নয়াদিল্লি: মণিপুর নিয়ে অনাস্থার বিতর্কে আজ বিকেল ৪টে নাগাদ জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার আগে বলবেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী তার মধ্যেই চলে আসবেন এবং অধীরের বক্তব্য শুনবেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিন একদফা সভা মুলতুবি হওয়ার পর দুপুরে দীর্ঘ ভাষণ রাখেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
তারপরেই বলতে উঠে তৃণমূল কংগ্রেসে মহুয়া মৈত্র বলেন, আমরা এমন এক জায়গায় প্রশ্ন তুলতে এসেছি, যার নাম ‘তুম অভি চুপ রহো’ সাধারণতন্ত্র। যেখানে প্রধানমন্ত্রী কোনও রাজ্যপালকে বলতে পারেন ‘চুপ রহো’। আমরা যারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি তাঁদের প্রতিদিন এখানে বলা হয়, চুপ রহো। এই অনাস্থা প্রস্তাব সেই মৌন বিধিভঙ্গের প্রস্তাব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনতে পাচ্ছেন না। শোনার চেষ্টাও করছেন না। শেষ পর্যন্ত আজ তিনি আসছেন এবং বলবেন।
আরও পড়ুন: রাহুল সভায় বসে, লোকসভায় এলেন মোদি
মহুয়া আরও বলেন, মণিপুরে তিন মাসে সাড়ে ৬ হাজার এফআইআর হয়েছে। দেশে এমন কোন রাজ্য আছে, যেখানে এরকমটা হয়েছে? চার হাজার বাড়ি ভাঙা হয়েছে আর ৬০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন। এমন কোনও রাজ্য আছে? অনাস্থা প্রস্তাব মানেই যে তা সফল হবে তা নয়, কিন্তু রাহুল গান্ধী ভয় পাননি, বলেন মহুয়া মৈত্র। প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, আপনার উপর গোটা দেশের আস্থা উঠে গিয়েছে। নতুন সংসদ ভবনের ভিতরে একটি ধর্মের সাধুসন্তদের দিকে সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রীর নতদৃষ্টি আমাদের লজ্জায় মাথা হেঁট করে দেয়। চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে এফআইআর করায় আমরা লজ্জিত বোধ করি। হরিয়ানার ৩ জেলার ৫০টি পঞ্চায়েত মুসলিম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিলে আমরা শরমে মরি।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ঘৃণার রাজনীতির লড়াইয়ে দেখুন কী কী হয়ে গিয়েছে। শাকসবজি হিন্দু আর পাঁঠা-খাসি মুসলমান হয়ে গেল! সকলেই জানতে চাইতেন এরপর মোদিজি নয়তো কে প্রধানমন্ত্রী হবেন? মণিপুরের ঘটনার পর সকলে বলছেন, আর যে কেউ হোক, মোদিকে আর চাই না।
মহুয়ার আগে বলতে উঠে নির্মলা বলেন, আমি স্বীকার করছি মণিপুর, দিল্লি, রাজস্থানে নারী নিগ্রহ হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা জরুরি। এনিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
কিন্তু, মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে প্রকাশ্যে হাঁটানোর সাফাই দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি সভাকে মনে করিয়ে দিতে চাই, তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কী হয়েছিল! সভার মধ্যেই তো তাঁর শাড়ি টানা হয়েছিল, সেকথা ভুলে গিয়েছেন আপনারা? নির্মলা দিনক্ষণ উল্লেখ করে বলেন, ১৯৮৯ সালের ২৫ মার্চ জয়ললিতা তখনও মুখ্যমন্ত্রী হননি, বিধানসভার বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন। এই ডিএমকে-র সদস্যরাই সেদিন এক মহিলা নেত্রীর শাড়ি ধরে টানাটানি করেছিলেন। আর তা নিয়ে হাসাহাসি করে অপদস্থ করেছিলেন। তারপর জয়ললিতা সভায় আসাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী না হয়ে বিধানসভায় আর ঢুকবেন না। ২ বছর তামিলনাড়ু বিধানসভায় তিনি ঢোকেন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা হয়ে। আজ সেসব কথা ভুলে গিয়েছেন আপনারা, প্রশ্ন নির্মলার।