ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে ভাসছে রহস্যময় দ্বীপরাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া (Indonesia)। দেশটির পাঁচ হাজার দ্বীপে প্রায় ১ হাজার ৩৪০টি উপজাতির বসবাস। বিচিত্র তাদের সমাজ ও সংস্কৃতিও। দ্বীপগুলির প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু উপজাতি এক সময় ছিল নরখাদক। বর্তমানে নরমাংসের প্রতি আর রুচি নেই উপজাতিগুলির।
দুর্গম অরণ্য ও পাহাড়গুলির অন্ধকার উপত্যকায়, উপজাতিগুলি লুকিয়ে রয়েছে অজস্র হাড়হিম করে দেওয়া প্রথা। যেগুলির বেশিরভাগই এখনও জানে না সভ্যজগত। এরকমই এক গা ছমছমে প্রথা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বুকে আগলে রেখেছে পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ সুলাওসি (Sulawesi)। আয়তনে দ্বীপটি প্রায় ১৮০৬৮১ বর্গ কিলোমিটার।
কারা বাস করে পাহাড়ে?
দক্ষিণ সুলাওসির পাহাড়ি অঞ্চলে আছে ‘টানা টোরাজা’ এলাকা। দুর্গম পাহাড় ও অরণ্য ঘেরা সবুজ উপত্যকায় বাস করে ‘টোরাজা'(Toraza) উপজাতি। দুর্গম পাহাড়ের ঢালে ধান, ভুট্টা ও কন্দ জাতীয় ফসল চাষ ও পশুপালনই হল টোরাজাদের জীবীকা। প্রাচীনকালে টোরাজারা ছিল সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী আলুক টো’টোডো ধর্মের অনুসারী। প্রকৃতি ও বহুদেবতার পুজো করত উপজাতিটি।
টোরাজা গ্রামে কারও মৃত্যু হলে, মৃতদেহের সত্কাুর সেই দিনই করে ফেলা হয় না। মৃতদেহটিকে মমি (Mummy) করে সযত্নে রেখে দেওয়া হয় বাড়িতে। মাসের পর মাস। বছরের পর বছর। যতদিন সত্কা র না করা হয়, ততদিন প্রিয়জনকে মৃত বলে মেনে নেওয়া হয় না। বলা হয় টু-মাকুলা বা অসুস্থ মানুষ। প্রাচীনকালে মৃতদেহগুলিকে মমি বানানোর সময় ধুয়ে নেওয়া হত চায়ের লিকার দিয়ে। পচন রুখতে, মৃতদেহে দেওয়া হত জড়িবুটির প্রলেপ। কিন্তু এখন পদ্ধতি অবলুপ্ত। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মৃতদেহে এখন ঢুকিয়ে দেওয়া হয় লিটার তিনেক ফরম্যালডিহাইড (formaldehyde)।