শিলং: বিজেপির (BJP) ক্ষমতায় আসা নিশ্চিত করতেই তৃণমূল (TMC) মেঘালয়ে (Meghalaya) পা রেখেছে বলে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সাংসদ (Congress MP) রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বুধবার মেঘালয়ে এক নির্বাচনী সভায় রাহুল বলেন, আপনারা তৃণমূলকে চেনেন। ওই দলের ঐতিহ্যও (Tradition) জানেন। গোয়ায় (Goa) তারা এসেছিল, বিপুল টাকা খরচ করেছে গোয়ার ভোটে (Goa Elections)। ওদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, বিজেপিকে সাহায্য করা। একই কারণে বাংলা থেকে মেঘালয়েও ভোটে লড়তে এসেছে।
এদিনই মেঘালয়ে সভা করেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাবে তৃণমূলই। ক্ষমতায় আসলে মেঘালয়ে কী কী করা হবে, তারও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন মমতা।
তৃণমূল নেত্রী যখন মেঘালয়ের রাজাবালায় সভা করছেন, তখন শিলংয়ে (Shillong) কংগ্রেসের নির্বাচনী সভায় রাহুল চড়া সুরে আক্রমণ করেন তৃণমূলকে। তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, আপনারা তৃণমূলের ইতিহাস ভালো করেই জানেন। বাংলায় যে হিংসা চলছে, তাও আপনাদের অজানা নয়।
রাহুলের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং শিল্পপতি গৌতম আদানির প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি বলেন, আমি আদানির সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক, তা জানতে চেয়েছিলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আমি একটি ছবি দেখিয়েছিলাম সংসদে। সেই ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আদানির একটি বিমানে তিনি এবং প্রধানমন্ত্রী বসে আছেন। প্রধানমন্ত্রী এমন ভাবে বসে রয়েছেন, যেন সেটি নিজের বাড়ি। কিন্তু আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে কোনও প্রশ্নের জবাব পাইনি।
আরও পড়ুন: Tripura: ভোটপরবর্তী হিংসা নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম আগরতলা
তবে এদিন রাহুল যে ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন মেঘালয়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে, তা রাজনৈতিক দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রতিককালে এই ভাষায় রাহুলকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে এতটা আক্রমণাত্মক হতে দেখা যায়নি। আগামী বছর লোকসভা ভোটে বিজেপি বিরোধী জোট নিয়ে নানা চর্চা চলেছে। আরজেডি, জে়ডিইউ, ডিএমকে-সহ বেশ কিছু আঞ্চলিক দল কংগ্রেসকেই জোটের নেতৃত্ব দিতে বলছে। তৃণমূল, আম আদমি পার্টির মতো দলগুলি আবার কংগ্রেসের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। তৃণমূল দাবি করছে, আগামী লোকসভা ভোটে তাদের বিশাল ভূমিকা থাকবে। দলের কোনও কোনও নেতা আগ বাড়িয়ে দাবি করছেন, মমতাই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।
এই আবহে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী এদিন তৃণমূলকে একেবারে ধুইয়ে দিয়েছেন। শুক্রবার থেকে ছত্তিশগড়ের রায়পুরে শুরু হচ্ছে কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশন। সেখানেই আগামী লোকসভা ভোটের রণকৌশল চূড়ান্ত হবে। বিজেপি বিরোধী জোট হলে কংগ্রেস তার নেতৃত্ব দেবে কি না, আলোচনা হবে তা নিয়েও। আবার এদিন দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে দাবি করেন, কংগ্রেসের নেতৃত্বেই বিজেপি বিরোধী জোট হবে। সেই জোটই আগামী বছর দিল্লির মসনদে বসবে। কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশনের আগেই রাহুল যে ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করলেন, কংগ্রেস সভাপতি বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার দাবি করলেন, তাতেই স্পষ্ট, তৃণমূলকে কংগ্রেস দূরেই রাখতে চায়। প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই অভিষেক মেঘালয়ে গিয়ে কংগ্রেসের রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। পরে কংগ্রেস নেতারা তার জবাবও দেন।