সিউড়ি: কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি ও আর্থিক বঞ্চনার প্রতিবাদে আজ, রবিবার বিশাল জনসভা সিউড়ি ইরিগেশন কলোনির মাঠে (Suri Irrigation Colony Ground)l বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকে এই জনসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। থাকার কথা বিধায়ক সোহমের। এর পাশাপাশি থাকবেন রাজ্যের ও বীরভূম জেলা তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।
শুক্রবার তৃণমূল নেতৃত্ব ঠিক করে বীরভূমের (Birbhum) সিউড়িতে (Suri) অমিত শাহের (Amit Shah) পাল্টা সভা করা হবে। আজ, রবিবার, ১৬ এপ্রিল পাল্টা জনসভা তৃণমূলের। এই জনসভায় উপস্থিত থাকার জন্য বীরভূম সাংগঠনিক জেলা থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে। তিনিও জানান, পাল্টা সভার কথা। সভায় যাতে অমিত শাহের জনসমাবেশের থেকে লোক জমায়েত বেশি হয়, তার জন্য দাঁত কামড়ে নেমেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: CBI| সিবিআই সদর দফতর পর্যন্ত কেজরিওয়ালের সঙ্গে থাকবেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান
ওইদিনই অমিত শাহের ভাষণের পরপরই তৃণমূল নেতৃত্ব পালটা প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করে। বিশেষত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেককে (Abhishek Banerjee) নিশানা করায় তেড়েফুঁড়ে উঠেছেন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। তৃণমূল নেত্রী শশী পাঁজা বলেন, আমাদের দল বঞ্চনার যে প্রশ্নগুলি তুলছে, তার একটিরও জবাব কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেননি। ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে রাজ্যের দাবিতেও নিরুত্তর ছিলেন অমিত শাহ। আর দুর্নীতি নিয়ে উনি বড়বড় কথা বলছেন। ওনার মঞ্চেই তো দেখা গেল শুভেন্দু অধিকারীকে। যাকে খোলাখুলি টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। সাংসদ অপরূপা পোদ্দার কটাক্ষ করে বলেন, মেদিনীপুরের ভাইপোকে নিয়ে দিল্লির কাকা আজ সিউড়িকে গরম করার চেষ্টা করলেন।
একই কথা শোনা যায় তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের গলাতেও। তিনিও বলেন, অমিত শা একবারও ১০০ দিনের কাজের টাকা না দেওয়ার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন না। রামনবমীতে তাঁর দল রাজ্যে যে হিংসা ছড়াল সে প্রসঙ্গও এড়িয়ে গেলেন। এমনকী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা যাঁকে প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতি জড়িত থাকতে দেখা গিয়েছে, তাঁর সঙ্গে মঞ্চে পাশে বসেছিলেন।
তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও দলের কোনও প্রশ্নের উত্তর না দেওয়ার জন্য অমিত শাহকে ধিক্কার জানিয়েছেন। একই ভাষায় তিনিও বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন বলছেন দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তখন আপনার মঞ্চেই এমন একজনকে দেখা গেল। তাঁর সঙ্গে আপনি কথা বললেন, হাত মেলালেন। পশ্চিমবঙ্গে পাওনাগণ্ডা নিয়ে আপনি একটি কথাও না বলায় বোঝা গেল এসবের সদুত্তর আপনার কাছে নেই। মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এ বিষয়ে বলেন, আপনি আমাদের কোনও প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন না। ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবি জানিয়েছিলাম। বিজেপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেও সিউড়ির সভায় দুর্নীতিগ্রস্ত লোকদের মঞ্চে ঠাঁই দিয়েছে। কয়লা মাফিয়াদের সঙ্গে আপনার দলের মন্ত্রীর যোগাযোগ আছে, ছবি তুলছেন, তার কোনও জবাব না দিয়েই পিঠটান দিলেন অমিত শাহ।
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অমিত শাহের সভায় লোক না হওয়ার দাবি করে বলেন, সিউড়ি বা বীরভূমের মানুষ আপনার সভায় সাড়া দেননি। বিহার থেকে লোক আনতে দেখা গিয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে যে পাঁচটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল তার একটিরও উত্তর দেননি উনি। কতগুলো অগণতান্ত্রিক, স্বৈরতান্ত্রিক কথা বলে গিয়েছেন। উনি ৩৫টি লোকসভা কেন্দ্রে জেতার লক্ষ্য দিয়েছেন। ৩৫ কেন ওনাদের তো শূন্য থেকে ভাবা উচিত। এমনকী উনি এদিন বাংলার নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। লোকসভায় ৩৫টি আসন পেলে কী করে রাজ্যের সরকার পড়ে যায়! উনি চাইছেন, অন্যভাবে বাংলাকে দখল করতে। একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নয় বিজেপি নেতা হিসেবে কয়েকটা বিজেপির হয়ে কুৎসা করতে এসেছেন। অমিত শাহরা যতবার বাংলায় আসবেন, ততই বাংলার মানুষের সুবিধা হবে। তাঁরা বুঝতে পারবেন বিজেপিকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভোট দিতে হবে।