কলকাতা: দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে আজ বৃহস্পতিবার ফের নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল কংগ্রেস৷ অগস্ট মাসে এই নিয়ে দু’বার কমিশনের অফিসে প্রতিনিধিদল পাঠাল শাসক শিবির৷ এদিন তৃণমূলের পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল দেখা করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে৷ ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন, সুখেন্দুশেখর রায়, মহুয়া মৈত্র, সৌগত রায়৷ দেখা গিয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকারকেও৷ রাজ্যের শাসকদলের এখন একটাই দাবি, সময়মত উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ করতে হবে কমিশনকে৷
কোনও জনপ্রতিনিধির মৃত্যু হলে বা অন্য কোনও কারণে আসন খালি হলে নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসের মধ্যে নির্বাচন সেরে ফেলতে হয়৷ গত ৫ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাই রাজ্যের ৫টি কেন্দ্রের উপনির্বাচন এবং ২টি আসনে নির্বাচনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে ৪ নভেম্বর৷ নভেম্বরের আগে সাত বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে কমিশনকে৷ কিন্তু উপনির্বাচনের ব্যাপারে কমিশনকে এখনও পর্যন্ত কোনও সদর্থক ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি৷ যা দেখে তৃণমূল শিবির থেকে মাঝেমধ্যে আশঙ্কা প্রকাশ করা বলা হচ্ছে, বিজেপির চাপে কমিশন সময়মত ভোট করাতে চায় না৷ তাই কমিশনের কাছে বারবার প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে তৃণমূল৷
আরও পড়ুন: পুজোয় বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না, সিইএসসি-র সঙ্গে বৈঠকের পর জানালেন মন্ত্রী
সময়মত উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে অন্তরায় হতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ৷ কিন্তু এই মুহূর্তে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে৷ তাই তৃণমূল চাইছে দেরি না করে এখনই নির্ঘণ্ট প্রকাশ করে দিক কমিশন৷ কোভিড পরিস্থিতি যাতে বাধা না হয় সেজন্য এদিন একটি স্মারকলিপি জমা দেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল৷ সেখানে ওই সাত বিধানসভা কেন্দ্রের বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দেওয়া হয়েছে৷ তাতে বলা হয়েছে, ওই সাত কেন্দ্রে কোভিড গ্রাফ নিম্নমুখী৷ কোভিডের কারণ দেখিয়ে ভোট পিছানোর যুক্তি যাতে কেউ দেখাতে না পারে সেজন্য আগে থেকে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল প্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন বলে মত রাজনৈতিক মহলের৷ পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌগত রায় বলেন, আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে৷
এই মুহূর্তে রাজ্যের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচন বকেয়া রয়েছে৷ তার মধ্যে ভবানীপুর কেন্দ্রের দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল৷ ইতিমধ্যে এই কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দিয়েছেন৷ মনে করা হচ্ছে, এই কেন্দ্র থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপনির্বাচনের প্রার্থী হবেন৷ যিনি একুশের ভোটে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে হেরে গিয়েছিলেন৷
আরও পড়ুন: টেন্ডার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত শ্যামাপ্রসাদকে ফের হেফাজতে চাইল পুলিশ
এছাড়া বাকি ছয় বিধানসভা খড়দহ, জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জ, শান্তিপুর, দিনহাটা, গোসাবা উপনির্বাচন হবে। ভোটের ফলাফল প্রকাশের আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান খড়দহের বিধায়ক কাজল সিনহা। সূত্রের খবর, খড়দহে কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় প্রার্থী হবেন৷ বিজেপির নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছেন। সাংসদ হিসাবেই কাজ করছেন তাঁরা। তাই, তাঁদের ছেড়ে যাওয়া শান্তিপুর ও দিনহাটায় ফের ভোট হবে৷ কদিন আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর। গোসাবা আসনে ফের ভোট হবে। মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর এবং সামশেরগঞ্জে বিধানসভা ভোটের সময় নির্বাচন হয়নি। মুর্শিদাবাদ জেলার ওই দুই আসনেও ভোট হবে।