নয়াদিল্লি : আশা ছিল ৷ ছিল চিন্তা-ভাবনাও ৷ সম্ভাবনাও বাড়ছিল ৷ কিন্তু, বাস্তবে অন্য ছবিই দেখা গেল ৷ নিট ফল, জ্বালানি তেলে বসানো হচ্ছে না জিএসটি ৷
পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি বসানো যাবে না বলে একযোগে জানিয়ে দিল দেশের সব কটি রাজ্য ৷ সে-জন্যই শেষ পর্যন্ত পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে বাধ্য হল কেন্দ্র ৷ বিজেপি শাসিত থেকে শুরু করে অন্যান্য সব ক’টি রাজ্যই আজ স্পষ্ট করে দেয়, পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি বসানো হলে তারা বিপুল পরিমাণ রাজ্যস্ব হারাবে ৷ আর সে জন্যই জিএসটি বসানোর বিরোধিতা করে রাজ্যগুলি ৷ তাদের বিরোধিতা আজ লখনউয়ে কাউন্সিলের বৈঠকে এতটাই তীব্র হয় যে, পেট্রোপণ্যে জিএসটি বসানোর বিষয়টি নিয়ে সে-ভাবে আলোচনাই হল না ৷ প্রসঙ্গত, আজ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন-এর নেতৃত্বে লখনউয়ে বসেছিল ৪৫-তম জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক ।
#GSTCouncil Meet Update | Products under GST issue discussed & deferred. Council unanimously felt this is not the stage to even consider a discussion on the inclusion of petrol products under GST
— CNBC-TV18 (@CNBCTV18Live) September 17, 2021
উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড-সহ পাঁচটি রাজ্য নির্বাচন দরজায় কড়া নাড়ছে । সেই ভোট বৈতরণী পার করতেই তেলের দাম কমাতে উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার । তাই মনে করা হয়েছিল, আজ বৈঠকে পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি বসানোর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে ৷ কিন্তু, সেই সম্ভাবনা সমূলেই নষ্ট হয়ে যায় বৈঠকের শুরুতেই ৷
সম্প্রতি এক রিট পিটিশনের ভিত্তিতে পেট্রোপণ্যের উপর জিএসটি বসানোর বিষয়টি ভেবে দেখতে বলেছিল কেরল হাই কোর্ট । তার পরই আজ সীতারামনের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার বিষয়টি তীব্র হয় ৷ এই খবরকে দু’টি কারণে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছিল সংশ্লিষ্ট মহল । প্রথমত, পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের পর থেকে টানা বেড়ে রেকর্ড গড়েছে তেলের দাম । এ জন্য বিরোধীরা মোদি সরকারের আমলে বিপুল উৎপাদন শুল্ক বৃদ্ধিকেই দায়ী করলেও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি নেতারা পাল্টা আঙুল তোলেন রাজ্যের যুক্তমূল্য করের (ভ্যাট) দিকে। তাই কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, তেলে জিএসটি চালু হলে আমজনতার দুর্ভোগ কমবে । কারণ, সে ক্ষেত্রে জ্বালানির দাম কমার কথা ।
দ্বিতীয়ত, প্রায় ২০ মাস পর ফের সামনাসামনি বৈঠকে বসেন পরিষদের সদস্যেরা । তা হল উত্তর প্রদেশে, যেখানে আগামী বছর ভোট । সেই রাজ্যেই তেলে জিএসটি নিয়ে আলোচনা হলে, তা বিজেপি-র রাজনৈতিক হাতিয়ার হতে পারে বলে মনে করছিলেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ । উত্তর প্রদেশ ও বিহারের রাজকোষে যে পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় হয় গুজরাত তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, জ্বালানির উপরে জিএসটি বসালে সেক্ষেত্রে মোট প্রাপ্ত এক সমান ভাগ পাবে কেন্দ্র রাজ্য এবং এক ধাক্কায় দাম কমবে লিটার পিছু পেট্রোল-ডিজেলের।
যদিও, আজ প্রতিটি রাজ্য স্পষ্ট করে দিল কোনও ভাবেই জিএসটি কার্যকর করা যাবে না ৷ কারণ, তাদের বিপুল আর্থিক ক্ষতি ৷
তথ্যসূত্র- সিএনবিসি