নয়াদিল্লি: লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাবের উপর বিতর্কে অংশ নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার বলেন, এই সরকারের প্রতি না দেশের মানুষের, না সংসদের আস্থা চলে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও অনাস্থা আনা হয়েছে। এই অনাস্থা প্রস্তাবে বিরোধীদের আসল চরিত্র প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। মানুষের মধ্যে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে দিচ্ছে বিরোধীরা। অমিত আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদি দেশের মানুষের সব থেকে বেশি ভালোবাসা পাওয়া প্রধানমন্ত্রী।
এদিন দুপুরে রাহুল গান্ধীর মারমুখী ভাষণের পর বিকেলে আলোচনায় অংশ নিয়ে শাহ বিরোধী জোটকে নিশানা করেন। ইউপিএর চরিত্রই হল সরকার বাঁচাতে দুর্নীতিকে আড়াল করা। এরপরই সরাসরি কংগ্রেসকে লক্ষ্য করে বলেন, ওদের গরিবি হটাওয়ের স্লোগান বাক্যবাগিশীতেই থমকে রয়েছে। কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী মোদি দারিদ্র দূর করতে যথার্থ কর্মসূচি নিয়েছেন। ভারতের রাজনীতির মূল অসুখ তিনটি, দুর্নীতি, পরিবারবাদ ও তুষ্টিকরণ। প্রধানমন্ত্রী মোদি এখন কাজের রাজনীতি করে দেখাচ্ছেন বলে দাবি শাহের।
আরও পড়ুন: বাংলায় বাম-কংগ্রেসকে বিজেপির দোসর বলে আক্রমণ মমতার
মোদির আমলে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে অমিত শাহ বলেন, কৃষি, ঋণ, জনধন যোজনা, গরিবদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প এই আমলেই হয়েছে। ইউপিএ বছরের পর বছর ধরে রাজত্ব করেও উত্তর-পূর্বাঞ্চল কিংবা দেশের জন্য একটি কাজও করেনি। দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, খোশামোদের রাজনীতি করে গিয়েছে। তাই এখন গোটা দেশ তাদের বলছে, ভারত ছাড়ো। রাহুল গান্ধী নাম না করে অমিত শাহ বলেন, এখানে এমন একজন আছেন যাঁর রাজনৈতিক জীবন ১৩ বার শুরু হয়েছে, আর ১৩ বারই খতম হয়ে গিয়েছে। কলাবতী নামে অবহেলিত-নির্যাতিত এক মহিলার সঙ্গে তো একজন দেখা করেছিলেন। এখন কোথায় সেই কলাবতী! ৬ বছর কেটে গেলেও খোঁজ রেখেছেন কলাবতী কেমন আছেন? মোদি সরকার সেই কলাবতীকে ঘর দিয়েছে, মুখে অন্ন দিয়েছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়েছে, দাবি অমিত শাহের।
কাশ্মীর প্রসঙ্গেও কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন শাহ। বলেন, উপত্যকায় এখন আর জঙ্গিরা মিছিল করতে পারে না। কারণ যেখানে তাদের খতম করা হচ্ছে, সেখানেই গোর দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই সরকারের আমলেই শান্তি ফিরেছে কাশ্মীরে। ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর ভ্রান্ত নীতিকে শুধরে দিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীর এখন ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
মোদির মণিপুর না যাওয়া এবং হিংসা নিয়ে একটিবারের জন্য মুখ না খোলা নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে শাহ বলেন, গত ৯ বছরে অন্তত ৫০ বারের বেশি মোদি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, বিরোধীদের সঙ্গে আমি একমত যে, মণিপুরে অশান্তি চলছে। কিন্তু মণিপুর নিয়ে রাজনীতি করাও সমান লজ্জাজনক। বিরোধীরা মণিপুর নিয়ে রাজনীতি করছেন। মণিপুর নিয়ে আমরা প্রথম দিন থেকেই আলোচনায় রাজি ছিলাম। কিন্তু বিরোধীরাই সেটা চলতে দিচ্ছিল না, অভিযোগ শাহের।