কলকাতা: অবশেষে রাজ্যের শিক্ষানীতি চালু হল। শনিবার শিক্ষা দফতর নয়া শিক্ষানীতি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। ১৭৮ পাতার এই শিক্ষানীতিতে প্রাক প্রাথমিক থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিরোধীরা অবশ্য শিক্ষানীতি নিয়ে তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, নবান্ন এবং রাজভবনের সংঘাতে শিক্ষা ব্যবস্থা লাটে উঠতে চলেছে। নয়া শিক্ষানীতি চালু করে আর লাভ কী।
নয়া শিক্ষানীতিতে স্কুল স্তরের শিক্ষায় অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষা কেন্দ্রে পড়াশোনার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাতৃভাষায় পড়াশোনার পাশাপাশি প্রথম শ্রেণি থেকে বাংলা ভাষা সম্পর্কে পড়ুয়াদের মধ্যে ধারণা তৈরির কথা বলা হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, রাজ্যে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির অবস্থা খুবই শোচনীয়। বেশির ভাগ কেন্দ্রই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যে সব কেন্দ্র চালু রয়েছে, সেখানকার বাড়িঘরের হাল খুব খারাপ। অনেক জায়গাতেই খোলা আকাশের নীচে অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষা কেন্দ্র চলে।
আরও পড়ুন: দলত্যাগী প্রাক্তন বিধায়কের বুথেই বিজেপির হার
নতুন রাজ্য শিক্ষানীতিতে অষ্টম শ্রেণি থেকে উঁচু শ্রেণিতে পরীক্ষার সেমেস্টার ব্যবস্থা চালুর কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা তুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু রাজ্যের শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক পরীক্ষা থাকছে। উচ্চ মাধ্যমিকে এমসিকিউ ধাঁচে প্রশ্নপত্র হবে। সেখানে সেমেস্টার ব্যবস্থা চালু করতে বলা হয়েছে শিক্ষানীতিতে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চাকরির প্রথম পাঁচ বছর গ্রামাঞ্চলে কাজ করা বাধ্যতামূলক নয়া শিক্ষানীতিতে। তাঁদের জন্য আসছে নয়া প্রমোশন নীতি। স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিতে চার বছরের পাঠ্যক্রম চালু করার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা মহল তাতে তীব্র আপত্তি জানায়। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই নীতি মেনেই চলতি বছর থেকে চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু করেছে। তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এটা না করলে আমাদের ছেলেমেয়েরা সর্বভারতীয় স্তরে পিছিয়ে পড়ত। রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, তারা কেন্দ্রের চাপিয়ে দেওয়া শিক্ষানীতি মানবে না। তাই তারা নিজেদের শিক্ষানীতি তৈরি করার জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছিল। সেই কমিটির সুপারিশ মেনেই তৈরি হয়েছে রাজ্যের নয়া শিক্ষানীতি। আগামী তিন বছরের মধ্যে শিক্ষানীতির যাবতীয় নির্দেশ কার্যকর করা হবে বলে রাজ্য সরকার জানিয়েছে। তারা আরও জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে রাজ্যের তৈরি শিক্ষানীতির উপর ভিত্তি করে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনা হবে।