধে, তাঁদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিরুদ্ধে, তাঁদের সংবিধান বিরোধী রাজনীতির বিরুদ্ধে এবং আমাদের আনন্দ হচ্ছে আমাদের ছোঁড়া প্রত্যেকটা তির, মানে প্রত্যেকটা লেখা তাঁদের গায়ে লাগছে, তাঁরা চিড়বিড়িয়ে উঠছেন এবং চেষ্টা করছেন কিভাবে এই মগজকে স্তব্ধ করা যায়, কিভাবে এই কলমকে থামানো যায়, কিভাবে এই চতুর্থ স্তম্ভকে বন্ধ করা যায়। ইনকাম ট্যাক্স, ইডি, সিবিআই। অফিসে হানা, আমার ঘরে (পডুন সুচন্দ্রিমা) ৪৮ ঘণ্টা ধরে সিআরপি’র তাণ্ডবের পর বেরিয়ে এসেই শুরু করেছি চতুর্থ স্তম্ভ, তারপরে এই পুজোর মধ্যে আবার প্রেমপত্র, ভাই দেব যত লাগে, শিরদাঁড়াটা চাই, জানিয়ে দিয়েছিলাম না স্যর, এই বাজারে শিরদাঁড়া বিক্রি নেই। তো হুমকি এল, লাইসেন্স নেই, বন্ধ করে দেব চ্যানেল। তো এখনও বেঁচে থাকা বিচারবিভাগের কাছে আমরা জানালাম, তাঁদের রায়েই এখনও আমরা চলছি, কেবল চলছি না, আরও সাফ জানাচ্ছি নো পাসারন, পার পাবে না, লড়ে যাবো শেষতক, যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে, যে কোনও পুলিশি জুলুমের বিরুদ্ধে, যে কোনও অগণতান্ত্রিক কাজের বিরুদ্ধে, লড়ে যাব সংবিধান হাতে নিয়ে, এক অসাম্প্রদায়িক বহুস্বরের ভারতবর্ষের জন্য। শেষতক লড়বো, সঙ্গে আছেন, সঙ্গে থাকুন।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২
১৩ ১৪১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯
২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬
২৭ ২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বাংলার মানুষকে ‘শুভনন্দন’ নিজের লেখা গান দিয়ে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
পয়লা বৈশাখে তাপপ্রবাহের কোনও সতর্কবার্তা নেই, ভিজবে কয়েকটি জেলা
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
স্বাগত ১৪৩২, নতুন বছরে কেমন যাবে ১২টি রাশির সময়, জেনে নেব
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
মেট্রোয় শ্লীলতাহানির অভিযোগ, পুরুষযাত্রীকে কুঁদঘাটে নামিয়ে জুতোপেটা মহিলাদের
মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৫
দিল্লির পথে ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
অশান্ত মুর্শিদাবাদ, মামলা সুপ্রিম কোর্টে
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
কালীঘাটের স্কাইওয়াকের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
ওয়াকফ বিরোধিতায় কলকাতাতে মিছিল, পুলিশের বাধা ধুন্ধুমার পরিস্থিতি
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
অস্পৃশ্য ছেলেটি পানীয় জল পেত না, তিনিই ভারতের সংবিধানের প্রণেতা
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
বিমান দুর্ঘটনায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত ডাক্তারের মৃত্যু নিউইয়র্কে
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
আইন হাতে নেবেন না, প্ররোচনায় পা নয়, সম্প্রীতির বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
বিহার ভোটের আগে এনডিএতে ভাঙন, জোট ছাড়ল আরএলজেপি
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
কাঁধে চাপতে পারে বাড়তি দায়িত্ব, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে নিয়ে আশাবাদী কংগ্রেস
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
বাজেয়াপ্ত গাড়ি রাখতে নির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন করতে হবে: বম্বে হাইকোর্ট
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
অমরনাথ যাত্রায় যাবেন? আগে এই পদ্ধতিতে করুন রেজিস্ট্রেশন
সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.
Developed By KolkataTV Team