কলকাতা: সব ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বর (November) মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই শুরু হতে পারে দ্বিতীয় হুগলি সেতু সংস্কারের কাজ (Second Hooghly Bridge)। নবান্ন (Nabanna) সুত্রে এমনটাই জানা গিয়েছ। যদিও পুজোর আগেই এই সংস্কারের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পুজোর মরশুমে এই ধরনের কাজে ঝুঁকি হতে পারে বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি দ্বিতীয় হুগলি সেতুর সংস্কার নিয়ে নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। উপস্থিত ছিলেন, পূর্ত দফতরের আধিকারিকেরা, রাজ্য প্রশাসনের পুলিশকর্তারা। বৈঠকে সেতু সংস্কারের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি, সংস্কারের কাজে কী কী ধরনের সমস্যা হতে পারে তাও আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে।
হাওড়া থেকে কলকাতা ঢোকার অন্যতম প্রবেশপথ হল এই দ্বিতীয় হুগলি সেতু। ১৯৯২ সালে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর আমলে এই ব্রিজের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিদিন এই সেতু দিয়ে লক্ষ লক্ষ গাড়ি যাতায়াত করে। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে যেতে এই সেতুই ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে টোল আদায়ের মাধ্যমেও রাজস্ব আদায় হয়। তবে দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের কাজ না হওয়ায় দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সামগ্রিক সংস্কারের কাজ করতে গেলে দীর্ঘ সময় সেতুটি বন্ধ রাখতে হবে। যা বাস্তবিক পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রাথমিক আলোচনায় উঠে এসেছে, ছয় লেনের সেতুর যে অংশে কাজ হবে, তার দুটি লেন বন্ধ রেখে পাশের একটি অংশ খোলা রাখা হবে যান চলাচলের জন্য।
আরও পড়ুন:স্বল্প খরচে টেলিস্কোপ বানিয়ে তাক লাগালেন দাঁতনের এক যুবক
দ্বিতীয় হুগলি সেতুর নকশা তৈরি করেছিলেন জার্মান কারিগরি সংস্থা শ্লায়েশ বার্জারম্যান পার্টনার। সেই কারণে ব্রিজ সংস্কারের জন্য ফের জার্মান বিশেষজ্ঞ দলে শরাণাপন্ন হয়েছে রাজ্য সরকার এবং এইচআরবিসি। জানা গিয়েছে, জার্মান বিশেষজ্ঞদের নিয়ে আসা হচ্ছে সেতু সংস্কারের জন্য। দ্বিতীয় হুগলি সেতু মোট ১২১ টি কেবলের ফ্যান অ্যারেঞ্জমেন্টের উপর দাঁড়িয়ে আছে। তার মধ্যে কয়েকটি কেবলের অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছে। সেগুলিকে মেরামত করার জন্য জার্মান থেকে বিশেষজ্ঞ আনা হচ্ছে। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, সেতুটির বিষয়ে যাবতীয় তথ্য ওই সংস্থার কাছে রয়েছে। তাই সংস্কারের ক্ষেত্রেও তাদের উপরেই ভরসা রাখছে রাজ্য সরকার।
প্রাথমিক ভাবে সংস্কারের এই কাজে প্রায় ১৬৩ কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলেই জানা যাচ্ছে। সেটি বরাদ্দ করা নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই প্রশাসনের অন্দরে। তবে প্রয়োজনে ওই আর্থিক বরাদ্দ বাড়তেও পারে। সংস্কারের কাজের জন্য ৪ থেকে ৬ মাস সময় ধার্য করা হয়েছে। তবে, সেতু সংস্কারের সময় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ একটা বড় মাথাব্যথা কলকাতা ও হাওড়া পুলিশের কাজে। সেই ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কোনদিকে যান চলাচলের রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে।