বালেশ্বর: শুক্রবার সন্ধেয় ওড়িশার বালেশ্বরে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে চোখ হারাতে বসেছে এক অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। জানা যাচ্ছে, বেঙ্গালুরু সুপারফাস্ট ট্রেনে চেপে হাওড়ার দিকে ফিরছিল মালুকা খাতুন। চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে পাশের ট্রেনে ধাক্কা দেয়। হঠাতই কেঁপে ওঠে হাওড়াগামী ট্রেনটি। এরই মাঝে ট্রেনের জানালার কাচ চোখে গেঁথে যায় ছোট্ট মালুকা চোখে।
অষ্টম শ্রেণীর এই স্কুল ছাত্রী তখনও বুঝে উঠতে পারেনি তার কী করা উচিত ছিল। ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর থেকে চোখে দেখতে পারছে না পূর্ব-মেদিনীপুরের চাঁদপুরের ওই স্কুল ছাত্রী। চিকিৎসকরা চেষ্টা করছেন দৃষ্টি ফিরিয়ে আনার। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ঘটনার জেরে পুরোপুরি ভাবে দৃষি হারাতে বসেছে ছোট্ট মালুকা।
গতকালের ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন শতাধিক যাত্রী। শনিবার সকাল পর্যন্ত সরকারি্ রিপোর্ট অনুযায়ী মৃতে সংখ্যা ২৩৮। আর আহত হয়েছেন ৬৫০ জন। এখনও বাড়তে পারে মৃত ও আহতের সংখ্যা। ট্রেনের ভিতরে থাকা এক মহিলা যাত্রী জানান, দুর্ঘটনার পর তাঁর বগি উল্টে যায়। ট্রেনের ছাদ দিয়ে তাঁদেরকে বের করে আনা হয়। ওই মহিলার হাতে জোরালো চোট লেগেছে। হাতের হাড় ভেঙে গিয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। যাঁদের গুরুতর আহত হয়েছে, তাঁদের ২ লাখ টাকা করে এবং বাকি আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন রেলমন্ত্রী। দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী টুইট লেখেন, ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ। মৃত ও আহতদের পরিবারের জন্য আমার সমবেদনা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গে কথা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সম্ভাব্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমাকে জানিয়েছে ব্যবস্থা নিতে। অনেক যাত্রী আমাদের পশ্চিমবঙ্গের আছেন।মানস ভুঁইয়া এর নেতৃত্বে একটা টিম যাচ্ছে। বালেশ্বরের ডিএম কিছু অ্যাম্বুলেন্স চেয়েছে। আমরা সেই গুলো পাঠাচ্ছি। পশ্চিম মেদিনীপুর এর সুপার স্পেশালিটি হাসাপাতাগুলিকে তৈরি থাকতে বলেছি। ওড়িশা সরকারকে জানিয়েছি। যদি কিছু প্রয়োজন দরকার হয় আমরা করে দেব। আমরা সব রকমের সাহায্য দিতে প্রস্তুত।