কলকাতা: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় স্থগিতাদেশ পেল না প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি এসপি তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ একক বেঞ্চের নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতে রাজি হয়নি। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ জুন। এর অর্থ হল ওই দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। শুধু তাই নয়, পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারবে।
এর আগে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি মামলায় ২৭৩ জন প্রার্থীর চাকরি বাতিল করে দেয়। তাঁদের বেতনও বন্ধ করার নির্দেশ দেয় আদালত। পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে অপসারণও করে হাইকোর্ট। বলা হয়, রাজ্য সরকার নতুন সভাপতি নিয়োগ না করা পর্যন্ত সভাপতির কাজ চালিয়ে যাবেন পর্ষদ সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচী। একক বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যায় পর্ষদ তথা রাজ্য সরকার। তারা ওই নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়েছিল। আদালত এদিন তা দিতে চায়নি।
এদিন শুনানিতে পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্ত জানান, টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে ভুল থাকায় পরীক্ষার্থীদের বাড়তি এক নম্বর করে দিতে বলা হয়েছিল। মামলার আবেদনে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়নি। তাঁর আরও দাবি, সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আগে যে ধরনের তথ্য প্রমাণ লাগে, সেসব না দেখেই একক বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়। কিশোর দত্ত জানান, মোট ২৩ লাখ আবেদনপত্র জমা পড়েছিল। পরীক্ষা দেন ২০ লাখ পরীক্ষার্থী। পাশ করেন ১ লাখ ২৫ হাজার প্রার্থী। পরে ২৭৩ জনকে বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়। বিচারপতি তালুকদার জানতে চান, পর্ষদ কোন যুক্তিতে এই ২৬৯ জনকে বাড়তি নম্বর দিল।
আরও পড়ুন: Bangladesh Flood: এমন ভয়াবহ বন্যা জীবনে দেখিনি, বলছেন বাংলাদেশের দুর্গতরা
বিচারপতি বলেন, ২০১৪ সালের টেট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল। প্রশ্ন ভুলের বিষয়টি পর্ষদ বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে পাঠায়। ওই কমিটি জানায়, একটি প্রশ্নে ভুল ছিল। বিচারপতির প্রশ্ন, পর্ষদ কিছু প্রার্থীকে বেছে কেন বাড়তি এক নম্বর দিল? পর্ষদের কি সবাইকেই বাড়তি এক নম্বর দেওয়া উচিত ছিল না? এতে বৈষম্য হয়েছে বলে কি পর্ষদ মনে করে না? তাঁর আরও প্রশ্ন, এই বাড়তি নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া উচিত ছিল বলে একক বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ কি খুব ভুল ছিল?
আদালত সূত্রে খবর, পর্ষদের আইনজীবী এসব প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। শুনানি শেষে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ৩০ জুন।